ছবি: সংগৃহীত।
এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বাবা ও মা’রাও মাতৃত্ব ও পিতৃত্বকালীন ছুটি নিতে পারবেন। এমনকি স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরাও এই ছুটি পাবেন বলে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
সম্প্রতি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে ‘চাইল্ড কেয়ার লিভ’ বা ‘পেটারনিটি লিভ’ পাবেন ২০২৪ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচিত স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “এই ধরনের ছুটির আবেদন নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে একটা সমস্যা ছিল। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এই বিজ্ঞপ্তির ফলে যে সমস্ত বাবা-মায়ের সন্তানরা বোর্ডের পরীক্ষা দিচ্ছেন তাঁদের ছুটির ক্ষেত্রে সমস্যা দূর হল।”
উল্লেখ্য, বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীকে মাতৃত্ব ও পিতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন করতে হবে অন্তত ছুটি নেওয়ার তিন সপ্তাহ আগে। শুধু আবেদন করলে হবে না, আবেদনের সঙ্গে সন্তানের পরীক্ষা দেওয়ার সমস্ত তথ্যও জমা দিতে হবে অভিভাবককে। পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড, স্কুলের পরিচয়পত্র-সহ পরীক্ষার রুটিন প্রমাণ হিসাবে দিতে হবে। সব কিছু বিবেচনা করেই এই ছুটির আবেদন গ্রহণ করবেন প্রধান শিক্ষক।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষা দফতর এ ব্যাপারে মৌখিক আশ্বাস দিলেও নির্দেশিকা বা বিজ্ঞপ্তি জারি করছিল না। এখন শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীদের তাঁদের সন্তানের জন্য এই ছুটি পেতে আশা করি আর কোন অসুবিধা থাকবে না।”
এক দিকে যখন পরীক্ষার্থী সন্তানের জন্য ‘লিভ’-এর কথা বলা হয়েছে, পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিতে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে কোনও পরীক্ষার্থী সন্তান অসুস্থ হলে তখন ছুটি নেওয়ার জন্য বোর্ডের কাছ থেকে শর্তসাপেক্ষ অনুমতি নিতে হবে। পর্ষদের এই বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে শিক্ষক মহলে প্রশ্ন।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “মাতৃত্ব ও পিতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়ার জন্য বোর্ডের কাছে অনুমতি নেওয়ার আইন পর্ষদের নেই। অসুস্থ সন্তানের ক্ষেত্রে পরীক্ষা চলাকালীন ছুটির জন্য তা হলে কী ভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে পর্ষদ।”
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এই নির্দেশের পরও আশাবাদী নন পরীক্ষার্থী সন্তানের অভিভাবকেরা। সূত্রের খবর,পরীক্ষার সময় পরীক্ষা সুষ্ঠ ভাবে পরিচালনার জন্য শিক্ষকওশিক্ষাকর্মীদের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে স্কুলগুলিতে। বহু স্কুলে শিক্ষক কম থাকায় পাশের স্কুল থেকেও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী নেওয়া হয়ে থাকে। তাই এত দিন পর্যন্ত এই ধরনের ছুটির অনুমোদনদিত না স্কুল পরিচালন সমিতি। এই বিজ্ঞপ্তিরপরেও জট পুরোপুরি কাটল না বলে মনে করছেন বহু শিক্ষকবাশিক্ষাকর্মী। তার কারণ অনুমোদন দেওয়ার দায়িত্ব সেই পরিচালন সমিতির হাতেই। জটিলতা দেখা দিলে তবে আইন অনুযায়ী হস্তক্ষেপ করতে পারবেমধ্যশিক্ষা পর্ষদ।