দেশের ৮৫ শতাংশ স্কুলছুট ১১টি রাজ্য থেকে। প্রতীকী ছবি।
দশম এবং দ্বাদশের ফলাফলের মূল্যায়ন করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন বোর্ডের পড়ুয়াদের রেজাল্টের পার্থক্য, পাশের হারের তারতম্য, অসম প্রতিযোগিতার মতো বিষয়গুলিকেই চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রকের একটি রিপোর্টে দেখা গেছে, দেশের পাঁচটি বোর্ড থেকেই রয়েছে ৫০ শতাংশ পড়ুয়া। এর মধ্যে রয়েছে উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গের সরকারি বোর্ড এবং সিবিএসই বোর্ড। বাকি ৫০ শতাংশ পড়ুয়া দেশের অন্যান্য ৫৫ বোর্ডের।
বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি বোর্ডের দশম এবং দ্বাদশের ফলাফলের মূল্যায়নের জন্য মোট ৮টি রাজ্যকে নিয়ে এই সমীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম, কর্নাটক, কেরাল, মণিপুর, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং তেলঙ্গানা।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, পড়ুয়াদের রেজাল্টের এই তারতম্যের জন্য দায়ী বিভিন্ন বোর্ডের সিলেবাস এবং পড়াশোনার ধরন। শিক্ষা মন্ত্রকের অভিমত, এর সুরাহা হতে পারে যদি প্রতিটি রাজ্যের দশম এবং দ্বাদশের বিভিন্ন বোর্ডকে নির্দিষ্ট একটি বোর্ডের অধীনে আনা যায়।
সরকারি এই রিপোর্টে আরও জানা গিয়েছে যে, বিভিন্ন বোর্ডের সিলেবাস বা পাঠ্যক্রম আলাদা হওয়ায় তা পড়ুয়াদের কাছে জাতীয় স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষা এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্স এবং নিট-এর মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
রিপোর্টে দেখা গেছে, মেঘালয়ে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় পাশের হার যেখানে ৫৭ শতাংশ সেখানে কেরলেতে পাশের হার ৯৯.৮৫ শতাংশ। এ ছাড়া, মোট ১১টি রাজ্য থেকেই রয়েছে দেশের ৮৫ শতাংশ স্কুলছুট। এর মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, তামিলনাড়ু, রাজস্থান, কর্নাটক, অসম, পশ্চিমবঙ্গ, হরিয়ানা এবং ছত্তীসগঢ়।
রিপোর্টে প্রকাশ, রাজ্য সরকারি বোর্ডে অকৃতকার্য পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণ স্কুলগুলিতে প্রশিক্ষিত শিক্ষকের সংখ্যা এবং স্কুল পিছু শিক্ষকের সংখ্যা খুবই কম। এর ফলে স্কুলগুলিতে নথিভুক্ত পড়ুয়ার হারও কম।
কেন্দ্রীয় স্কুল শিক্ষা সচিব সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক এই মূল্যায়নের পর দেশের সমস্ত রাজ্যের ৬০টি স্কুল বোর্ডের মূল্যায়নের ধরনকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য পদক্ষেপ করবে। এই ৬০টি বোর্ডের মধ্যে থাকবে কেন্দ্রীয় ৩টি বোর্ড— সিবিএসই, সিআইএসসিই এবং এনআইওএস। এ ছাড়াও থাকবে বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি বোর্ডগুলি। সরকারি তরফে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন বোর্ডের মধ্যে সামঞ্জস্য আনার নেপথ্যে আরও একটি কারণ হল দশম শ্রেণিতে স্কুলছুট পড়ুয়ার সংখ্যা কমানো।