London Diary

লন্ডন ডায়েরি: ‘ইয়ং পোয়েট লরিয়েট’ হলেন বাঙালি কিশোরী

শিশুদের বইতে, সঙ্কলনে তাঁর কবিতা ছাপা হয়েছে। কবিতা স্থান পেয়েছে হাউস অব লর্ডস, বিবিসি রেডিয়ো লেস্টার আর ন্যাচরাল হিস্ট্রি মিউজ়িয়ামেও।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২২ ০৫:৫৮
Share:

লন্ডন ডায়েরি।

প্রথম বাঙালি হিসেবে বার্মিংহামের ‘ইয়ং পোয়েট লরিয়েট’-এর শিরোপা পেয়েছেন ১৬ বছরের আয়োনা মণ্ডল। প্রতিযোগিতায় আয়োনা একটি কবিতা লেখেন বার্মিংহামের পার্ক নিয়ে, অন্যটি টেনিস খেলোয়াড় এমা রাদুকানুকে নিয়ে। বার্মিংহামের গ্রন্থাগারে ইন্টারভিউয়ের পর পাঁচ জন শর্টলিস্টেড প্রতিযোগীর মধ্যে তাঁকে বেছে নেওয়া হয়। জাতীয় কবিতা দিবসে বার্মিংহাম সাহিত্য উৎসবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। পরে শেক্সপিয়র’স গ্লোবে এডওয়ার্ড টমাসের ‘অ্যাডলস্ট্রপ’ পাঠ করেন তিনি। ১৯১৪-য় কবির এক রেলসফরে ইংল্যান্ডের গ্রীষ্মের বর্ণনাসৌন্দর্যের জন্যই কবিতাটি বেছেছিলেন।

Advertisement

শিশুদের বইতে, সঙ্কলনে তাঁর কবিতা ছাপা হয়েছে। কবিতা স্থান পেয়েছে হাউস অব লর্ডস, বিবিসি রেডিয়ো লেস্টার আর ন্যাচরাল হিস্ট্রি মিউজ়িয়ামেও। আয়োনার বাবা পার্থ মণ্ডল ও মা ইলিকা ২০০০-এ পশ্চিমবঙ্গ থেকে ব্রিটেনে চলে আসেন। আয়োনা এই বাঙালি পরিচয়ে গর্বিত। ২০১৯ ও ২০২১-এ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর বাংলা কবিতা অনুবাদ করে স্টিফেন স্পেন্ডার পোয়েট্রি ট্রান্সলেশন পুরস্কার পেয়েছেন। ছোটদের পত্রিকায় তাঁর লেখা বাংলা ছোট গল্প ছাপা হয়েছে। ২০২৪ পর্যন্ত তিনি পোয়েট লরিয়েট থাকবেন। এ সময় নতুন কবিতা রচনা ও কবিতার প্রচার করবেন। বার্মিংহামের মানুষদের মধ্যে দক্ষিণ এশীয় কবিতার সম্ভার ছড়িয়ে দিতে তিনি সবিশেষ আগ্রহী।

