সংগৃহীত চিত্র।
দু’বছর পরে প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিকের পড়ুয়াদের জন্য মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের ঘোষণার পরে এ বার রাজ্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল, কেন্দ্রের বর্ধিত অর্থের মধ্যে কত টাকা মিড-ডে মিলের জন্য ব্যয় করবে তারা। চলতি মাস থেকেই এই বরাদ্দ অর্থ খরচা করা হবে। মিড-ডে মিলের জন্য এ বার প্রত্যেক মাসে রাজ্যের খরচ হবে ১৮ কোটি ৩৩ লক্ষ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকা।
গত ২৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছিল, পড়ুয়াদের জন্য মিড-ডে মিলের বরাদ্দ প্রাথমিকে ৭৪ পয়সা এবং উচ্চ প্রাথমিকে এক টাকা ১২ পয়সা করা হচ্ছে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মাথাপিছু মিড-ডে মিলের বরাদ্দ হল ছ’টাকা ১৯ পয়সা। যার মধ্যে কেন্দ্র দেবে তিন টাকা ৭১ পয়সা। এর পরে সোমবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর জানিয়েছে, তারা দেবে মাথাপিছু দু’টাকা ৪৮ পয়সা।
উচ্চ প্রাথমিক অর্থাৎ ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের মাথাপিছু বরাদ্দ হয়েছে ন’টাকা টাকা ২৯ পয়সা। এর মধ্যে কেন্দ্র দেবে পাঁচ টাকা ৫৭ পয়সা এবং রাজ্য দেবে ৩ টাকা ৭২ পয়সা।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “পিএম পোষণ প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধির কেন্দ্রীয় নোটিসের ভিত্তিতে রাজ্য ম্যাচিং অর্ডার প্রকাশ করেছে। তবে কেন্দ্রের বঞ্চনার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকার নিজের তহবিল থেকে অতিরিক্ত ব্যয় করছে। যেমন, আবাস যোজনা-সহ বেশ কিছু প্রকল্পে। মিড-ডে মিলের মতো বিষয়ে রাজ্য কেন অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দ করতে পারল না? এতে তো কোনও বাধা ছিল না।”
প্রাথমিক আগে বরাদ্দ ছিল পাঁচ টাকা ৪৫ পয়সা এবং উচ্চ প্রাথমিকে আট টাকা ১৭ পয়সা। অর্থাৎ প্রাথমিকে বরাদ্দ বাড়ল ৭৪ পয়সা এবং উচ্চ প্রাথমিকে বরাদ্দ বাড়ল এক টাকা ১২ পয়সা। এখানেই প্রশ্ন শিক্ষক মহলের প্রশ্ন, এই বৃদ্ধিতে পড়ুয়াদের পাতে কি আলাদা কোনও পুষ্টিকর খাবার তুলে দেওয়া সম্ভব?
প্রধান শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অন্যান্য রাজ্যগুলি মিড-ডে মিল ছাড়াও সকালের জলখাবারের ব্যবস্থা করেছে বাচ্চাদের জন্য। আমরা চাই রাজ্য সরকারও তার সীমিত ক্ষমতার মধ্যে মিড-ডে মিলকে গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়গুলি দেখে। না হলে যৎসামান্য টাকায় পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়।”
উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র,পঞ্জাব, দিল্লি এবং কেরলের মতো রাজ্যগুলি মিড-ডে মিলের অধীনে সকালের জলখাবারের ব্যবস্থা করেছে। শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, এই সমস্ত রাজ্য যদি তা পারে, তবে বাংলা কেন পারবে না।