সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব চিত্র।
সারা রাজ্য জুড়ে ৩০০-র বেশি ট্রাডিশনাল ওরিয়েন্টাল লার্নিং বা টোলের মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হয় সংস্কৃত ভাষায়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে টোল গুলির কী অবস্থা বা কী ভাবে তা পরিচালিত হবে তার দায়িত্বভার কে নেবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে পদ্ধতিগত জটিলতা।
বঙ্গীয় সংস্কৃত শিক্ষা পরিষদের অধীনে পরিচালিত হয় এই টোল ব্যবস্থা। আইন অনুযায়ী, এই টোল গুলির নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনার দায়িত্ব সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের। পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট। বিশ্ববিদ্যালয় দায়িত্ব গ্রহণ করতে চাইলেও ‘স্ট্যাটুট’ বা আইনের পদ্ধতিগত বাধার কারণে দায়িত্বভার নিতে পারছেন না তারা। স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট-এর তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বারবার দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানিয়েছে এই টোল গুলি।
সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী রেজিস্ট্রার মনিশংকর মণ্ডল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়কে এই টোল গুলির দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেও এখনই সেই দায়িত্বভার আমরা নিতে পারছি না পদ্ধতিগত বিলম্বের কারণে। কিন্তু খুব দ্রুত পদ্ধতিগত সমস্যা মিটিয়ে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয় দায়িত্ব নিয়ে সুষ্ঠু ভাবে টোলগুলির কার্যপ্রক্রিয়া শুরু করবে।”
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, রাজ্যে এই মূহুর্তে মোট টোলের সংখ্যা ৩২৯, এর মধ্যে সরকারি টোল রয়েছে তিনটি, সরকার দ্বারা পোষিত টোল রয়েছে বর্ধমান জেলায় দু’টি। এছাড়া নন গর্ভমেন্ট ডিএ প্রাপ্ত টোল রয়েছে ৩২৪টি।
২০১৫ সালের আগে পর্যন্ত সংস্কৃত কলেজ হিসাবে পরিচিত হলেও পরবর্তীকালে তা আইন পরিবর্তন করে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় এবং ২০১৬ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, এই সমস্ত টোল গুলির দায়িত্বভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ‘স্ট্যাটুট’ তৈরি করে পাঠায় রাজ্যের কাছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়ায় থমকে রয়েছে টোল গুলির হস্তান্তর প্রক্রিয়া।
সূত্রের খবর, ২০০৭ সালে বাম আমলে শেষ পরীক্ষা হয়েছিল এই টোল গুলিতে তারপর থেকে আর কোন প্রকার পরীক্ষা বা সার্টিফিকেট কোন কিছুই দেওয়া হয়নি।
আদ্য (মাধ্যমিক), মধ্য (উচ্চ মাধ্যমিক) এবং উপাধি (স্নাতক) এই তিনটি পর্যায়ে পঠনপাঠন হয় এই টোলগুলিতে। স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট এর তরফ থেকে এই টোলগুলির জন্য অর্থ খরচ করা হয় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা। বর্তমানে ২১৩টি টোল, যারা নতুন করে সরকারি অনুমোদনের আবেদন করেছেন বলে স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট সূত্রের খবর।