চেতলা বয়েজ় হাই স্কুলের সঙ্গে জুড়বে আরও স্কুল। নিজস্ব চিত্র।
২০১১ সালে চেতলা বয়েজ় হাই স্কুলের বয়স ১০০ পেরিয়েছে। বাংলা বনাম ইংরেজি ভাষায় পঠনপাঠনের বিতর্কে এই স্কুলে কৃতিত্বের কথা অজানা নয়। এ বার সেই স্কুলের ১১৪তম বর্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হল ইংরেজি মাধ্যমের পড়াশোনাও। এ ছাড়া সম্প্রতি স্কুলের পঠনপাঠনের জন্য নতুন করে ভবনও তৈরি করা হয়েছে। তবে, ইংরেজি মাধ্যমের সূচনা এবং নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকেই আরও একটি খবর দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। জানিয়েছেন, স্কুলছুট রুখতে এই স্কুলের সঙ্গে আরও কিছু স্কুলকে সংযুক্ত করা হবে। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে এই বিষয়ে কথাও হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, মিড ডে মিল দশম শ্রেণি পর্যন্ত চালু থাকলে আর্থ-সামাজিক স্তরে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়া স্কুলে আসতে আরও বেশি আগ্রহী হত। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বার বার আবেদনের পরেও এ বিষয়ে কোনও সাড়া মেলেনি।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক শুভ্র চক্রবর্তী জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশিকা পেলেই এই বিষয়টি যে ভাবে পরিচালনা করা প্রয়োজন, তা করা হবে। তবে তিনি এ-ও জানান, এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি। স্কুলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়, উচ্চশিক্ষা সচিব বিনোদ কুমার-সহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথি।
স্কুলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, কলকাতা মেয়র, পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়, উচ্চশিক্ষা সচিব বিনোদ কুমার এবং অন্যেরা। ছবি: সংগৃহীত।
শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী এই স্কুল বহু ইতিহাসের সাক্ষী। এই স্কুল থেকেই সম্ভাবনাময় পড়ুয়ারা ভবিষ্যতে সফলতার মুখ দেখেছে। স্কুলের নানা অজানা ইতিহাসের কথা বলতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “বাংলা বনাম ইংরেজির দ্বন্দ্বের কোনও স্থান নেই। শিক্ষা এবং পেশাগত ভাবে সফল হওয়ার ক্ষেত্রে দু’ভাষাতেই বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া প্রয়োজন। তাই এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।”
ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক শুভ্র চক্রবর্তী জানিয়েছেন, স্কুলটিকে বর্তমানে সোলার প্যানেল, ডিজিটাল মার্কবোর্ড, পড়ুয়াদের ডিজিটাল লগইন কার্ড সিস্টেম, স্বয়ংক্রিয় ঘণ্টা, স্কুলের বিভিন্ন অংশে এয়ার কন্ডিশনার-সহ একাধিক পরিকাঠামোয় সাজানো হয়েছে। এ ছাড়া খেলার জন্য স্কুলের লনটিকেও সম্প্রসারিত করা হয়েছে।
৬ জানুয়ারি সকালে অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সঙ্গীতের পর স্বাগত ভাষণ দেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে, ১৯১১ সাল থেকে শুরু হওয়া এই স্কুল ২০২৫-এর শুরুতে দাঁড়িয়ে কতটা এগিয়েছে, স্কুলে বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি, ইংরেজি মাধ্যমের পঠনপাঠন শুরু করা কেন প্রয়োজন— এমন নানা বিষয়।
ডিজিটাল মার্কবোর্ড-সহ ক্লাসরুমে উপস্থিত অতিথিরা। নিজস্ব চিত্র।
উপস্থিত অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিও স্কুলের ইতিহাস এবং সফল প্রাক্তনীদের কথা স্মরণ করেন। যে তালিকায় রয়েছেন সাহিত্যিক বিমল মিত্র, সুরকার জগন্ময় মিত্র, প্রয়াত সুরকার এবং সঙ্গীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ী, সঙ্গীতশিল্পী অনুপ ঘোষাল-সহ আরও অনেকেই। প্রসঙ্গত, পঞ্চম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজি মাধ্যমের পঠনপাঠন শুরু হতে চলেছে ৭ জানুয়ারি থেকে। তবে সরকারি ভাবে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠনের অনুমতি মিলেছে। ভর্তি হয়েছে ১০০-র বেশি পড়ুয়া।