নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের কৃতীরা। সংগৃহীত ছবি।
আবারও ছক্কা হাঁকাল নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্রেরা। চলতি বছরে মাধ্যমিকের ফল ঘোষণার পর দেখা গিয়েছিল, প্রথম দশের মেধাতালিকায় রয়েছে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছয় কৃতী। বুধবার, দুপুর ১টায় উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণার পর সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেল। প্রথম দশের মেধাতালিকায় ৫৮ জনের মধ্যে এ বারও রয়েছে নরেন্দ্রপুরের ছ’জন পড়ুয়া! স্বভাবতই খুশি মিশনের শিক্ষক থেকে পড়ুয়া সকলেই।
এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকের ৪৯৫ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী হয়েছেন মিশনের ছাত্র সৌম্যদীপ সাহা। এর পর ষষ্ঠ স্থানে রয়েছেন নিলয় চট্টোপাধ্যায়। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯১। যুগ্ম ভাবে নবম স্থান দখল করে নিয়েছেন অদ্বিতীয় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অর্ক সাহা। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৮। এর পর সোহম মুখোপাধ্যায় এবং শুভজিৎ ঘোষ মেধাতালিকায় যুগ্ম ভাবে দশম স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন। প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৭।
পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরে খুশি সকলেই। সকলেই নিজেদের সাফল্যের সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দিয়েছেন মিশনের শিক্ষকদের। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ছ’জনের বেশির ভাগই বিজ্ঞান শাখার ছাত্র। তবে নবম স্থানাধিকারী অদ্বিতীয়ের ‘সাবজেক্ট কম্বিনেশন’ ছিল যথাক্রমে অর্থনীতি, ভূগোল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং অঙ্ক। দশম স্থানাধিকারী শুভজিতের ছিল ভূগোল, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং অর্থনীতি। অর্থাৎ কলা বিভাগের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছেন কৃতীরা।
প্রতি বছরের মতো ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের সাফল্যে গর্বিত প্রধান শিক্ষক স্বামী ইষ্টেশানন্দ। তবে খানিক আফসোসেরও সুর তাঁর গলায়। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেছেন, “পড়ুয়াদের সাফল্যে তো বরাবরই খুব আনন্দ হয় আমাদের। এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় যাঁরা স্থান অধিকার করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই মেধাবী। তবে আশা করেছিলাম, আরও কিছু ছাত্র এ বার মেধাতালিকায় থাকবে। বিভিন্ন বিষয়ে এক-দু’নম্বর কম হওয়ায় প্রথম দশের তালিকায় স্থান অর্জন করতে পারেনি তাঁরা।”
মিশনের এই কৃতীদের মধ্যে সৌম্যদীপের মতোই থাকা নিলয়ের স্বপ্ন ভবিষ্যতে রাশিবিজ্ঞান বা স্ট্যাটিস্টিক্স নিয়ে পড়ার। অদ্বিতীয় আবার বরাবরই প্রশাসনিক পদে কাজ করতে চান। সর্বভারতীয় স্তরের আইএএস পরীক্ষায় সফল হয়ে দেশের প্রশাসনিক কাজকর্মের হাল ধরতে চান। উচ্চ মাধ্যমিকে দশম স্থানের পাশাপাশি সোহম আবার সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেন পরীক্ষাতেও ৩২৮ র্যাঙ্ক করেছেন। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়লেও কোনও কর্পোরেট সংস্থায় চাকরি করতে চাননা। নতুন কিছু উদ্ভাবনের জন্য গবেষণার কাজে লিপ্ত হতে চান। অন্য দিকে, শুভজিতের ইচ্ছে পছন্দের বিষয় নিয়ে অধ্যাপনা করার। অর্থাৎ এ বার আর কেউ শুধু মাত্র ইঞ্জিনিয়ার বা চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন না। বিভিন্ন পেশা নির্বাচন করে নতুন করে সমাজ গড়াই এঁদের লক্ষ্য।