তদন্ত কমিটি গঠন করে এই বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আন্দোলনের নামে অধ্যাপকদের হেনস্থা, তাঁদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাকে প্রশ্রয় দিতে নারাজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এ বার তদন্ত কমিটি গঠন করে এই বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে। তিন সদস্যের কমিটি সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করে একটি রিপোর্ট তৈরি করবে, যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
মঙ্গলবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তের নির্দেশ অনুসারে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই বিষয়ে আগেই বলা হয়েছিল। এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা সুনিশ্চিত করতেই এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই বিষয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বিষয়ে কোনও বক্তব্য থাকলে তা তদন্তের আওতায় আনা হবে। সেই মতোই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে, ঘরে তালা দিয়ে দেওয়া বা অধ্যাপকদের হেনস্থা নিয়ে আগেও আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি, এখনও সেই বক্তব্যেই আমরা অনড় থাকছি।”
চলতি মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগের নম্বর বিতর্ক সংবাদ শিরোনামে। বিভাগের অধ্যাপকদের বিরুদ্ধেই খাতা না দেখে নম্বর বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পড়ুয়ারা দফায় দফায় বিক্ষোভ আন্দোলনও করছেন। এরই মাঝে নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহের সোমবার ওই বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান সান্ত্বন চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা তালা ঝুলিয়ে দেন। পড়ুয়াদের অভিযোগ, তিনি দায়িত্বে থাকাকালীনই খাতা দেখা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। খাতা না দেখে নম্বর বসানোর অভিযোগ রয়েছে অধ্যাপক অভিষেক দাসের বিরুদ্ধেও। তাঁর ঘরেও একই ভাবে তালা ঝোলানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
যদিও পড়ুয়াদের আনা অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উল্লিখিত অধ্যাপকদের শোকজ় করেছে। চলতি সপ্তাহের শুক্রবারের মধ্যে তার জবাব দিতে হবে দু’জনকেই। তবে, অধ্যাপকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে পদক্ষেপ করলেও তাঁদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন করেননি কর্তৃপক্ষ। জুটা-র তরফে ছাত্রছাত্রীদের এই আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার উপাচার্যকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠনকে সম্পূর্ণ রূপে বেসামাল করে তোলাই আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্য। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী দিনে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কেও তার সার্বিক প্রভাব পড়তে পারে। তার পরেই উপাচার্যের বিবৃতিতে জানানো হয়, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।