প্রতীকী ছবি।
ফুসফুস, হৃদপিন্ড-সহ বুকের বিভিন্ন অঙ্গের অস্ত্রোপচার করার ক্ষেত্রে কার্ডিওথোরাসিক সার্জেনের শরণাপন্ন হতে হয়। জানেন কী, এই পেশায় আসার জন্য কোন কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হয়? স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে কোন কোন ডিগ্রি থাকা দরকার? এই বিষয়টি রাজ্যের কোন কোন প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয়ে থাকে? এই সমস্ত বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন রাধা গোবিন্দ কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল (আরজিকর)-এর কার্ডিওথোরাসিক অ্যান্ড ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক তথা চিকিৎসক সুমন চট্টোপাধ্যায়।
প্রশ্ন: কার্ডিওথোরাসিক সার্জেন হওয়ার জন্য কোন বিষয়টিতে ডিগ্রি থাকা দরকার?
সুমন চট্টোপাধ্যায়: সার্জেন হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাচেলর অফ মেডিসিন,ব্যাচেলর অফ সার্জারি অর্থাৎ এমবিবিএস ডিগ্রি থাকা বাধ্যতামূলক। কারণ এই বিশেষ ক্ষেত্রে মানব শরীরের সব থেকে স্পর্শকাতর অংশ থোর়্যাক্স তথা বুকের যাবতীয় রোগ নিরাময় করতে হয়। তাই কার্ডিওলজি অ্যান্ড থোরাসিক সায়েন্স বিষয়টিতে স্নাতকস্তরের ডিগ্রি থাকা দরকার।
প্রশ্ন: কোন কোন বিষয় শেখার সুযোগ রয়েছে?
সুমন চট্টোপাধ্যায়: মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি বুকে অবস্থান করে। তাই শারীরবিদ্যা, ইমেজিং টেকনোলজি, ক্রিটিক্যাল কেয়ার, চেস্ট মেডিসিন, কার্ডিওথোরাসিক অ্যান্ড ভাসকুলার স্টাডির মতো বিষয় শেখানো হয়ে থাকে। একই সঙ্গে কোন উপায়ে এবং ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে রোগী সুস্থ হয়ে উঠবেন, সেই সমস্ত বিষয়েও প্রশিক্ষণ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
প্রশ্ন: স্নাতকোত্তর স্তরে কোন কোন ডিগ্রি নিয়ে পড়াশোনা করার দরকার?
সুমন চট্টোপাধ্যায়: এমবিবিএস ডিগ্রি পড়ার পর মাস্টার অফ চিরুগিয়ে (এমসিএইচ) ইন কার্ডিওভাসকুলার অ্যান্ড থোরাসিক সার্জারি, মাস্টার অফ চিরুগিয়ে (এমসিএইচ) ইন কার্ডিও থোরাসিক সার্জারি নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রো কার্ডিওগ্রাফি টেকনিক, ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রো কার্ডিওগ্রাফিক টেকনিক নিয়েও পড়াশোনা করা যেতে পারে।
এক্ষেত্রে এমবিবিএস করার পর মাস্টার অফ চিরুগিয়ে (এমসিএইচ) ইন কার্ডিওভাসকুলার অ্যান্ড থোরাসিক সার্জারি পড়তে চাইলে পড়ুয়ারা ছয় বছরের একটি ইন্টিগ্রেটেড কোর্স করতে পারেন। এছাড়াও জেনারেল সার্জারি বিষয়ে তিন বছরের মাস্টার অফ সার্জারি/ ডিপ্লোম্যাট অফ ন্যাশনাল বোর্ড (এমএস/ডিএনবি) পড়া যেতে পারে। এই বিষয়টি পড়ার ক্ষেত্রে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (নিট) পিজিতে উত্তীর্ণ হওয়া প্রয়োজন।
পাশাপাশি, ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট সুপার স্পেশালিটি (নিট-এসএস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কার্ডিওভাসকুলার অ্যান্ড থোরাসিক সার্জারি নিয়ে তিন বছরের সুপার স্পেশালাইজ়ড কোর্স করার সুবিধাও রয়েছে।
প্রশ্ন: চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই বিষয়টি শেখার ক্ষেত্রে কী ধরণের পরিবর্তন হয়েছে?
সুমন চট্টোপাধ্যায়: প্রযুক্তির উন্নতির কারণে মানুষ কম খরচে আধুনিক মানের চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন। পাশাপাশি কৃত্রিম মেধার কারণে কার্ডিওভাসকুলার মেডিসিন ব্যবহারের ক্ষেত্রেও রদবদল হয়েছে। আধুনিক পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারের খুঁটিনাটি শেখানোর বিষয়টিও সহজে এখন শেখানো হচ্ছে, যা পরবর্তীকালে পেশাদার হিসেবে কাজ করতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞের মতে, কার্ডিওথোরাসিক সার্জেন হয়ে ওঠার জন্য মানব শরীরের খুঁটিনাটি জানা অন্তত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। পাশাপাশি ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ করে দক্ষতা বাড়াতে পারলে এই পেশায় ভবিষ্যত উজ্জ্বল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।