ছবি: সংগৃহীত।
মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ভাইরাল হওয়াকে কেন্দ্র করে যে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা ও নজরদারিতে আরও বেশি সতর্ক হল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের উপর বিশেষ জোর দিয়েছে সংসদ। আর এই বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি স্কুলগুলিতে।
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান হয়েছে, প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে সিসিটিভি বসাতে হবে। নির্দেশে উল্লেখ করা হয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ পথ ও ভেনু সুপারভাইজারের ঘর তথা কনফিডেন্সিয়াল রুমে বাধ্যতামূলক ভাবে সিসিটিভি বসাতে হবে। পরীক্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় রেকর্ডিং সংরক্ষণ করতে হবে দেড় মাস। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে যে হেতু পরীক্ষা শুরু ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং শেষ হবে ২৯ ফেব্রুয়ারি, সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে ২৮ মার্চ পর্যন্ত।
স্কটিশচার্চ কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাস সান্যাল বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের একটা বড় খরচা রয়েছে, আমাদের স্কুলে এই ব্যয়ভার কিছুটা বহন করছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সরকার বা সরকার পোষিত স্কুলগুলির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের এই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা যথেষ্ট কঠিন ও উদ্বেগের কারণ।”
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনার কথা বিবেচনা করে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে কড়া নজরদারির প্রয়োজন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শবরী ভট্টাচার্য বলেন, “কাউন্সিলের নির্দেশ থাকলে তা পালন করতেই হবে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সিসিটিভির জন্য আর্থিক সাহায্য করেছেন। তবে কাউন্সিল সেই সাহায্যের কথা উল্লেখ করেনি। সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটা খরচ তো হবেই, তবে যে সমস্ত স্কুলে এই সমস্যা তৈরি হবে তাঁদের অবশ্যই কাউন্সিলকে জানাতে হবে।”
শিক্ষা সংসদের দেওয়া নির্দেশে উল্লেখ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রয়োজন হলে শিক্ষা সংসদ সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে পারেন। এই নির্দেশের ভিত্তিতে সকল সেন্টার ইনচার্জ, সেন্টার সেক্রেটারি ও ভেনু সুপারভাইজারদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নারকেলডাঙা হাই স্কুলের শিক্ষক স্বপন মণ্ডল বলেন, “মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রতিদিন নিয়ম করে প্রশ্নপত্র ভাইরাল হচ্ছে দেখে হয়ত উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তারা এই সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন। কিন্তু সিসিটিভি বসানো ও রক্ষণাবেক্ষণের টাকা আসবে কোথা থেকে? কাউন্সিল এই টাকাটা দিলে ভাল হয়।”
প্রসঙ্গত, প্রত্যেক দিনের পরীক্ষার টানা সিসিটিভি ফুটেজ রেকর্ডিং সংগ্রহ করতে গেলে আলাদা করে তথ্য ভান্ডার স্কুলগুলিকে কিনতে হবে ‘গুগল’-এর কাছ থেকে। তা ব্যয়বহুল বলে মনে করছে একাধিক স্কুল। বহু স্কুল শিক্ষা সংসদের এই নির্দেশের বিরোধিতা না করলেও আর্থিক ভাবে সাহায্যের দাবি করছে।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে খরচ অবশ্যই বাড়বে তবে শিক্ষা সংসদ এই বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয়ই বিবেচনা করবে এবং নিশ্চয়ই স্কুলগুলির পাশে দাঁড়াবে।”
১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় আট লক্ষের মতো। পরিবর্তিত সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ৯ টা ৪৫ মিনিট থেকে চলবে দুপুর ১ টা পর্যন্ত।