Kho Kho

অবহেলিত

প্রতীক ওয়াইকর, প্রিয়াঙ্কা ইঙ্গলরা- এই দুই খেলোয়াড়ের নেতৃত্বে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী খো খো বিশ্বকাপের পুরুষ ও মহিলাদের বিভাগে খেতাব জয় করল ভারত।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:০০
Share:

দেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে বিরাট কোহলি বা স্মৃতি মন্ধানা-র যে জনপ্রিয়তা, তার ধারেকাছেও থাকবে না প্রতীক ওয়াইকর, প্রিয়াঙ্কা ইঙ্গলরা। অথচ, এই দেশের মাটিতেই সম্প্রতি এক বিরল কৃতিত্ব অর্জন করলেন তাঁরা। এই দুই খেলোয়াড়ের নেতৃত্বে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী খো খো বিশ্বকাপের পুরুষ ও মহিলাদের বিভাগে খেতাব জয় করল ভারত। ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন পরিচালিত এই প্রতিযোগিতায় সারা বিশ্ব থেকে পুরুষদের বিভাগে মোট ২০টি ও মহিলাদের ক্ষেত্রে ১৯টি দল অংশগ্রহণ করেছিল। ভারত ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটির কাছে ২০৩৬ সালের অলিম্পিক্স পরিচালনা করার আগ্রহ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। আবেদন গৃহীত হলে খো খো-সহ আরও ছ’টি খেলাকে প্রতিযোগিতার অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুব কল্যাণ এবং ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয়। শুধু তা-ই নয়, আগামী দিনে এশিয়ান গেমস-এও এই খেলাটিকে যুক্ত করতে আগ্রহী তাঁরা।

Advertisement

চিরকালই খো খো খোলা জায়গায় খেলা হয়ে এলেও, ২০২২ সালে চালু হওয়া বিপণন-কেন্দ্রিক ‘আল্টিমেট খো খো লিগ’ এই খেলাকে চার দেওয়ালের মধ্যে নিয়ে আসে। ইন্ডিয়ান সুপার লিগ ফুটবল ও প্রো-কবাডি লিগ-এর পরে ক্রিকেটের বাইরে এ দেশের টিভি দর্শকদের কাছে এটিই তৃতীয় জনপ্রিয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। মাঠ থেকে অন্দরে প্রত্যাবর্তনই এই খেলার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে বলে মনে করেন অনেকে। প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালে বেজিং এশিয়ান গেমস-এ প্রথম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরে সমগ্র এশিয়া ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এটি এতটাই জনপ্রিয়তা লাভ করে যে, ২০১৮ সালের জাকার্তা এশিয়াড-এর পুরুষ ও মহিলা দুই বিভাগেই ইরানের কাছে স্বর্ণপদক হারাতে হয় ভারতকে। আজ আন্তর্জাতিক মহলে কবাডির মতো দেশীয় খেলার জনপ্রিয়তার সূত্রেই খো খো-র ক্ষেত্রেও হাল ছাড়তে রাজি নন খেলোয়াড় তথা অনুগামীরা। বলা বাহুল্য, খো খো-র দ্রুত-গতি অথচ ন্যূনতম বিনিয়োগ, পরিকাঠামো এবং সরঞ্জামের চাহিদা, আমেরিকা, জার্মানি, ব্রাজ়িল-এর মতো বহু দেশকে তাদের মাটিতে এই খেলার প্রচারে আকৃষ্ট করছে।

তবে গত বছর প্যারিস অলিম্পিক্সে ভারতের নিরাশাজনক পারফরম্যান্স স্পষ্ট করেছিল, এ দেশে আঞ্চলিক খেলাগুলির পরিস্থিতি কী। গণমাধ্যমে প্রচার, স্পনসরশিপ এবং জনপ্রিয়তার খাতিরে নিঃসন্দেহে ক্রিকেটের সঙ্গে সেগুলি এখনও পাল্লা দিয়ে উঠতে পারেনি। সেই সঙ্গে প্রশিক্ষণের অভাব, পরিকাঠামোগত সমস্যা ও বাণিজ্যিকীকরণের অনীহা আঞ্চলিক খেলাগুলির উন্নতির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ২০২৭ সালে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে খো খো বিশ্বকাপ হওয়ার কথা ইতিমধ্যেই ঘোষিত। ক্রীড়ামন্ত্রী খোদ যখন খো খো-কে এশিয়াড এবং অলিম্পিক্সে অন্তর্ভুক্ত করার কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছার কথা জনসমক্ষে ব্যক্ত করেছেন, তখন সরকারের কি উচিত নয় আঞ্চলিক খেলাগুলির উন্নতিসাধনে আরও উদ্যোগী হওয়া? দেশে বিবিধ আঞ্চলিক খেলাধুলোর প্রসারের খাতিরে ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রকল্প চালু করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। গত কেন্দ্রীয় বাজেটে এর জন্য ধার্য হয় ৯০০ কোটি টাকা। এই বিপুল অর্থ আদৌ খেলাধুলোর সামগ্রিক উন্নয়নে কাজে আসছে কি না, সময় এসেছে তা খতিয়ে দেখার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement