London Diary

লন্ডন ডায়েরি: রবি ঠাকুরের ‘বিশ্বভরা প্রাণ’-এ মাতল লন্ডন

রবীন্দ্রনাথের অন্তর্জীবন-অন্তঃচেতনা সম্পর্কে জানালেন, কবি চেতনা থেকে উপচেতনাকে স্বতন্ত্র রাখতেন।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৪ ০৮:২২
Share:

—ফাইল চিত্র।

স্কটিশ সেন্টার অব টেগোর স্টাডিজ়-এর ডিরেক্টর, অধ্যাপিকা-লেখক বাসবী ফ্রেজ়ারকে লন্ডনের ঠাকরে সোসাইটি রবীন্দ্রনাথের চিন্তাজগৎ ও বাস্তববাদের উপরে বক্তৃতা দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। উইলিয়াম মেকপিস ঠাকরে ও রবীন্দ্রনাথের মধ্যে তুলনা টেনে বাসবী দেখালেন, কী ভাবে তাঁরা নিজ নিজ দেশে যুগান্তকারী আন্দোলনের শরিক ও সেই সময়ের অন্যতম প্রধান লেখক হয়ে উঠেছিলেন। দু’জনেরই জন্ম কলকাতায়, পঞ্চাশ বছরের ব্যবধানে (যথাক্রমে ১৮১১ ও ১৮৬১-তে)। বাসবী জানালেন বিশ্বজনীন মানবতায় রবীন্দ্রনাথের পূর্ণ আস্থা থেকেই তাঁর দর্শনে একাত্মবোধ ও বিনিময়-ভাবনার উন্মেষ হয়, যা শান্তিনিকেতন ও শ্রীনিকেতনে তাঁর স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে দেখা গিয়েছে। রবীন্দ্রনাথের অন্তর্জীবন-অন্তঃচেতনা সম্পর্কে জানালেন, কবি চেতনা থেকে উপচেতনাকে স্বতন্ত্র রাখতেন। শ্রোতারা একমত, আজকের বিশ্বে রবীন্দ্রনাথ আগের চেয়েও বেশি প্রাসঙ্গিক। জলবায়ু নিয়ে অবিচার ও আরও নানা সঙ্ঘাতের সমাধান হয়তো এমনই কোনও সৃষ্টিশীল ও সকলকে আপন করে নেওয়ার শিক্ষাপ্রণালী, যা পৃথিবীকে একই সুতোয় বাঁধবে— দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে।

Advertisement

ঐতিহ্য: রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আলোচনায় বাসবী ফ্রেজ়ার, ডান দিকে বাংলার তৈলচিত্র।

তিন বিদ্রোহী

কালোপেড়ে সাদা থান পরিহিতা বাঙালি বিধবাকে লাল ওষ্ঠরঞ্জনী ও দুলে সাজিয়ে এঁকেছিলেন যামিনী রায়। সমাজের বিরুদ্ধে বিপ্লবের চোরাস্রোত বইয়ে দিয়েছিলেন যেন। আরও ১৫০ ছবির সঙ্গে সেই ছবিটি সাজানো স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ়-এর ব্রুনেই গ্যালারির ‘পেন্টিং ফ্রিডম: ইন্ডিয়ান মডার্নিজ়ম অ্যান্ড ইটস থ্রি রিবেলস’ প্রদর্শনীতে। এই তিন ‘বিদ্রোহী’ যামিনী রায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও হেমেন মজুমদার। শিল্পের পাশ্চাত্য ধারণা এবং ভারতের ৩০০০ বছরের সমৃদ্ধশালী শিল্প ঐতিহ্যের থেকে সরে এসে কী ভাবে আধুনিক ভারতের শিল্পের প্রতিনিধিত্ব করা যায়, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। প্রদর্শনীতে দেখা গেল বাংলার শুরুর দিককার তৈলচিত্র, আছে কালীঘাটের পটচিত্র, অলঙ্করণ। ফলে, ১৮৭০-১৯৫০ সময়পর্বের বাংলার শিল্পের নিদর্শন এই প্রথম লন্ডনে বড় প্রদর্শনীতে দেখা গেল। প্রদর্শনীতে ব্যাখ্যা রয়েছে, যামিনী রায় কী ভাবে কালীঘাটের পট ও বাংলার প্রচলিত তৈলচিত্র থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে জারিত করেছিলেন স্বতন্ত্র শৈলীতে। দুর্গা-গণেশের ছবি ছাড়াও তিনি সাঁওতালদের অবয়বও ফুটিয়ে তুলেছেন। সেই প্রথম জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষ বাংলার শক্তির প্রতিভূ রূপে চিত্রিত হয়েছিলেন।

