সংগৃহীত চিত্র।
রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতনের উর্ধ্বসীমা সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে যাওয়ার পরও এ বার হবে ‘ইনক্রিমেন্ট’ বা বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি। অর্থ দফতরের অনুমতি পাওয়ার পর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল শিক্ষা দফতর। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ছ’বারের বেশি বার্ষিক বেতনবৃদ্ধি হবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারি স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতনের ঊর্ধ্বসীমা পৌঁছে যাওয়ার পরে বার্ষিক বেতনবৃদ্ধিতে কোনও বাধা থাকে না। ২০২০ সালে রাজ্য সরকারের আইন করে এই প্রথা তুলে দিয়েছিল, সরকারি স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য।
শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, সরকারি স্কুলের শিক্ষক এবং সরকার পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষকদের কাজ এক হলেও, সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বিস্তর ফারাক রয়েছে। একটি বিষয় সমাধান করলেও এমন অনেক বিষয় রয়েছে, যেগুলি সরকারের বিবেচনা করা উচিত। সরকারি স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বিশেষ বেতন বৃদ্ধি হয় তিন বার। ৮, ১৬ এবং ২৪ বছরে। সেখানে সরকার পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে ১০ বছর এবং ২০ বছর দু’টি ক্ষেত্রে এই ধরনের বেতনবৃদ্ধি হয়ে থাকে। নেই সরকারি কর্মীদের মতো সরকারি স্বাস্থ্যবিমা-সহ একাধিক সুযোগ-সুবিধা।
পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধানশিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, “এটি সরকারের ভাল উদ্যোগ। তবে এখনও সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বহু বৈষম্য রয়েছে। অবিলম্বে সেই বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।”
শিক্ষক সংগঠনের একংশের বক্তব্য, একই কাজের জন্য সরকারি শিক্ষক ও সরকার সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য ভিন্ন নিয়ম। নয়া নিয়ম চালু করলেও তা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করা হয়েছে। সরকারি শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের জন্য তা নেই। এ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও আমরা পুরোপুরি খুশি নই। সরকারি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য বেতন সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছনোর পর বার্ষিক বেতনবৃদ্ধির কোনও সময় ধার্য করা হয়নি। যত দিন চাকরি থাকবে, তত দিন পর্যন্ত বেতনবৃদ্ধি হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ছ’বারের বেশি হবে না বলে বলা হয়েছে।”
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “রাজ্যের সরকারি কর্মচারী ও সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা এই সুযোগ পাচ্ছিলেন কয়েক বছর আগে থেকেই। কিন্তু সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও সরকার পোষিত বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা বঞ্চিত হচ্ছিলেন। আমরা বিকাশ ভবনে আবেদন করেছিলাম। কিন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় সেই সিদ্ধান্ত নিতে প্রায় পাঁচ বছর লাগিয়ে দিল সরকার। দেরিতে হলেও ভাল খবর। শিক্ষা দফতর সব সময়ই বাকিদের থেকে পিছিয়ে থাকে কেন?”