প্রতীকী ছবি
অবশেষে রাজ্যের বদলি হওয়া শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা পেতে চলেছেন তাঁদের প্রাপ্য অর্থ। জেনারেল ও মিউচুয়াল ট্রান্সফার নেওয়া শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ডের (জিপিএফ) সুদের অর্থ দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। সপ্তাহান্তেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে শিক্ষা দফতর।
স্কুল শিক্ষা দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, বদলির পর জিপিএফ-এর অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার হলেও রাজ্যের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা তাঁদের সুদ পাচ্ছিলেন না। যা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে। আমাদের কাছে অভিযোগ আসতেই আমরা সমস্ত তথ্য পাঠাই অর্থ দফতরের কাছে, সেখান থেকে অনুমোদন এসেছে। দ্রুত এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। শিক্ষক ও শিক্ষককর্মীরা তাঁদের বকেয়া সুদের অর্থ এবার পেয়ে যাবেন।
বর্তমান সরকারের আমলে ২০১৫ সাল থেকে হাই স্কুল স্তরে জেনারেল ট্রান্সফার চালু করা হয়। ২০১৯ সালে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আমলে স্পেশাল ট্রান্সফার ব্যবস্থা চালু করা হয়। ঠিক তার পরের বছর ২০২০ সালে অনলাইন মিউচুয়াল ট্রান্সফারের পোর্টাল চালু করা হয়। আর এই বদলি প্রক্রিয়ার সরলীকরণের জন্য ২০২১ সালে ‘উৎসশ্রী’ পোর্টাল চালু করে রাজ্য সরকার।
বারুইপুর হাই স্কুলের বদলি হওয়া শিক্ষক প্রণবকুমার পাইন বলেন, “শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের স্কুল বদলির কয়েক বছর বাদে জিপিএফ অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার করা হয়। সেখানে শুধুমাত্র ছ’মাসের সুদ দেওয়া হয়েছিল বাদবাকি দেওয়া হয়নি। সরকার যদি এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা হলে উপকৃত হব।”
২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক ও হাই স্কুল স্তরে মোট বদলির সংখ্যা ৬০ হাজারের মতো। স্কুল বদলি হলেও জিপিএফ-এর অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে তিন থেকে চার বছর লেগে গিয়েছে। তবে অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার হলেও দেখা যায় জিপিএফ-এর সুদ বাবদ মাত্র ছ’মাসের টাকা জমা পড়েছে। বাদবাকি টাকা জমা দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে বিভিন্ন সময় শিক্ষক সংগঠনগুলি ডিআই অফিস থেকে শিক্ষা দফতরে স্মারকলিপিও জমা দিয়েছে। সেখানে দাবি করা হয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্রাপ্য অর্থ অবিলম্বে দিতে হবে সরকারকে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “ডিআইদের অবিবেচক সিদ্ধান্তের ফলেই এই ধরনের জটিলতা হয়েছে। আমরা শিক্ষামন্ত্রী ও স্কুল এডুকেশন কমিশনারের কাছে বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরি। শিক্ষকরাও বিষয়টি নিয়ে তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে যান। তাঁর ফলস্বরূপ এই জয়।”
বর্তমানে সমস্ত রকম ট্রান্সফার রাজ্য সরকার বন্ধ রেখেছে। ট্রান্সফারের পোর্টাল বন্ধ করা হয় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। এখনও পর্যন্ত তা নতুন করে খোলা হয়নি।