সংগৃহীত চিত্র।
উচ্চ প্রাথমিকের অনেক প্রার্থীর সুপারিশপত্র নিয়ে স্কুলে যোগদান করতে সমস্যা হচ্ছে, অভিযোগ। তাঁদের বিভিন্ন ধরনের অজুহাতও দেওয়া হচ্ছে। স্কুল ও চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগের জেরে জেরবার কমিশন, বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক ডিআই) এবং বিকাশ ভবন।
মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “আমরা ডিআইদের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রে যে শিক্ষকেরা স্কুলে যোগদান করতে যাচ্ছেন, তাঁদের যেন কোনও সমস্যা না হয়। এর পরেও যদি ডিআইরা মনে করেন যে, দফতরের এ নিয়ে কোনও নির্দেশিকা লাগবে, তা হলে সেই নির্দেশিকাও পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”
শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হল, স্কুল এবং ডিআইদের কী করতে হবে। এর আগে স্কুল কমিশনের পক্ষ থেকে ডিআইদের চিঠি লেখা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও সমস্যা থেকে গিয়েছিল।
এমন বহু স্কুলই রয়েছে, যেখানে ম্যানেজিং কমিটি বা পরিচালন কমিটির মেয়াদ ফুরিয়েছে। যার ফলে চাকরিপ্রার্থীরা যোগদান করতে গেলে তাঁদের নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে দ্রুত প্রশাসক নিয়োগ করে শিক্ষার্থীদের যোগদান করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক জেলা স্কুল পরিদর্শক বা ডিআইকে জানাবেন। কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশনের অনুমতি নিয়ে ডিআই ওই প্রার্থীকে স্কলে যোগদান করাবেন।
কিছু দিন আগে মালদহ জেলার ডিআই চাকরিপ্রার্থীদের স্কুলে যোগদানের সময় তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড বা মার্কশিট নতুন করে চেয়েছিলেন। যার ফলে হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল প্রার্থীদের। কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কমিশনের ভেরিফিকেশনের পর এই ধরনের হয়রানি বরদাস্ত করা যাবে না।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিয়োগপত্র দেওয়ার অনুমোদন পেয়েছে ২০১৮ সাল থেকে। বর্তমানে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হচ্ছে ২০১৬ সালের বিধি মেনে। বেশ কিছু স্কুল এই বিধি সম্বন্ধে অবহিত না হওয়ার ফলে নিয়োগপত্র দিতে চাইছিল না। তাই বিজ্ঞপ্তিতে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে, পুরনো নিয়ম মেনে নিয়োগ করা হচ্ছে, তাই এ ক্ষেত্রে কোনও বাধা সৃষ্টি করা যাবে না।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে যেখানে সব তথ্য যাচাই করে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে, সেখানে ছোটখাটো বানান ভুল, পিন কোড ভুল থাকলে তার জন্য চাকরিপ্রার্থীদের হয়রানি করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলি সংশোধনের জন্য দফতর বা কমিশনকে জানানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডিআইদের।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নবনির্মিত স্কুলে প্রশাসক না থাকায় সমস্যায় পড়েছেন প্রার্থীরা। আবার অনেক স্কুলে শিক্ষক যোগ দিতে গিয়ে দেখেছেন, সেই স্কুলে আগেই বদলির মাধ্যমে ওই বিষয়ে অন্য শিক্ষক একই রোস্টারে রয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কমিশনের নির্দেশে ডিআইদের স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, দ্রুত এই বিষয়টি সমাধান করে নিয়োগ করতে হবে।
মোট ৯ দফা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেখানে শেষ দু'দফায় স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনও জেনারেল প্রার্থী যাতে রিজ়ার্ভ ক্যাটেগরিতে চাকরি না পান, সেই বিষয়টি ডিআইকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
কমিশন সূত্রের খবর, ৭০ জনের মতো চাকরিপ্রার্থী নিয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে ২৯ জনের সমাধান করা হয়েছে। আরও চার জনের সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হবে।