ছবি: সংগৃহীত।
কলেজ স্তরে বেড়েছে বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্য। সঙ্গে যোগ হয়েছে স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি, পড়ুয়াদের কাছে চাকরির প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগও রয়েছে। তবে, শুরুতেই একসঙ্গে এত কিছু একসঙ্গে করতে গিয়ে খানিকটা ধন্দে পড়ে যেতে পারেন পড়ুয়ারা। কোনটা আগে করব, কী ভাবে নিজেকে চাকরির জন্য প্রস্তুত করব, সরাসরি কম বেতনের চাকরিতে কেরিয়ার শুরু করব কি না— বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এমন অজস্র প্রশ্ন মুশকিলে ফেলে তাঁদের।
এমনই কিছু সমস্যার সহজ সমাধান বাতলে দিয়েছেন সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যা বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর তপোলগ্না দাস। প্রথমেই আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, যে কোনও নতুন বিষয় নিয়ে পড়াশোনার করার সঙ্গে কী ভাবে সেই বিষয়টির ব্যাপারে সহজ ভাবে কথা বলার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। পড়াশোনার প্রয়োজনে প্রজেক্টের কাজও করতে হয়। তাই কী ভাবে সুন্দর করে বিষয়টি প্রেজেন্ট করা যেতে পারে, তা নিয়েও চর্চা করা প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন তিনি।
তবে শুধু কি পড়াশোনা বা প্রজেক্টে ভাল নম্বর পেলেই কেল্লাফতে? তপোলগ্না লিখেছেন, সৃজনশীলতার চর্চাও সমান ভাবে প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে যে কোনও ধরনের বিষয়, যার বিষয় ভাবনা পরবর্তীতে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে অনেকখানি সাহায্য করতে পারে, এমন কিছুর চর্চাও করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নিজের সক্ষমতায় বিশ্বাস রাখা খুবই প্রয়োজন।
চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা আকাশছোঁয়া, সে ক্ষেত্রে মানসিক ভাবে কতটা প্রস্তুত থাকা জরুরি? সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জানিয়েছেন, কাজের জায়গায় কিংবা পড়াশোনার ক্ষেত্রে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ এলে মানসিক চাপ বা হতাশার শিকার হয়ে পড়েন অনেকেই। এই হতাশা কাটিয়ে উঠতে আত্মবিশ্বাস সহায়ক হয়ে উঠবে। তবে, এর জন্য আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতেও শিখতে হবে।
আবেগ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তপোলগ্না লেখেন, সব বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়া কিংবা অল্পেতেই মুষড়ে পড়লে চলবে না। প্রযুক্তিনির্ভর কাজের জগতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। তাই যাঁরা অল্পেতেই ঘাবড়ে যান, তাঁদের দলবদ্ধ ভাবে কাজ করার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। একসঙ্গে কোনও একটি বিষয়ে কাজ করতে শুরু করলেই বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হবে।
বিশেষজ্ঞের মতে, কোথায় নিজের কথা বলার ধরনে আরও বদল আনা দরকার, বা গুরুত্বপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে নিজে কতটা এগিয়ে যাওয়া যাচ্ছে, দলের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ঠিক ভাবে নিজের সমস্যা বা বক্তব্য প্রকাশ করা হচ্ছে কি না— এই সবটাই জানা যায় দলবদ্ধ ভাবে কাজ করতে শুরু করলে। সব সময় নিজেকে বোঝাতে হবে যে, আমাকে চেষ্টা করতে হবে, আমাকে এগিয়ে যেতে হবে।
সর্বোপরি বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া এবং ধৈর্য ধরে কাজ শেষ করার মনোভাব রেখে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই ভবিষ্যতে যে কোনও সংস্থায় কাজের ক্ষেত্রে দ্রুত মানিয়ে নিতে খুব বেশি সমস্যায় পড়তে হবে না।