মৌসুমি টুডু এবং সরস্বতী বাস্কে। নিজস্ব চিত্র।
অভাবের সংসার! ২ জনেরই বাবা কাজ করেন চাষের। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে আলো ফোটাল মৌসুমি টুডু ও সরস্বতী বাস্কে। এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম ভাষা সাঁওতালি বিভাগে প্রথম হয়েছেন তাঁরা।
ঝাড়গ্রাম জেলার রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির পরিচালিত একলব্য মডেল রেসিডেনশিয়াল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছেন মৌসুমি টুডু ও সরস্বতী বাস্কে। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৭২। অর্থাৎ ৯৪.৪ শতাংশ। মৌসুমি ঝাড়গ্রামের স্কুলে পড়লেও বাড়ি বাঁকুড়ায়। অভাবের সংসারে বড় হওয়া তাঁর। বাবা গণেশ টুডু চাষের কাজ করে সংসার চালান। মেয়েকে নার্সিং পড়াতে চান। তবে, মৌসুমির ইচ্ছে আগামী দিনে ইংরেজি নিয়ে পড়ে পুলিশ হবেন। সরস্বতীরই সতীর্থ মৌসুমি। একলব্য স্কুলেই তাঁরও পড়াশোনা। সরস্বতীর বাবা বিশ্বনাথ বাস্কের সংসার চলে চাষের কাজ করেই। ঝাড়গ্রামের বিনপুরের চাপাবনি গ্রামে থাকেন তাঁরা। আগামী দিনে ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করে অধ্যাপনা করার ইচ্ছে তাঁর।
রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের সম্পাদক স্বামী বেদাপুরুষানন্দ জানিয়েছেন, এই বছর তাঁদের বিদ্যালয় থেকে মোট ৬৬ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ১ জন ছাড়াও সকলেই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, পিছিয়ে পড়া গ্রাম থেকে আসা পড়ুয়াই মূলত এই বিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন। মৌসুমি, সরস্বতী এবং অন্য পড়ুয়ারা যখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল তখন তাঁরা কখনওই ভাবেননি উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হতে পারবেন। ধীরে ধীরে শিক্ষকদের পরামর্শ এবং নিয়ম করে পড়াশোনার মাধ্যমে নিজেদের বিকশিত করেছে। যার ফল এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম ভাষা সাঁওতালি বিভাগে প্রথম হয়েছেন মৌসুমি এবং সরস্বতী।