নির্বাচনে হারের পর মনে করা হয়েছিল ঋষি সুনক ওয়েস্টমিনস্টার-এর পদও ছাড়বেন ও ক্যালিফোর্নিয়ার প্রথম বিমান ধরবেন। গুঞ্জন ছিল, মেয়েদের স্কুলের ব্যবস্থাও পাকা। কিন্তু, ঋষি মনে হয় কিছু দিন ব্রিটেনেই থাকবেন। স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সঙ্গে নিজেদের নামে দফতর খুলতে চলেছেন, সেটি সমাজকল্যাণে কাজ করবে, সম্ভবত শিক্ষা ও প্রযুক্তি নিয়ে। দু’জনেরই আগ্রহ প্রযুক্তিতে, ঋষি কৃত্রিম মেধার প্রতিও আগ্রহান্বিত। দু’জনের সম্পত্তির পরিমাণ ৫০ কোটি পাউন্ড, সেই অর্থেই দফতর হবে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বরাদ্দ বাৎসরিক ১১৫০০০ পাউন্ডও ছেড়েছেন সুনক, এমপি-র বেতনটুকুই নেবেন। আগেও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীরা নিজস্ব দফতর খুলেছেন। যেমন ‘টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউট ফর সোশ্যাল চেঞ্জ’ সারা বিশ্বের নেতাদের নীতি নির্ধারণে পরামর্শ দেয়। ‘দ্য অফিস অব সারা অ্যান্ড গর্ডন ব্রাউন’ শিক্ষাক্ষেত্র-সহ জনজীবনের নানা কাজের সঙ্গে জড়িত।
দম্পতি: স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সঙ্গে ঋষি সুনক।
অভিযোগে বিদ্ধ
শেখ হাসিনার সঙ্গে আত্মীয়তার জেরে শিরোনামে তাঁর বোনঝি— লেবার এমপি ও অর্থসচিব, ৪২ বছরের টিউলিপ সিদ্দিক। ২০১৫ থেকে হ্যামস্টেডের এমপি তিনি। এখন দুর্নীতি ও আওয়ামী লীগের সমর্থকদের থেকে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। টিউলিপ নাকি হ্যামস্টেডের যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, ২০০৯-এ সেটি তাঁর বোন আজ়মিনাকে দেন মইন গনি। এই বাংলাদেশি আইনজীবী ছিলেন হাসিনা সরকারের প্রতিনিধি। আজ়মিনা ’২১-এ ফ্ল্যাটটি সাড়ে ছ’লাখ পাউন্ডে বেচেছেন। ২০০৪-এ কিংস ক্রসে নাকি আর একটি ফ্ল্যাট টিউলিপকে দেন হাসিনার সহযোগী আবদুল মোতালিফ। সেটি টিউলিপ ভাড়া দিয়েছেন। টিউলিপের বর্তমান ঠিকানার মালিক আওয়ামী লীগের ব্রিটেন শাখার সদস্য আবদুল করিম নাজ়িম। টিউলিপ ও তাঁর স্বামী ক্রিশ্চিয়ান পার্সির দাবি, তাঁরা বাজারদর অনুযায়ীই নাজ়িমকে ভাড়া দিয়েছেন। বাংলাদেশের দুর্নীতিদমন কমিশনের তালিকাতেও টিউলিপ। তাঁর পরিবার নাকি বাংলাদেশের পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে বিপুল তছরুপ করেছে। টিউলিপ নাকি ২০১৩-য় রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে দালালকে সাহায্য করে ঘুষ নেন, ফলে বাংলাদেশের নতুন পারমাণবিক শক্তিকেন্দ্রের দাম চড়ে যায়। ক্রেমলিনের চুক্তি স্বাক্ষরে হাসিনা ও পুতিনের পাশে তাঁর ছবি রয়েছে! টিউলিপ বলেছেন, পরিবারের সদস্য হিসাবে মাসির পাশে থাকতে গিয়েছিলেন। হাসিনার পতনের পর তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে নিশ্চুপ। এখন বিতর্কের পর তাঁর দাবি, তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাধারণ উপদেষ্টা। বলছেন, কোনও অন্যায় করেননি। স্টার্মার বলছেন, টিউলিপের পাশে আছেন। কত দিন, সে প্রশ্ন অবশ্য থাকছে।
অস্কারের দৌড়ে
ভারতের প্রতিনিধি লাপাতা লেডিজ় ছিটকে গেলেও অস্কারের বিদেশি ভাষার ছবির বিভাগের শর্টলিস্টে রয়েছে আর এক হিন্দি সিনেমা সন্তোষ। ইন্দো-ব্রিটিশ যৌথ প্রযোজনার ছবিটি ব্রিটেনের প্রতিনিধিত্ব করছে। পরিচালক ব্রিটিশ এশীয় সন্ধ্যা সুরি। উত্তর ভারতের গ্রামাঞ্চলে প্রয়াত স্বামীর পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পান সন্তোষ। এক দলিত মেয়ের হত্যার তদন্ত করছেন। দুর্নীতি, জাতপাত ও সাম্প্রদায়িক বিভাজন ধরা পড়েছে ছবিটিতে। অপরাধ ও পুলিশি দুনিয়ায় বিচরণ করতে করতে সিস্টেমের অংশ হয়ে যাওয়া সন্তোষের ভূমিকায় প্রশংসিত সাহানা গোস্বামী। কান ও লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি প্রদর্শিত, মুক্তি পাবে মার্চে। বিশ্বের সামনে গ্রামীণ ভারতকে তুলে ধরবে ছবিটি। গত বছর ইহুদি নিধন বিষয়ে জোনাথন গ্লেজ়ার-এর জার্মান-ভাষী ছবি দ্য জ়োন অব ইন্টারেস্ট এই বিভাগে ব্রিটেনের প্রতিনিধি ছিল। অস্কারও জিতেছিল। এ বারের অস্কার মার্চে।
দৃশ্য: সন্তোষ ছবিতে সাহানা গোস্বামী
এমন বন্ধু...
ওয়েস্টমিনস্টারে প্রচুর রাজনৈতিক গোলযোগের মধ্যে বছর শুরু হল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের প্রভাব ব্রিটিশ রাজনীতিতে। ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ ইলন মাস্ক লেবার দল ও কিয়ের স্টার্মারকে বিদ্ধ করছেন। ইঙ্গিত দিয়েছিলেন নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বাধীন দক্ষিণপন্থী অভিবাসন বিরোধী রিফর্ম পার্টিকে অর্থ জোগাবেন। গর্বিত ফারাজ সমর্থকদের প্রধানমন্ত্রিত্বের স্বপ্ন উস্কে দিয়েছিলেন। এক রাতেই মাস্ক ভোল পাল্টে সমাজমাধ্যমে লিখলেন দলের ভাল নেতা চাই, ফারাজ তা নন। ট্রাম্প, মাস্ককে দারুণ বন্ধু দাবি করে সমাজমাধ্যমে একত্র ছবি দিচ্ছিলেন ফারাজ, তিনি বিব্রত হয়ে বলেছেন, মাস্ক ভুল বলছেন। রাজনীতিতে এক দিনও বড় দীর্ঘ সময়।