মঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্ট অতিথিদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা ও অন্যান্য সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র।
আগামী প্রজন্মের উদ্যোগপতি হিসাবে সম্ভাবনাময় তারকাদের সমাবেশ হল কলকাতায়। ইস্টার্ন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টিগ্রেটেড লার্নিং ইন ম্যানেজমেন্টের কলকাতা কেন্দ্রে সাড়ম্বরে পালিত হল ২০২৪-এর সমাবর্তন অনুষ্ঠান। গত ১৩ এপ্রিল সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত হয় এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও পড়ুয়ারা ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট জনেদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল তাতে। ছিলেন পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত ইসরোর বৈজ্ঞানিক ওয়াই এস রাজন, প্রতিষ্ঠানের কলকাতা কেন্দ্রের সচিব এবং অধিকর্তা রমাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা।
‘প্রজ্ঞানুবর্তন বিশিষ্টম’ অর্থাৎ ‘সমাবর্তনের আধারে হোক জ্ঞানের উন্মোচন’ শীর্ষক ভাবনাকে সঙ্গী করে চলতি বছরের অনুষ্ঠানটি প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে সূচনা করেন প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা রমাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরে স্বাগত ভাষণে তিনি বলেন, “পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন হল এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এদিনের অনুষ্ঠানে ২০১৭ থেকে ২০২২-এর পড়ুয়াদের হাতে বিজ়নেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে।”
পড়ুয়ার হাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির শংসাপত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।
এ দিনের অনুষ্ঠানের মাঝেই অধিকর্তা আরও জানান, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলিতে পড়ুয়াদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়াটাই তাঁদের আসল লক্ষ্য। তিনটির মধ্যে অন্তত দু'টি প্রতিষ্ঠানে যাতে এই প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা কাজের সুযোগ পায়, তার বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হন তাঁরা। এর জন্য প্রতি বার ১০০টি প্রতিষ্ঠান ইআইএলএলএম কলকাতায় উপস্থিত হয়ে থাকে।
এ দিনের অনুষ্ঠানে পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত ইসরোর বৈজ্ঞানিক ওয়াই এস রাজন পেশাদার জীবনে নৈতিকতা বজায় রেখে কাজ করার বার্তা দেন। পাশাপাশি, ভারতের ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন ব্যাঙ্কের (স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ় ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া) চিফ জেনারেল ম্যানেজার শুভ্রাংশু আচার্য জানান, দেশের ক্ষুদ্র শিল্পক্ষেত্রের সঙ্গে ৮ কোটিরও বেশি মানুষ সংযুক্ত হয়েছেন, তাই এই ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেয়েছে কর্মসংস্থানও। একই সঙ্গে সরকারের সহায়তায় উদ্যোগপতিদের জন্য বিশেষ প্রকল্প চালু হওয়ায় এই ক্ষেত্রে পেশাগত চাহিদাও বেড়েছে।
অন্য দিকে বামার লরি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর আদিকা রত্ন শেখর জানিয়েছেন, ইআইএলএলএমের তরফে পড়ুয়াদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পেশাগত ক্ষেত্রের উপযুক্ত কৌশলও শেখানো হয়ে থাকে। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দ্রুত শিখে নেওয়ার দক্ষতা থাকার উপকারিতার কথাও তিনি এ দিনের অনুষ্ঠানে মনে করিয়ে দেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানের বিশেষ মুহূর্তে। নিজস্ব চিত্র।
একই সঙ্গে নিজেদের ভাবনাকে ব্যবহার করে অন্ত্রপ্রেনিওরশিপে জোর দিতে বলেন পেনশন ফান্ড রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির সচিব দীপক মোহান্তি। তিনি আরও জানান, এই মুহূর্তে প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং ডিজিটাল ফিনান্সের মতো ক্ষেত্রে নবীন স্নাতকরা নিজেদের কর্মদক্ষতা প্রয়োগের সুযোগ পেতে পারেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ছিলেন ইআইএলএলএমের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক তাপস চক্রবর্তী, স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ় ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিবসুব্রহ্ম্যণন রমন, মালয়েশিয়ার সেগি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের ডেপুটি ভাইস চ্যান্সেলর শ্রীকুমার চক্রবর্তী-সহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা।
চলতি বছরের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের বার্তা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, বর্তমান পরিস্থিতিতে পেশাগত দিক থেকে কৌশলী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা তখনই বাস্তবায়িত হবে, যখন নবীন স্নাতকরা নিজেদের ভাবনাকে আরও বেশি প্রশস্ত করে তুলতে সক্ষম হবে।