প্রতীকী চিত্র।
কম্পিউটারে গেম খেলতে খেলতেই গেম ডেভেলপার হওয়ার ইচ্ছে জেগেছিল আকাশের। কিন্তু গেম বানানো যে খুব কঠিন, তার জন্য নাকি অনেক পড়াশোনা করতে হয়! এত কিছু শুনে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিল না সে। এমন কত আকাশদের স্বপ্ন রয়েছে অগমেন্টেড রিয়্যালিটি (এআর) নিয়ে কাজ করার।
তবে, বিষয়টি কিন্তু ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির থেকে আলাদা। বাস্তবের সঙ্গে ডিজিটাল তথ্য সাজিয়ে অভিনব পরিবেশ তৈরি করে এআর। অন্য দিকে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি সম্পূর্ণ রূপে একটি কৃত্রিম পরিবেশ ব্যবহারকারীদের কাছে পেশ করে।
এ ক্ষেত্রে এআর প্রযুক্তি চাহিদার দিকে থেকে খানিকটা হলেও এগিয়ে রয়েছে বলে মনে করেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) খড়্গপুরের অ্যাডভান্সড টেকনোলজি ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর এবং সিটিএলভিএস-এর ভাইস চেয়ারম্যান কৌশলকুমার ভগত।
এই পেশার ক্ষেত্রে কী কী পথ বেছে নেওয়া যেতে পারে? জবাবে কৌশল প্রথমেই জানিয়েছেন, চাহিদার ভিত্তিতে এআর ডেভেলপার, এআর/ভিআর কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের চাহিদা অনেক বেশি। এ ছাড়াও এআর নিয়ে পড়াশোনা সম্পূর্ণ করার পর ইউএক্স/ইউআই ডিজ়াইনার ফর এআর অ্যাপ্লিকেশনস, এআর প্রোডাক্ট ম্যানেজার, এআর রিসার্চ সায়েন্টিস্ট, থ্রি ডি মডেলার অ্যান্ড অ্যানিমেটর এবং স্পেশিয়াল কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পদেও কাজের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বেতনক্রম ৬০,০০০ টাকা থেকে শুরু ১,৪৩,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
কৌশল আরও বলেন, “এআর পেশাদারদের চাহিদা দেশে তো বটেই, আন্তর্জাতিক স্তরেও ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, এই চাহিদা শুধুমাত্র গেমিং শিল্পে সীমাবদ্ধ নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য এবং বিনোদনের পাশাপাশি, অটোমোবাইল, প্রোডাকশন, ম্যানুফ্যাকচারিং-এর জন্য এই বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। অ্যাপল, মাইক্রোসফট, গুগল, মেটা-র মতো সংস্থায় নিয়মিত এআর প্রফেশনালদের কাজের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও খুচরো ব্যবসা, আবাসন কিংবা স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তির বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”
এআর নিয়ে পড়তে হলে বিজ্ঞান শাখার তিনটি বিষয় দ্বাদশে থাকা আবশ্যক— পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং গণিত। স্নাতক স্তরে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারি কিংবা ভার্চুয়াল অ্যান্ড অগমেন্টেড রিয়্যালিটি নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। তবে, এ ক্ষেত্রে আগ্রহীদের জাতীয় স্তর কিংবা রাজ্য স্তরের জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগজ়ামিনেশনে উত্তীর্ণ হতে হবে। পাশাপাশি, এই ধরনের বিষয় নিয়ে পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগও থাকছে। এ ক্ষেত্রে কোর্স বা ডিগ্রি অর্জনের আনুমানিক খরচ ৬,০০০ টাকা থেকে ৭,৫০,০০০ টাকা।
এ ক্ষেত্রে যাঁরা রেগুলার কোর্সে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না, তাঁদের জন্য স্নাতকোত্তর স্তরে দেশের বিভিন্ন আইআইটি প্রতিষ্ঠানের তরফে বিশেষ কোর্স করানো হয়। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগ ‘স্বয়ম’ প্ল্যাটফর্মেও স্বল্প সময়ের মধ্যে এই বিষয় শেখানো হয়ে থাকে। পড়াশোনার সঙ্গে কেউ ইন্টার্নশিপ বা ফিল্যান্সিং-এর পথও বেছে নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন সরকারি এবং সরকার অধীনস্থ সংস্থায় কাজের সুযোগ রয়েছে।