WBSSC Upper Primary

উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগপত্র পেতে হয়রানির অভিযোগ, সমাধানে নয়া বিজ্ঞপ্তি এসএসসি-র

নয়া বিজ্ঞপ্তিতে কমিশনের তরফ থেকে ‘গ্র্যাড উইথ বি.এড’ বদলে ‘গ্রাড উইথ প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশন’ উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি আটটি যোগ্যতার কথা নির্দিষ্ট করা হয়েছে, যা থাকলে চাকরির নিয়োগপত্র পেতে কোন‌ও অসুবিধা হবে না।

Advertisement

অরুণাভ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৬
Share:

সংগৃহীত চিত্র।

অনুমোদনপত্র হাতে পেয়ে নিয়োগপত্র নিতে গিয়েও হয়রানির শিকার উচ্চ প্রাথমিকের বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী। সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হল স্কুল সার্ভিস কমিশন। উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষকতা করতে গেলে শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্তাবলি কী, তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করেছে তারা। বিজ্ঞপ্তিতে চাকরির নিয়োগপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে আট দফা শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র হাতে পেতে যাতে কোন‌ও অসুবিধা না হয়‌, তাই কী কী অ্যাকাডেমিক এবং প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশন প্রয়োজন, কমিশনের তরফ থেকে তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে।”

এসএসসি-র তরফ থেকে ইতিমধ্যে ছ’দফায় কয়েকশো চাকরিপ্রার্থীর হাতে অনুমোদন পত্র দেওয়া হয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা রয়েছে ‘গ্র্যাড উইথ বি.এড।’ এই অনুমোদনপত্র নিয়ে চাকরিপ্রার্থীরা যখন স্কুলে যাচ্ছেন, সেখানে তাঁদের পুনরায় তথ্য যাচাই পর্বে দেখা যাচ্ছে, কারও রয়েছে ডিএল‌এড, এক বছরের বি.এড, আবার কারও রয়েছে চার বছরের বিএ/বিএসসি-এড। স্কুলগুলির কাছে এ নিয়ে স্পষ্ট কোনও নির্দেশ না থাকায় নিয়োগপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্কুল পরিচালন সমিতি বা প্রধান শিক্ষকদের বক্তব্য, সরকারি নির্দেশ যা থাকবে, সেই অনুযায়ী স্কুলগুলি ভেরিফিকেশন করবে। বিগত বছরে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন কারণে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বা পরিচালন সমিতির সদস্যদের ডাকা হয়েছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফ থেকে। তাই নির্দেশে স্পষ্ট উল্লেখ না থাকলে তা অসুবিধার সৃষ্টি করবে।

Advertisement

প্রধান শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “বিগত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে সরকারের নির্দেশের বাইরে আমরা কোন‌ও কাজ করতে পারি না। নিয়ম প্রণয়নের দায়িত্বে রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তারা যে বিজ্ঞপ্তি দেবে, সেই মতো স্কুলগুলি তা মানতে বাধ্য। যে কাজের সঙ্গে স্কুলের কোন‌ও যোগসূত্র নেই, সেখানে বিগত নিয়োগের ক্ষেত্রে ইডি, সিবিআইয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছে এই নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত একাধিক প্রধান শিক্ষক ও পরিচলন সমিতির সদস্যদের।”

নয়া বিজ্ঞপ্তিতে কমিশনের তরফ থেকে ‘গ্র্যাড উইথ বি.এড’ বদলে ‘গ্র্যাড উইথ প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশন’ উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি আটটি যোগ্যতার কথা নির্দিষ্ট করা হয়েছে, যা থাকলে চাকরির নিয়োগপত্র পেতে কোন‌ও অসুবিধা হবে না।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “স্কুল সার্ভিস কমিশন অনুমোদনপত্র দেওয়ার সময়ে ভুল করে সবার ক্ষেত্রে একই কোয়ালিফিকেশন লিখেছিলেন। ফলে অনেকে চাকরিতে যোগ দিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই ভুল না করলে পদপ্রার্থীদের এত হয়রানি হতো না।”

৮,৭৪৯ জনকে নিয়ে প্রথম পর্বের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। তার মধ্যে থেকে কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হয়েছিল ৬৫৮ জনকে। যার মধ্যে অনুপস্থিত ১৪৭ জন এবং কাউন্সেলিংয়ে এসেও অনুমোদন পত্র নেননি দু’জন। মোট উপস্থিত ছিলেন ৫০৯ জন।

পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারী চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেন, “কাউন্সেলিংয়ের পর্ব চলাকালীন অনুমোদনপত্র প্রাপ্ত ডিএল-এড প্রশিক্ষণ সম্পন্ন প্রার্থীরা আমাদের হেল্প ডেস্কে এই বিষয়ে আলোকপাত করেন। মঞ্চের তরফে কমিশনে বিষয়টি এস‌এস‌সিকে জানানো হয়। যথারীতি কমিশন সক্রিয় ভূমিকা পালন করে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যার ফলে বিদ্যালয়ে যোগদানে কোন‌ও প্রশ্নের সন্মুখীন হতে হবে না।”

আগামী ১১ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত, মাঝে শনি-রবি বাদ দিয়ে প্রত্যেক দিন কাউন্সেলিং চলবে। ১২ ও ১৩ নভেম্বর, দু’দিন বন্ধ থাকছে এই প্রক্রিয়া। কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “ভুল-বোঝাবুঝির ফলে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছিল চাকরিপ্রার্থীদের। এই বিজ্ঞপ্তির ফলে তা পুরোপুরি সমাধান হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement