সংগৃহীত চিত্র।
সিমেস্টার পদ্ধতিতে পঠন-পাঠনের মান যাতে নিম্নমুখী না হয় তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সিমেস্টার ও দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সিমেস্টার-কেও গুরুত্ব দিয়ে দেখে পরীক্ষার্থীরা, সেটাই চায় শিক্ষা সংসদ।
এ বছর থেকে একাদশ শ্রেণিতে সিমেস্টার পদ্ধতিতে পঠনপাঠন চালু হবে। সেখানে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে প্রথম ও তৃতীয় সিমেস্টারে পাশ ফেলের ব্যাপার নেই। দু’টি সেমিস্টার মিলিয়ে ৩০ শতাংশ পেলেই পড়ুয়ারা পাশ করে যাবে বলে জানানো হয়েছে। আর এখানেই মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষক মহলের একাংশ। বেশ কিছু শিক্ষক সংগঠনের তরফ থেকে এ বিষয়ে সংসদ সভাপতিকে চিঠিও লেখা হয়েছে।
শিক্ষা অনুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “নয়া পদ্ধতিতে ৩৫ ও ৪০ নম্বরের মধ্যে ৩০ শতাংশ পেতে হবে পড়ুয়াদের। অর্থাৎ মাত্র ১০-১২ নম্বর। তাতেও, সিমেস্টার সিস্টেমে একটিতে শূন্য পেয়ে অপরটিতে ৩০ পেয়ে পাশ করিয়ে দিলে ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক মূল্যায়ন হবে না। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত শিক্ষা সংসদের। প্রত্যেক সিমেস্টার-এ পাশ ফেল রাখা উচিত। ”
শিক্ষক মহল ও সংগঠনগুলির একাংশের চিঠি পাওয়ার পরে সংসদের তরফ থেকে পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি আপলোড করার আগে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গঠন করে মতামত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় শুরু করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই নয়া পদ্ধতি মূল্যায়ন সম্বন্ধে চূড়ান্ত তথ্য তুলে ধরা হবে বলে শিক্ষা সংসদ সূত্রের খবর।
সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা সমস্ত তথ্য অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আপলোড করে দিয়েছি। শুধুমাত্র ‘অ্যাসেসমেন্ট ই-ভ্যালুয়েশন ক্রাইটেরিয়া’ আপলোড করা হয়নি। আমরা আগে একটা তথ্য জানিয়েছিলাম কিন্তু তারপরে একাধিক মতামত আসায় আমরা সেই তথ্যগুলি নিয়ে পর্যালোচনা করছি। এবং দ্রুত তা জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে সকলের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। একক সিদ্ধান্তে কিছু করা হবে না, বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।”
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে সিমেস্টার পদ্ধতির ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে একাদশ শ্রেণির প্রথম সিমেস্টার ও দ্বাদশের প্রথম সিমেস্টার-এ পাশ ফেল বলে কিছু থাকছে না। অর্থাৎ একজন পরীক্ষার্থী একাদশের প্রথম ও দ্বাদশের তৃতীয় সিমেস্টারে শূন্য পায়। তা হলে দ্বিতীয় ও চতুর্থ সিমেস্টার-এ বসতে পারবে। এবং দু’টি সিমেস্টার মিলিয়ে ৩০ শতাংশ পেলেই পাশ।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “ ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক মূল্যায়ন করার জন্য প্রত্যেক সিমেস্টারে ন্যূনতম নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। যাতে একাদশের দ্বিতীয় ও উচ্চ মাধ্যমিকের চতুর্থ সিমেস্টারের মান সঠিক থাকে। এই বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া উচিত শিক্ষা সংসদের।”
প্রসঙ্গত, উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম সিমেস্টার নেওয়া হবে ওএমআর শিটে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। যার মূল্যায়ন করবে শিক্ষা সংসদ। তবে একাদশ শ্রেণির প্রথম সিমেস্টার এমসিকিউ হলেও ওএমআর শিটে হবে না আর এর মূল্যায়ন করবে স্কুলগুলি।