প্রতীকী চিত্র।
এ বছরের মাধ্যমিক শুরু আর দু’সপ্তাহ পরেই। জীবনবিজ্ঞান পরীক্ষা আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি। এই সময়ে কী ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে, কোন বিষয়গুলি মন দিয়ে পড়তে হবে, সেই নিয়ে কিছু পরামর্শ রইল।
প্রশ্নের ধরন- মাধ্যমিকের জীবনবিজ্ঞান প্রশ্নপত্রে মোট চারটি বিভাগ থাকে— ক, খ, গ এবং ঘ। ‘ক’ বিভাগে থাকে ১৫টি এমসিকিউ প্রশ্ন। যার সবক’টির উত্তর দেওয়া বাধ্যতামূলক। ‘খ’ বিভাগে ২৬টি অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের মধ্যে পরীক্ষার্থীদের শূন্যস্থান পূরণ, সত্য-মিথ্যা নির্ধারণ, স্তম্ভ মেলানো এবং একটি শব্দ/বাক্যে উত্তর দিতে হয় ২১টি প্রশ্নের। এই অংশে মোট ৩৬ নম্বর থাকে। ‘গ’ বিভাগে ১৭টি প্রশ্নের মধ্যে ১২টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। প্রতিটি প্রশ্নে থাকে ২ নম্বর। ‘ঘ’ বিভাগে ৬টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এখানে প্রশ্ন পিছু ৫ নম্বর থাকে। এর মধ্যে একটি প্রশ্ন অঙ্কনধর্মী।
সময় বিভাজন- প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েই প্রথম ১৫ মিনিট তা খুব মন দিয়ে পড়ে নিতে হবে এবং কোন কোন প্রশ্নের উত্তর দেবে, তা নির্বাচন করে নিতে হবে। ‘ক’ বিভাগের ১৫টি এমসিকিউ প্রশ্ন ১৫ মিনিটের মধ্যে শেষ করে দেওয়া ভাল। এর পরে ‘খ’ বিভাগের জন্য ২৫ মিনিট ও ‘গ’ বিভাগের জন্য ৩৫ মিনিট হাতে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে, ‘খ’ ও ‘গ’ বিভাগ থেকে একটি/ দু’টি অতিরিক্ত উত্তর লিখতে পারলে ভাল হয় । ‘ঘ’ বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে ৯০ মিনিট। এর পরে হাতে থাকবে আর ১৫ মিনিট। এই সময়ে মাথা ঠান্ডা রেখে রিভিশন করে নিতে হবে।
যে ভাবে পড়তে হবে- পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কিছু কৌশল গ্রহণ করতে হবে। পাঠ্যবই পড়তে হবে খুঁটিয়ে। একইসঙ্গে বিভিন্ন টেস্ট পেপার ও বিগত বছরের মাধ্যমিকের প্রশ্নের সমাধান করতে হবে। সারা দিনে অন্তত এক থেকে দু’ঘণ্টা জীবনবিজ্ঞান পড়তে হবে। এ ছাড়া, সারা বছর স্কুলে শিক্ষক/ শিক্ষিকা যে ভাবে পড়িয়েছেন, যে যে বিষয় গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন, তা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
বিষয় নির্বাচন- জীবনবিজ্ঞানের পাঁচটি অধ্যায়কেই সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে।
গুরুত্ব যেখানে-
• পরীক্ষার খাতা যথাসম্ভব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অযথা কাটাকুটি না করাই ভাল।
• প্রশ্নপত্র মন দিয়ে পড়তে হবে। প্রতিটি প্রশ্নের ভাগগুলি যেন কোনও ভাবে চোখ এড়িয়ে না যায়।
• ‘ক’ ও ‘খ’ বিভাগের শেষে এবং ‘গ’ ও ‘ঘ’ বিভাগের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের শেষে ‘এন্ডিং লাইন’ দিলে ভাল হয়।
• উত্তর এলোমেলো ভাবে না লিখে ক্রমানুসারে লেখা উচিত।
• ছবি আঁকার দিকে নজর দিতে হবে। খাতার বাম দিক ঘেঁষে ছবি এঁকে ডান দিকে চিহ্নিত করলে ভাল।
• গত পাঁচ বছরে যে সকল অঙ্কনধৰ্মী প্ৰশ্ন এসেছে, সবগুলিই বাড়িতে অনুশীলন করতে হবে। তবে মানব চক্ষুর লম্বছেদ, উদ্ভিদ বা প্রাণী কোষবিভাজনের বিভিন্ন দশা, প্রতিবর্ত চাপ— এই ছবিগুলি ভাল করে অভ্যাস করতে হবে।
• যদি কোনও শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপের ‘ফুল ফর্ম’ লিখতে বলা হয়, তবে তা ইংরেজিতে লিখলেই ভাল। যেমন— ‘প্যান’-এর সম্পূর্ণ রূপ লিখতে বলা হলে ‘পেরোক্সিঅ্যাসিটাইল নাইট্রেট’ লিখতে হবে।
• বংশগতি থেকে ‘ক্রসিং’-এর অথবা রোগ সম্পর্কে প্রশ্ন এলে প্রতিটি জনু, গ্যামেট বা ব্যবহৃত চিহ্নকে সুস্পষ্ট ভাবে নির্দেশ করতে হবে।
• ‘অভিযোজন’-এর প্রশ্নে অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য লিখতে বললে তার সঙ্গে অভিযোজনগত গুরুত্বও লিখতে হবে।
• কোনও দু’টি বিষয়ের মধ্যে দু’টি বা তিনটি পার্থক্য লিখতে বলা হলে তার মধ্যে উদাহরণ লিখলে হবে না। কারণ, উদাহরণ দিয়ে পার্থক্য হয় না। উদাহরণকে অতিরিক্ত পয়েন্ট হিসেবে লেখা যেতে পারে।
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি- গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞা বা সূত্র পড়ার সঙ্গে সঙ্গে লিখেও অভ্যাস করবে। ‘বংশগতি’ অধ্যায়ের সংকরায়ন সংক্রান্ত প্রশ্নের জেনোটাইপ ও ফেনোটাইপ-এর অনুপাত নির্ণয় খুব যত্ন করে অভ্যাস করতে হবে। পাশাপাশি, ছবি আঁকাও অনুশীলন করতে হবে। কোনও প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময়ে প্রয়োজন পড়লে প্রাসঙ্গিক ছবি আঁকতে হবে।
(লেখিকা যোধপুর পার্ক গার্লস হাই স্কুলের সহ প্রধানশিক্ষিকা তথা জীবনবিজ্ঞান শিক্ষিকা)