জাপানি ভাষা শেখার জন্য জাপানে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রতীকী ছবি।
বিশ্বের বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার কর্ণধার জাপানের কৃতীরা। অটোমোবাইল, অ্যানিমেশন, বৈদ্যুতিন যন্ত্র, জাহাজ নির্মানের মত বৃহত্তর শিল্পের একাংশ পরিচালিত হয়ে থাকে জাপানে। সেই সমস্ত শিল্প ক্ষেত্রে কাজ করার প্রথম এবং প্রধান চাহিদা হল জাপানি ভাষায় সাবলীল ভাবে কথা বলতে পারা এবং একই সঙ্গে সেই ভাষা পড়তে পারা। কিন্তু সেই ভাষা শেখার জন্য যে জাপানে যেতে হবে! একেবারেই না। ভারতে তথা এই রাজ্যেই রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠান যেখানে পেশাদার দুনিয়ায় কাজ করার স্বার্থে জাপানি ভাষা শেখানো হয়ে থাকে।
জাপানি ভাষার ইতিহাস
জাপানি ভাষার ব্যুৎপত্তি কী ভাবে হয়েছে, সেই বিষয়টি ইতিহাসে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়নি। কিংবদন্তী মতে, এই ভাষার সঙ্গে কোরিয়ান ভাষার মিল রয়েছে। কিছু কিছু ভাষা গবেষকদের মত, ‘অস্ট্রোনেশিয়ান’, ‘সিনো-তিবেতিয়ান’ ভাষার সঙ্গে উৎপত্তিগত মিল রয়েছে জাপানি ভাষার।
কী ভাবে শেখানো হয়ে থাকে এই ভাষা?
‘কাঞ্জি’ তথা জাপানি লিপি, তার উচ্চারণ, সর্বাধিক ব্যবহৃত শব্দ শুরুতে শেখানো হয়ে থাকে। এর পর আগ্রহী ব্যক্তিরা এই ভাষাটিকে ঠৌঁটস্থ করতে চাইলে, আরও বেশ কিছু ধাপে ব্যকরণ, ‘হিরাগানা’ এবং ‘কাতাকানা’ লিপির ব্যবহারও শেখানো হয় কোর্সগুলিতে। এর পাশাপাশি, ‘জাপানিজ় ল্যাঙ্গুয়েজ় প্রফিশিয়েন্সি টেস্ট’ পরীক্ষায় পাশ করার জন্য যে উচ্চমানে ভাষার জ্ঞান থাকা আবশ্যক, সেই বিষয়টিও শেখানো হয়ে থাকে। এছাড়াও জাপানের সংস্কৃতির বিষয়েও পড়ুয়াদের শেখানো হয়ে থাকে, যা এই কোর্সের আওতায় পড়ে।
কোথায় শেখানো হয়?
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর অফ আর্টস ডিগ্রির আওতায় শেখানো হয় এই ভাষা। তবে এ ক্ষেত্রে আগ্রহী পড়ুয়াদের একটি প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হবে। বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের তরফে অনলাইনে এই ভাষা শেখার বিশেষ কোর্স করানো হয়ে থাকে। নয়াদিল্লির জাপান ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যৌথ ভাবে বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স জাপানি ভাষা শেখানোর কোর্স পরিচালনা করে থাকে। এর পাশাপাশি, বেশ কিছু স্বীকৃত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ভাষা শেখার পরিকাঠামো রয়েছে।
কত দিনে শেখানো হয়?
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ বছরের স্নাতক স্তরে এই ভাষা পড়ানো হয়ে থাকে। বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের তরফে সপ্তাহে ৪ ঘন্টা করে মোট ৩০ টি ক্লাস করানো হয়ে থাকে। মোট ৬০ ঘন্টার ক্লাস হবে সকালবেলাতেই।
দলবদ্ধ ভাবে শেখার সুযোগ আছে?
সর্বোচ্চ ৬ জনের একটি দল একসঙ্গে এই ভাষা শিখে নিতে পারবেন বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের কোর্সে। সে ক্ষেত্রে ছাড় পাবেন ফি জমা দেওয়ার বিষয়ে।
কাজের সুযোগ কেমন?
অনুবাদক, ‘ইন্টারপ্রিটেটর’, শিক্ষকতা, ‘ট্যুর গাইড’-এর মত বিভিন্ন পেশাতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যেহেতু আর্ন্তজাতিক স্তরে এই ভাষার প্রচলন রয়েছে, তাই সরকারি কাজেও দক্ষ ব্যক্তিদের চাহিদা থাকে। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রেও এই ভাষায় বিশেষজ্ঞদের চাহিদা রয়েছে।
বাংলা এবং হিন্দি ভাষায় ক্লাস করানো হয়ে থাকে এই ভাষা শেখার জন্য। তাই পেশাদারিত্বের খাতিরে কিংবা নতুন ভাষা শেখার আগ্রহ থাকলে এই কোর্স করে নেওয়া যেতেই পারে। পরবর্তীকালে পেশায় প্রবেশের সুযোগ তো থাকছেই, পাশাপাশি, দেশভ্রমণের ক্ষেত্রেও থাকবে বাড়তি সুবিধা।