আইএফএস অফিসার হতে গেলে পেরোতে হবে কঠিন পথ। প্রতীকী ছবি।
এই বছরের উচ্চ মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় পঞ্চম স্থানে জায়গা করে নিয়েছিলেন ঋষিতা সিন্হা মহাপাত্র। বোলপুর নিবাসী এই কৃতীর স্বপ্ন সে ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস অফিসার হবেন। চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পাশাপাশি, দেশ সেবা করার জন্য এই ধরণের বিষয় নিয়ে পড়াশোনা এবং চাকরির স্বপ্ন ঋষিতার মত আরও অনেকেই দেখছেন। কিন্তু শুধু স্বপ্ন দেখলেই তো হবে না। সেই স্বপ্ন কোন পথে হাঁটলে পূরণ হতে পারে, সেই পথটাও চিনে নিতে হবে।
ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস আসলে কী?
ভারত সরকারের তরফে এই বিশেষ ক্ষেত্রে নিয়োগ করা হয়ে থাকে। এই নিয়োগ ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অনুমোদনের উপর নির্ভর করে। আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের বাণিজ্যিক লেনদেন, আন্তঃদেশীয় অর্থনৈতিক সমঝোতা, চিকিৎসা সম্পর্কিত যোগাযোগের বিষয়ে সমন্বয় রক্ষা করাই একজন ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস অফিসারের দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গেও এই অফিসরাদের কাজ করতে হয় বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে।
মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে কত নম্বর পেতে হবে?
ন্যুনতম ৫০ শতাংশ নম্বর নিয়ে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে প্রার্থীদের।
কোন কোন ডিগ্রিধারীদের জন্য খোলা রয়েছে এই পেশার দরজা?
স্নাতকস্তরে বিটেক, বিএ, বিএসসি, বিবিএ, বিকম, বিসিএ-এর মধ্যে যে কোনও একটি ডিগ্রি প্রার্থীদের থাকা আবশ্যক।
পেশায় প্রবেশের জন্য কোন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেই হবে?
স্নাতকস্তরের সাফল্যের সঙ্গে পড়াশোনা শেষ করার পর প্রার্থীদের ইউপিএসসি অর্থাৎ ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় বসতে হবে। সেই পরীক্ষায় পাশ করলেই ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস অফিসার হওয়ার সুযোগ পাবেন তাঁরা। এরপর নির্বাচিত প্রার্থীরা সুযোগ পাবেন ট্রেনিংয়ের।
কোথায় ট্রেনিং দেওয়া হয় এই অফিসারদের?
প্রথমে আইএফএস অফিসারদের মুসৌরির ‘লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ কেন্দ্রে সংক্ষিপ্ত প্রশাসনিক কোর্স পড়ানো হয়। এরপর ‘সুষমা স্বরাজ ইনস্টিটিউট অফ ফরেন সার্ভিস’ কেন্দ্রে ট্রেনিং দেওয়া হয়ে থাকে।
কোন কোন পদে চাকরি করা যায়?
প্রাথমিকভাবে ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রিলিমস, মেইনস এবং ইন্টারভিউ রাউন্ডে সেরা প্রদর্শন করার পর ট্রেনিং দেওয়া হয় প্রার্থীদের। ট্রেনিং শেষে দক্ষতা অনুযায়ী বিভিন্ন পদে কাজ করার সুযোগ পাবেন তাঁরা। সাধারণত, থার্ড সেক্রেটারি, সেকেন্ড সেক্রেটারি, ফার্স্ট সেক্রেটারি, কাউন্সেলর, অ্যাম্বাসেডর-এই পদগুলিতেই পর্যায়ক্রমে এবং অভিজ্ঞতার নিরিখে কাজ করার সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা।
ইউপিএসসি পরীক্ষাকে ভারতবর্ষে অন্যতম কঠিন পরীক্ষা হিসেবে গণ্য করা হয়। সেই পরীক্ষায় পাশ করতে প্রয়োজন অনেক ধৈর্য্য। তাই যাঁরা এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে পঞ্চম ঋষিতার মতো ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসে যোগদান করার কথা ভাবছেন, তাঁদের একটু পড়াশোনা করতে হবে, অনেকটা ধৈর্য্য ধরতে হবে এবং নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকতে হবে।