প্রতিভা: আয়োনা মণ্ডল।

বাকিংহামের দর্পচূর্ণ

Advertisement

লন্ডনের জনপ্রিয়তম পর্যটনকেন্দ্র বাকিংহাম প্যালেসে থাকছেন না রাজা তৃতীয় চার্লস। চার্লস-ক্যামিলা আগের মতোই ক্ল্যারেন্স হাউসেই থাকবেন। এই বাড়িটি মলে, বাকিংহাম থেকে কিছু ক্ষণের হাঁটা পথ। আগে এখানে রানির মা থাকতেন, তাঁর মৃত্যুর পর চার্লস-ক্যামিলা এটি ব্যবহার করতে শুরু করেন। তবে, বাকিংহামকে রাজা অফিস ও সদর দফতর হিসেবে ব্যবহার করবেন। সরকারি অনুষ্ঠান, রাষ্ট্রনেতাদের সফর, আতিথেয়তা এখানেই হবে। প্রাসাদ পুনর্নির্মাণও চলবে, তাতে দশ বছর সময় লাগবে। রাজা ও কুইন কনসর্ট সপ্তাহে দু’দিন করে উইনসর কাসলে ও সপ্তাহান্ত সান্ড্রিংগামে কাটাবেন। রানি ভিক্টোরিয়ার আমলে, সেই ১৮৩৭ থেকে বাকিংহাম ব্রিটিশ রাজা-রানিদের সরকারি বাসস্থান। দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের রাজত্ব জুড়েই, ২০২০-র মার্চ পর্যন্ত রানির প্রধান বাসস্থান ছিল এটি। কোভিড লকডাউনে রানি উইনসরে চলে যান, পরে মধ্য লন্ডনের বসবাসই তুলে দেন। বাকিংহামে ৭৭৫টা ঘর। ১৯টি সরকারি কক্ষ, ৫২টি রাজপরিবারের ও অতিথিদের এবং ১৮৮টি কর্মীদের শয়নকক্ষ, ৯২টি অফিসঘর, ৭৮টি স্নানঘর। সরকারি ঘরগুলি প্রতি গ্রীষ্মে দর্শনার্থীদের জন্য খোলা হত। সেগুলি এখন সারা বছরই দেখতে দেবেন চার্লস। এই প্রথম বাকিংহাম ও ক্ল্যারেন্স হাউস দু’জায়গাতেই উড়বে রাজপতাকা ‘রয়্যাল স্ট্যান্ডার্ড’।

বন্ধ হল টেগোর সেন্টার

আলেকজ়ান্ডার পার্ক লাইব্রেরিতে ৩৭ বছর কাটানোর পর, ব্রিটেনের টেগোর সেন্টার বাস্তুহারা। অনুদানের জন্য আবেদন, পিটিশন, এমনকি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরবারের পরও, সেন্টারের ঝাঁপ বন্ধ হল। সব নথিপত্র, গ্রন্থাগারের বই গেল অক্সফোর্ড সেন্টার ফর হিন্দু স্টাডিজ়-এ। ব্রিটেনবাসীকে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য ও শিল্পের স্বাদ দিতে দুই বাঙালি ১৯৮৫-তে টেগোর সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। সেন্টার আলোচনাসভা, গান-বাজনা আয়োজন করত, মৌলিক লেখা ছাপাত, রবীন্দ্রনাথের আঁকা অদেখা এক ছবিও আবিষ্কার করে। ২০১১-য় লন্ডনের গর্ডন স্কোয়ারে কবিগুরুর আবক্ষ মূর্তি স্থাপিত হয়। উন্মোচন করেন যুবরাজ চার্লস। জানা গিয়েছে, সেন্টার এ বার জায়গা ভাড়া করে অনুষ্ঠান করবে। তবে টেগোর সেন্টারের রবিবাসরীয় আলোচনা ও সঙ্গীতানুষ্ঠানের অভাব অনুভব করবেন স্থানীয় বাঙালিরা।

সম্মান: রবীন্দ্রমূর্তি উন্মোচনে চার্লস

কোহিনুর ফিরবে?

ব্রিটেনের মিউজ়িয়ামগুলি লুণ্ঠিত দ্রব্যের স্বদেশে প্রত্যর্পণ সম্বন্ধীয় নীতি বোধ হয় বদলাচ্ছে। বহু দশক ধরে গ্রিস পার্থেনন থেকে নেওয়া এলগিন মার্বেলস ও নাইজেরিয়া বেনিন ব্রোঞ্জ ফেরত চাইছে। ইউনিভার্সিটি অব অ্যাবারডিন দু’টি ব্রোঞ্জ ফিরিয়েছে, অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ ২০০-রও বেশি বেনিন ব্রোঞ্জ ফেরাতে রাজি। ১৯৮৩-র জাতীয় ঐতিহ্য আইন মোতাবেক সব জাদুঘরের সামগ্রীগুলি রক্ষিত হয়। আইনটি নতুন করে লেখা যায় কি না, অনুরোধ এলে সামগ্রীগুলি ফেরানো যায় কি না— হাউস অব লর্ডসে তর্ক তুলেছেন ডেভিড ক্যামেরন সরকারের প্রাক্তন সংস্কৃতিমন্ত্রী। এতে কি টাওয়ার অব লন্ডনে রাজমুকুটের রত্নরূপে বিরাজমান কোহিনুরটির দেশে ফেরার রাস্তাটা খুলবে?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement