ভাটপাড়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে অপর্ণা সেন। ছবি: পিটিআই।
দিশাহারা দশা যেন সাধারণ নাগরিকের। কে ভুল, কে ঠিক, বোঝার উপায় নেই, সময়ও নেই। সবাই নিজের নিজের প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত। ভয়ঙ্কর হানাহানি, বোমা-গুলি, রক্তপাত, মৃত্যুর মিছিল— অনর্গল হিংসায় ভীত সন্ত্রস্ত ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া। শুধু ওই এলাকাই বা কেন, রাজ্যের কোন প্রান্ত থেকে এই হানাহানির খবর আসছে না? কিন্তু একটু খেয়াল করে দেখুন, প্রতাপশালীদের সংঘাতে প্রাণ যাচ্ছে শুধু উলুখাগড়ারই।
সন্ত্রস্ত, রক্তাক্ত, হানাহানিতে অবসন্ন জনপদটার কথা শুনতে গেলেন বিশিষ্টজনেরা। আক্রান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কথা শুনলেন তাঁরা, বেদনার শরিক হওয়ার চেষ্টা করলেন। কতটা পারলেন, কতটা পারলেন না, সে অন্য প্রশ্ন। কিন্তু বিশিষ্ট নাগরিক সমাজের তরফ থেকে যে উপলব্ধির কথা অপর্ণা সেন শোনালেন, তার একটা বাক্যই যেন আপ্তবাক্য হয়ে ধরা দিল। দুই রাজনৈতিক দলের প্রবল দাপাদাপির মাঝে পিষে যাচ্ছেন সাধারণ নাগরিক— বিশিষ্টদের উপলব্ধি এটাই। এবং এটাই সব কথার সারকথা আজ ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ায়, সারকথা রাজ্যের অন্য সব সন্ত্রস্ত প্রান্তে।
এই হানাহানি আর চলতে দেওয়া যায় না। অনর্গল রক্তস্রোত আর সহ্য করা যাচ্ছে না। কোনও একটা দিকে আঙুল তুলে লাভ নেই। কারও দোষ হয়ত দৃশ্যতই বেশি, কারও কম। কিন্তু সব পক্ষকেই এখন সমান ভাবে দায়িত্ব নিতে হবে, প্রাণঘাতী হানাহানিতে এই মুহূর্তে পূর্ণচ্ছেদ ফেলতে হবে। রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক নেতৃত্বের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হলে ভাল। যদি সেই উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তা হলে আমাদেরই উদ্যোগী হতে হবে, সাধারণ মানুষকেই জোট বাঁধতে হবে। আবার বলছি, খেয়াল করে দেখুন, এই নিরন্তর রক্তক্ষয়ী সংঘাতের দুই প্রান্তে দুই রাজনৈতিক দল আছে ঠিকই। কিন্তু মাঝের বধ্যভূমিটায় রয়েছেন সাধারণের চেয়েও সাধারণ নাগরকিরা। মৃতদেহগুলোর মাথার কাছে এবং পায়ের কাছে যুযুধান দুই প্রতাপশালী দাঁড়িয়ে থাকছেন। কিন্তু মৃতদেহটা সাধারণ নাগরিকের হচ্ছে।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুন: ‘জয় শ্রীরাম’ নিয়ে সংঘর্ষ রুখতে পুলিশের গুলি, জখম বিজেপি কর্মী, রণক্ষেত্র গুড়াপ
আমাদের বুঝতেই হবে, এই হানাহানি আমাদের স্বার্থে নয়, এই মৃত্যু উপত্যকা আমাদের দেশ নয়। না হলে এই সাংঘাতিক ধ্বংসলীলার হাত থেকে আমাদের মুক্তি নেই।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।