ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধীনে এই আধুনিক গবেষণাগার। নিজস্ব চিত্র।
বৈদ্যুতিন প্রযুক্তির নকশা তৈরির জন্য এ বার আধুনিক গবেষণাগার বানাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। গ্লোবাল যাদবপুর ইউনিভার্সিটি অ্যালামনি ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় সেমিকন্ডাক্টর গবেষণাগার গড়ে তোলা হয়েছে ক্যাম্পাসে।
বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনে বৈদ্যুতিন প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়াশিং মেশিন থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভি বা মোবাইল ফোন-সহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিন জিনিসগুলি চালিত হয় একটি ‘চিপ’-এর উপর নির্ভর করে। এ ছাড়াও ঘড়ি হোক বা গাড়ি আরও বেশি তথ্যের আদান-প্রদান করতে আধুনিক সমাজে ডিজিটাল প্রযুক্তির বিস্তার ঘটেছে। এই অত্যাধুনিক গবেষণাগারের মাধ্যমে আধুনিক সেমিকন্ডাক্টর ‘চিপ’-এর নকশা তৈরি করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ছাত্ররা।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধীনে এই আধুনিক গবেষণাগার তার কাজ চালিয়ে যাবে। অত্যাধুনিক এই গবেষণাগারে থাকছে ১৬টি কম্পিউটার এবং একটি সার্ভার। বৈদ্যুতিন প্রযুক্তির ডিজ়াইন তৈরির জন্য থাকছে সফটওয়্যার-এর ব্যবস্থা।
আইসি সেন্টার অফ এক্সিল্যান্স-এর কো-অর্ডিনেটর সায়ন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আধুনিক বৈদ্যুতিন জিনিস ব্যাবহারের জন্য যে ধরণের প্রযুক্তির প্রয়োজন তার বৈদ্যুতিন নকশা তৈরি করা হবে এই গবেষণাগারে। এই প্রশিক্ষণের ফলে পড়ুয়ারদের স্বনির্ভর হওয়ার পাশাপাশি চাকরির সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।”
চলতি মাস থেকেই গবেষণাগারে কাজ শুরু করা হবে। ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ছাড়াও এই ডিজ়াইনিং-এর সঙ্গে যুক্ত থাকবেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনস্ট্রুমেনশন অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা।
এই গবেষণাগারে ৫০-এর বেশি পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে অনলাইনের মাধ্যমে। সফটওয়্যার প্রস্তুতকারক সংস্থা প্রাথমিক ভাবে এই প্রশিক্ষণ দেবে, শুধু পড়ুয়াদের নয়, এই ডিজ়াইনিং-এর সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদেরও এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ছাড়াও পাঁচটি সেমিকন্ডাক্টর সংস্থার যৌথ সহযোগিতায় আধুনিক ‘চিপ’ ডিজ়াইন করা হবে পড়ুয়াদের দিয়ে। এই পুরো প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষক।
প্রসঙ্গত, গত বছর অগস্ট মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সিনোপসিস দ্বারা পরিচালিত গবেষণাগার তৈরি করা হয়েছিল। এই গবেষণাগারটিডিজিটাল ভিএলএসআই গবেষণাগার হিসাবে পরিচিত। আর বর্তমানে যে গবেষণাগারটি তৈরি হয়েছে সেখানে অ্যানালগের উপর কাজ করা হবে। যেখানে ৫জি ‘চিপ’ ডিজাইনিং-এর প্রক্রিয়াকেও সাহায্য করার ব্যবস্থা থাকবে। আর এই মিলিত গবেষণাগার গুলির যৌথ উদ্যোগে আইসি সেন্টার ফর এক্সিল্যান্স তৈরির পথে এগিয়ে চলেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এই ধরনের প্রশিক্ষণ এবং প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত পড়ুয়ারা নিজ উদ্যোগে পরবর্তীকালেস্টার্টআপ বা বিভিন্ন কোম্পানির অধীনে চাকরির করারও সুযোগ পাবেন।