সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসাই এগিয়ে নিয়ে চলেছে তৃণাকে। নিজস্ব চিত্র।
কথায় বলে, যে মেয়ে রাঁধে, সে মেয়ে চুলও বাঁধে। এই প্রবাদ আরও এক বার প্রমাণিত হল উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলে। বুধবার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সাংবাদিক বৈঠকে দশম স্থানাধিকারীদের নামের তালিকায় রয়েছে মালদা জেলার তৃণা পুরকায়স্থের নাম। নিজের নাম মেধাতালিকায় দেখতে পেয়ে খানিকটা অবাকই হয়েছিলেন তিনি। কারণ, তিনি ঘড়ি ধরে কখনও পড়াশোনা করেননি। সাহিত্যের প্রতি রয়েছে অফুরান ভালোবাসা। অবসরে তৃণা আবার ভায়োলিন বাদকও। মেধাতালিকায় তাঁর নামটি দেখে কার্যত আপ্লুত তৃণার বাবা এবং মা।
মালদহের বাসিন্দা তৃণা বার্লো গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী। প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৭ (৯৭.৯ শতাংশ)। তাঁর ইচ্ছে, বিশ্বভারতী অথবা যাদবপুরে বাংলা নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করার। এ ছাড়াও স্বপ্ন রয়েছে, ভবিষ্যতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষিকা ও অধ্যাপিকা হওয়ার। তাই উচ্চ মাধ্যমিক স্তর থেকেই তিনি লেখালেখি করে চলেছেন। তৃণার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাঁর বেশ কিছু লেখা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিতও হয়েছে।
বাবা অনিন্দ্য পুরকায়স্থ আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। মা তাপসী চৌধুরী মালদহের নিত্যানন্দ জুনিয়র হাই স্কুলের ইংরেজির শিক্ষিকা। মেধাতালিকায় নাম দেখে তিনি অত্যন্ত খুশি। স্কুলের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার অবদান রয়েছে মেয়ের এই বিরাট সাফল্যের নেপথ্যে। তাই তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি তিনি। মেয়ের বাংলা নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছেকে সমর্থন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘অন্য কোনও বিষয়ে পড়াশোনার জন্য তৃণাকে কখনও জোর করা হয়নি।’’
উচ্চ মাধ্যমিকের মতো একটি বড় পরীক্ষার মেধাতালিকায় জায়গা পেতে হলে যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা না পড়লেও হয়, তা প্রমাণ করে দিলেন তৃণা। তাঁর সাহিত্যিক হওয়ার স্বপ্ন যাতে পূরণ হয়, সেই দিকেই তাকিয়ে তাঁর মা-বাবাও।