প্রাথমিক টেট পরীক্ষা সংগৃহীত ছবি
গতকালই এই বছরের প্রাথমিক টেট নিয়ে একটি নতুন নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এ বছরের টেট পরীক্ষাটি আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে। তার আগে পর্ষদ বেশ কিছু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই বছরের নতুন কোন কোন নিয়ম চালু করা হল বা কী কী বদল আনা হল, সে ব্যাপারে জানিয়েছে।
গত ২৬ অক্টোবর প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে টেট পরীক্ষার সিলেবাস ও পরীক্ষার ধরন সম্পর্কেও বিস্তারিত জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও জানানো হয়েছে প্রতিটি বিষয়ে বরাদ্দ নম্বর ও পাশ নম্বরের কথাও।
পর্ষদ জানিয়েছে ১১ ডিসেম্বরের পরীক্ষাটি দুপুর ১২ টা থেকে আড়াইটে পর্যন্ত চলবে। বাংলা ও ইংরেজিতে পরীক্ষাটি দেওয়া যাবে। এই বছরও যে যে বিষয়গুলির উপর টেট পরীক্ষাটি নেওয়া হবে, সেগুলি হল: শিশু বিকাশ ও শিশু শিক্ষাবিজ্ঞান/ পেডাগগি, আবশ্যিক ভাষা ১, আবশ্যিক ভাষা ২, অঙ্ক এবং পরিবেশবিদ্যা। আবশ্যিক ভাষা ১-এ থাকতে পারে বাংলা / হিন্দি /ওড়িয়া / তেলুগু / নেপালি / সাঁওতালি / উর্দু ভাষা এবং আবশ্যিক ভাষা ২-এ থাকবে ইংরেজি। পরীক্ষার প্রশ্নগুলি হবে এমসিকিউ ধরনের। প্রতিটি বিভাগেই ৩০ নম্বর করে বরাদ্দ হবে এবং মোট পরীক্ষাটি হবে ১৫০ নম্বরের। এই পরীক্ষায় উত্তর ভুল হলে কোনও নম্বরও কাটা যাবে না বলে পর্ষদ জানিয়েছে।
পরীক্ষার্থীদের পর্ষদ জানিয়েছে, তাঁরা যেন পেন্সিলবাক্স, প্লাস্টিকের ব্যাগ, ক্যালকুলেটর, স্কেল, লেখার প্যাড, পেন ড্রাইভ, রাবার, লগ টেবিল, বৈদ্যুতিন পেন বা স্ক্যানার, কার্ডবোর্ড, ঘড়ি, মোবাইল ফোন, ইয়ারফোন, মাইক্রোফোন বা পেজার এবং খাবারদাবার বা পানীয় নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ না করে।
তবে, এ সমস্ত বিধিনিষেধ বা নিয়ম কিছু বছর আগে আয়োজিত টেট পরীক্ষাতেও মেনে চলতে হত। এমনকি, সিলেবাস, পরীক্ষার ধরন, পরীক্ষার মোট নম্বর, প্রতিটি বিভাগে বরাদ্দ নম্বর ও পাশ নম্বরও আগের মতোই এ বছরের টেট পরীক্ষাতে অপরিবর্তিত থাকছে।
তা হলে, কোন কোন জিনিসের বদল ঘটল এ বছরের প্রাথমিক টেট-এ?
এই বছর প্রাথমিক টেট-আবেদন জানানোর জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে যে পরীক্ষার্থীরা দু'বছরের প্রাথমিক শিক্ষায় ডিপ্লোমা কোর্সটি করছেন বা চার বছরের বিএলএড ডিগ্রি করছেন বা আরসিসি স্বীকৃত ডিপ্লোমা করছেন স্পেশাল এডুকেশনে বা এনসিটিই স্বীকৃত বিএড ডিগ্রিটি করছেন, তাঁরা সকলেই প্রাথমিক টেট পরীক্ষাটিতে বসতে পারবেন বলে পর্ষদ জানিয়েছিল। পর্ষদ এই পরীক্ষায় বসার যোগ্যতামানের পরিবর্তন করার পরবর্তী কালে যে নজিরবিহীন আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তা সকলেরই জানা।
এ ছাড়া, পর্ষদ এই বছর টেটের যোগ্যতার ক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুল পরীক্ষার মোট নম্বরে এসসি, এসটি, ওবিসি, প্রাক্তন সেনাকর্মী, অব্যাহতিপ্রাপ্ত, বিশেষ ভাবে সক্ষম, কর্মস্থলে মৃত ক্যাটেগরির অন্তর্ভুক্ত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ছাড় দেয়।
আরও একটি সংশোধনীতে পর্ষদ জানায়, প্রাথমিক টেটে আবেদন জানাতে হলে স্নাতক পাশ পরীক্ষার্থীদের স্নাতক স্তরে মোট ৫০ শতাংশ নম্বর-সহ বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষক পদে আবেদন জানানোর জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণেও কিছুটা বদল এনেছে পর্ষদ। যেমন, এ বছর এই পদে আবেদন জানাতে গেলে অসংরক্ষিত ক্যাটাগরিভুক্ত পরীক্ষার্থীদের দিতে হবে ১৫০ টাকা, ওবিসি ক্যাটেগরিভুক্ত পরীক্ষার্থীদের দিতে হবে ১০০ টাকা এবং এসসি, এসটি ও বিশেষভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থীদের দিতে হবে ৫০ টাকা।
এ ছাড়া, দুটি পোর্টাল চালু রেখেছে পর্ষদ, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য সেগুলি হল https://www.wbbpe.org/ এবং https://wbbprimaryeducation.org/.
পরীক্ষার্থীরা এই সমস্ত তথ্য সঠিক ভাবে জেনে নিয়ে আবেদন জানাতে পারেন আগামী ৩ নভেম্বরের আগে।