ছবি: সংগৃহীত।
বাবার শেষকৃত্য সম্পন্ন করেই পরীক্ষা দিতে যেতে হয়েছিল কিশোর পড়ুয়াকে। ফলাফল প্রকাশ হতে জানা গেল ৯৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে আইএসসি-তে উত্তীর্ণ হয়েছে আর্যবীর চোপড়া। শুধু তা-ই নয়, অ্যাকাউন্টসে তার প্রাপ্ত নম্বর ৯২। ওই পরীক্ষার দিনেই বাবাকে শেষ বারের মতো দেখতে পেয়েছিল সে। এ যেন এক অসম্ভবের কাহিনি!
দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষার জন্য ক্যামাক স্ট্রিটের বাসিন্দা আর্যবীরের প্রস্তুতি ভালই ছিল। লা মার্টিনিয়ার বয়েজের পড়ুয়া তাই পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে সপরিবারে নৈশভোজ সারতে যায়। জানা ছিল না, অপেক্ষায় রয়েছে এক কঠোর বাস্তব। লা মার্টিনিয়ার গার্লস (জুনিয়র স্কুল)-এর শিক্ষিকা এবং আর্যবীরের মা সিমরন জানিয়েছেন,ওই রাতে খাওয়াদাওয়ার পরে তাঁর স্বামীর পেটে যন্ত্রণা শুরু হলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। অস্ত্রোপচার করার পরে জটিলতা আরও বাড়ে। তিন সপ্তাহ পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।
বাবার আকস্মিক মৃত্যুতে বিচলিত হলেও ১১ মার্চ শেষকৃত্য সেরেই অ্যাকাউন্টস পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল আর্যবীর। তার আগে বাবা হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন বাড়িতে মা থাকতে পারতেন না বলে ছ’বছরের ভাইয়েরও সমান তালে খেয়াল রেখেছিল সে।
ওই কিশোরের মা আরও বলেন, “এত ভাল ফলের কৃতিত্ব ওর একার। একা একাই সব নিয়ম পালন করে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে গেছে। এত কম বয়সে বাবাকে হারানোর যন্ত্রণা ভুলে ও যে সফল হয়েছে, মা হিসাবে খুব গর্ব হচ্ছে আমার।”
আর্যবীর রেজ়াল্ট পেয়ে খুশি হলেও মাঝেমধ্যেই বাবার কথা মনে করে মুষড়ে পড়ছে। তবে ভাল ফল করেই থেমে নেই এই মেধাবী পড়ুয়া। ভবিষ্যতে সে আরও এগোতে চায়। তার ইচ্ছে ব্যাচেলর ইন বিজ়নেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) নিয়ে পড়াশোনার। সেই মতো প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছে সে। পাশে রয়েছে তার মা এবং ছোট্ট ভাই।