কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর মানহানির মামলা খারিজ করে দিল কেরল হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখানো প্রতিবাদের একটি পদ্ধতি। একে মুখ্যমন্ত্রীর মানহানি বলা যায় না। একটি মামলায় এমনটাই রায় দিল কেরল হাই কোর্ট। কেরল সরকারের আনা অভিযোগগুলিও খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
২০১৭ সালের একটি মামলায় কালো পতাকা সংক্রান্ত রায়টি দিয়েছে কেরল হাই কোর্ট। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ওই বছরের ৯ এপ্রিল উত্তর পরবুরের উপর দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে তিন যুবক মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের দিকে কালো পতাকা দেখান বলে অভিযোগ। কোনও বিষয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন তাঁরা। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় তাক করে কালো পতাকা উড়িয়েছিলেন। এর পরেই তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মানহানি, জনসাধারণের পথ আটকে রাখা এবং জনপ্রতিনিধিকে হেনস্থার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এত দিনে সেই মামলার রায় শোনাল আদালত।
মুখ্যমন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখানো তিন যুবকের নাম সিমিল, ফিজো এবং সুমেশ দয়ানন্দন। কেরল হাই কোর্টের বিচারপতি বেচু কুরিয়ান থমাসের বেঞ্চে তাঁদের মামলাটির শুনানি হয়েছে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, কালো পতাকা ওড়ানো সাধারণত প্রতিবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি বেআইনি নয়। এর ফলে কারও মানহানিও হয় না। এ ছাড়াও যে দু’টি অভিযোগ ওই তিন জনের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, সেগুলিকেও ভিত্তিহীন বলে মনে করেছে আদালত।
বিচারপতি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের দিকে কালো পতাকা দেখিয়েছিলেন অভিযুক্তেরা। কিন্তু তাঁরা কনভয়ের গতিপথে কোনও ভাবে বাধা হয়ে দাঁড়াননি। ফলে পথ আটকে রাখার অভিযোগটি এ ক্ষেত্রে খাটে না। পুলিশ তিন জনকেই ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। কোনও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সাময়িক ভাবেও মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় বাধাপ্রাপ্ত হয়নি, পর্যবেক্ষণ আদালতের। তিন জনকে ঘটনাস্থল থেকে সরানোর সময়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সামান্য সংঘর্ষ হয়েছিল। তাকেও ‘পুলিশের কাজে বাধা’ হিসাবে দেখছেন না বিচারপতি।
আদালত জানিয়েছে, ভারতীয় আইন অনুযায়ী, কাউকে কালো পতাকা দেখানো মানে তাঁকে অসম্মান করা নয়। বরং তাঁর বিরুদ্ধে বা তাঁর কোনও আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ফলে এটি দণ্ডণীয় নয়। তিন জনের বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করেছে হাই কোর্ট।