Advertisement

পাহাড়চূড়ায় মৃত্যুফাঁদ

১৯২৪-এ জর্জ ম্যালরি ও অ্যান্ড্রু আরভিন এভারেস্টের চুড়োয় পৌঁছেছিলেন কি না— তা রহস্যই থেকে গিয়েছে। ৮ জুন, দুপুরে শৃঙ্গের ১৫০-২৫০ মিটার নীচে, উত্তর-পূর্ব গিরিশিরায় তাঁদের শেষ দেখা যায়। শৃঙ্গ থেকে ৬৯০ মিটার দূরে ম্যালরির দেহ মিলেছিল ১৯৯৯-এ। আরভিনের দেহ এখনও মেলেনি। গ্রাহাম হয়ল্যান্ডের বই ফার্স্ট অন এভারেস্ট নিশ্চিত করেছে, তাঁরা চূড়ায় উঠতে পারেননি। হঠাৎ পরিপার্শ্বের বাতাসের চাপ কমে, হাইপক্সিয়ায় মৃত্যু হয়েছিল দু’জনেরই। লেখক অভিযানের আবহাওয়াবিদের কিছু নোট খুঁজে বার করেছেন। তাতে ৮-৯ জুন নাগাদ হঠাৎ পরিপার্শ্বের বাতাসের চাপ কমে যাওয়ার বিষয়টি নথিবদ্ধ আছে, যে সময় অভিযাত্রীদের মৃত্যু হয় বলে ধারণা। বায়ুচাপ কমলে বাতাসে অক্সিজেনের ঘনত্বও কমে, হাইপক্সিয়ার সম্ভাবনা বাড়ে, তার থেকেই আসে মানসিক বিভ্রম ও মৃত্যু। তাঁদের শেষ অভিযানের শতবর্ষে প্রকাশিত হতে চলেছে বইটি। লেখক জানিয়েছেন, দু’জনেই অনুপযুক্ত পোশাক পরেছিলেন, বইছিলেন অক্সিজেনের ভারী বোতল। চাপ কমতেই ‘মৃত্যুফাঁদ’-এ ঢুকে যান তাঁরা। ১৯৯৬-এও এভারেস্টের ঝড় আট পর্বতারোহীর প্রাণ কাড়ে, বাতাসে অক্সিজেন কমে যাওয়ার কারণে। ১৯৫৩-য় এভারেস্ট জয়ের সময়ও এডমন্ড হিলারি, তেনজ়িং নোরগে ম্যালরি-আরভিনের চিহ্ন খুঁজেছিলেন। নতুন অনুসন্ধান এত দিনের রহস্যে ইতি টানল।

অভিযাত্রী: ১৯২৪-এর দলের কয়েক জন। উইকিমিডিয়া কমন্স।

সুনকের হুঁশিয়ারি

প্রায় ৫০০ আসন খুইয়ে স্থানীয় নির্বাচনে কনজ়ার্ভেটিভ পার্টি জোর ধাক্কা খেলেও হাল ছাড়ছেন না ঋষি সুনক। তিনি সতর্ক করেছেন, সাধারণ নির্বাচনে ত্রিশঙ্কু পার্লামেন্ট হলে ডাউনিং স্ট্রিটে কায়ার স্টার্মারকে ঠেকা দিতে পাঠানো হতে পারে। লেবার পার্টির বিরুদ্ধে লড়তে নিজের দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে অনুরোধও করেছেন। কিন্তু, একটু দেরি হয়ে গেল কি? ভোটের বাকি আর ছ’মাস, টোরিরা আগামী নেতা কাকে করবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছেন!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement