সান্তা সেজে পথশিশুদের উপহার বাগবাজার উইমেন্স কলেজের ছাত্রীদের। নিজস্ব চিত্র।
বড়দিন মানেই আলোক উজ্জ্বল সন্ধ্যায় সমবেত হওয়া বো ব্যারাক বা পার্ক স্ট্রিটে। সঙ্গে অনেক আনন্দ আর খাওয়া দাওয়া। তবে এ বছর শহরের বিভিন্ন জায়গায় বড়দিন পালিত হতে দেখা গেল ভিন্ন ভাবে। শীতের সকালে সান্তা সেজে পথশিশুদের উপহার দেওয়ার মাধ্যমে বড়দিন পালন করল কলেজ ছাত্রীরা।
বাগবাজার উইমেন্স কলেজের স্নাতকোত্তরের সাংবাদিকতা বিভাগ ও অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি বিভাগের পড়ুয়ারা নিজের উদ্যোগে উত্তর কলকাতার পথ শিশুদের হাতে তুলে দিল শীতবস্ত্র ও নানা উপহার। শোভাবাজার মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন ফুটপাতের পথশিশু ও বাগবাজার মায়ের বাড়ির সংলগ্ন ফুটপাতের পথশিশুদের হাতে এই উপহার ও শীতবস্ত্র তুলে দেওয়া হল।
বাগবাজার উইমেন্স কলেজের প্রিন্সিপাল অনুপমা চৌধুরী বলেন, “বাগবাজার উইমেন্স কলেজের উদ্দেশ্য ছাত্রীদের শুধু স্বনির্ভর করা নয়। প্রত্যেকের সমাজের প্রতি একটা দায়িত্ব রয়েছে, সেই ভাবনা ছাত্রীদের মধ্যে জাগ্রত করা। সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে আনন্দ উদ্যাপন করা। আমাদের কলেজের ছাত্রীরা যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকে আমরা কুর্ণিশ জানাই। আগামী দিনেও বিভিন্ন সময় তারা যেন সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে, এটাই আমাদের লক্ষ্য।”
ক্রিসমাস বা বড়দিন উপলক্ষে কলেজের ছুটি পড়ে গিয়েছে। আর ছুটির দিনে পথশিশুদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য উত্তরবঙ্গ, বর্ধমান, শ্রীরামপুর ও বালি থেকে ছাত্রীরা এসেছে ‘সান্তা’ সেজে পথশিশুদের উপহার দিতে। প্রত্যেকের পরনে ছিল লাল পোশাক ও সান্তা ক্লজের টুপি। ৮০ জন পড়ুয়া দু’টি গ্রুপে ভাগ হয়ে উত্তর কলকাতার দু’টি জায়গায় পথশিশুদের হাতে তুলে দিল শীতের বস্ত্র। সান্তাদের লাল থলিতে ছিল কম্বল, শীতের টুপি, সান্তা টুপি, কেক ও চকোলেট। এই সমস্ত উপহার পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ে দুঃস্থ পথশিশুরা।
বাগবাজার উইমেন্স কলেজের স্নাতকোত্তরের সাংবাদিকতা বিভাগের কো-অর্ডিনেটর বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “বর্তমান ছাত্রসমাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে তারা স্বার্থপর। আজ প্রমাণ করে দিল যে তারাও মানুষের পাশে থাকতে ভালোবাসে। পড়ুয়াদের এই উদ্যোগ থেকে শেখার আছে। আগামী দিনে সমাজের এরাই কাজ করবে সাংবাদিকতা বা মনোবিদ্যা নিয়ে। তার আগে সমাজকে চেনা এবং তাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার অভিনব উদ্যোগ নিতে দেখা গেল।”
বাগবাজার উইমেন্স কলেজেরছাত্রীরা ১০০দুঃস্থ পথশিশুদের যেশীতবস্তু ওনানাউপহারতুলে দিয়েছে তা সম্পূর্ণ নিজেদের খরচে। এইউদ্যোগসমাজের কাছে নতুন বার্তা দেবে বলে করছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।