রাজদর্শন: বাকিংহাম প্রাসাদের বারান্দায় সপরিবার রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
যুবরাজ চার্লস বলেছেন, রাজা হলে তিনি রাজপ্রাসাদগুলিকে আরও বেশি করে সাধারণের জন্য খুলে দেবেন। ৭২ বছরের প্রিন্স অব ওয়েলস রাজা হওয়ার পর রানির মতো ঘন ঘন উইনসর কাসল ব্যবহার করতে চান না। বাকিংহাম প্যালেস, গ্লস্টারশায়ারে তাঁর বাসস্থান হাইগ্রোভ, সান্ড্রিংগাম এবং বালমোরালে তাঁর স্কটল্যান্ডের আবাসস্থল বার্কহল-এ সময় ভাগ করে থাকবেন। এখন রানি বাকিংহামকে সাপ্তাহিক দফতরের মতো ব্যবহার করেন, সপ্তাহান্তে উইনসরে যান, গ্রীষ্মে থাকেন বালমোরালে, বড়দিনে সান্ড্রিংগামে। এখনকার মতো শুধু রানির অনুপস্থিতিতেই নয়, চার্লস সারা বছরই বাকিংহাম প্রাসাদ ও বাগান জনতার জন্য খোলা রাখতে চান। যে ঘর দিয়ে হেঁটে কাচের দরজা ঠেলে বাকিংহামের বারান্দায় আসেন রাজপরিবার, সেই ঘরটি; চাইনিজ় ডাইনিং রুমে ব্রাইটন থেকে রানি ভিক্টোরিয়ার আনা চুল্লিটি; বিদেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের থাকার বেলজিয়ান সুইটটিও দেখাতে চান মানুষকে। ৭৭৫টা ঘর বাকিংহামে। অতিমারির আগে ফি-বছর প্রায় পাঁচ লাখ দর্শনার্থী হত প্রাসাদে।
চার্লস নাকি বালমোরালের মূল প্রাসাদে থাকবেন না। কাজেই তাঁর আমলে সেই প্রাসাদটিও বেশি সময় দেখতে পাবেন মানুষ। বৈঠকখানায় রানি ভিক্টোরিয়ার বিখ্যাত আর্মচেয়ারও দেখা যাবে, যাতে কারও বসার অনুমতি নেই। দ্য ক্রাউন টিভি সিরিজ়ের এক দৃশ্যে ছিল, অন্যমনস্ক ভাবে ভিক্টোরিয়ার আর্মচেয়ারে বসতে গিয়ে প্রিন্সেস মার্গারেটের কাছে ধাতানি খাচ্ছেন মার্গারেট থ্যাচার।
রাজদর্শন: বাকিংহাম প্রাসাদের বারান্দায় সপরিবার রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
জনসন-মোদী ভাইরাস
লন্ডন জুড়ে ভারত নিয়ে প্রবল অশান্তি। ভাইরাসের ভারতীয় প্রজাতির কারণে লন্ডনে লকডাউন দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে, ভারতকে বিপদ তালিকাভুক্ত করতে ও উড়ান বন্ধে গড়িমসির জন্য আঙুল উঠছে বরিস জনসনের দিকে। ইনস্টাগ্রামে চালু ট্রেন্ড #মোদীজনসনভেরিয়ান্ট, #জনসনভেরিয়ান্ট। জনসন ভাইরাসের বদলে বাণিজ্যকে গুরুত্ব দেওয়ায় নেটাগরিকরা বলেছেন, ভারতীয় স্ট্রেন বাদ দিন, এটা ‘জনসন প্রজাতি’র ভাইরাস। দ্য গার্ডিয়ান-এর ব্যঙ্গচিত্রে খাড়াই আর ভাঙা সিঁড়ির মুখে দাঁড়িয়ে জনসন হাঁক দিচ্ছেন, ‘বেরিয়ে আসতে পারেন, শুধু দেখে নামবেন।’ ছবির ডান কোণে লম্বা দাড়ি গেরুয়া বসনে নরেন্দ্র মোদী। তাঁর চার ধারের সবুজ কাঁটা-কাঁটা বলগুলিকে করোনাভাইরাসের মতোই দেখতে। পাশে বিমানবন্দরের ঢঙে সাইনবোর্ড। লেখা— ‘মোদী জেট, গেট নম্বর ৬৬৬।’ ৬৬৬ শয়তানের সংখ্যা।
বাঁশবাগানের ব্যাট
২০০ বছর ধরে ক্রিকেট ব্যাট তৈরি হচ্ছে উইলো কাঠ দিয়ে। ইংল্যান্ডে ইংলিশ উইলো আর ভারতে কাশ্মীরি উইলোর ব্যাট চলে। কিন্তু কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী ৩৩ বছরের দর্শিল শাহের প্রস্তাব, ব্যাট হোক বাঁশের। সহকর্মী বেন টিংকলার-ডেভিসের সঙ্গে তাঁর যৌথ গবেষণায় প্রকাশিত, বাঁশ সহজলভ্য, সাশ্রয়ী। উন্নয়নশীল দেশগুলি সস্তায় ব্যাট বানাতে পারবে। ক্রিকেটের বিনোদনও বাড়বে। বাঁশের ব্যাট মজবুত, ব্লেড অংশ হালকা অথচ উইলোর থেকে আঁটসাঁট। ফলে ব্যাটে লাগলেই বল ছুটবে আরও জোরে। তাইল্যান্ডের প্রাক্তন অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেটার দর্শিল জানিয়েছেন, ব্যাটসম্যানের স্বপ্ন হবে এই ব্যাট। ইয়র্কারকেও সহজেই বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দেবে এর ‘সুইট স্পট’। তবে, এমসিসির একটি শর্ত হল ব্যাটের ব্লেড কাঠেরই হতে হবে। সেখানে বাঁশ তৃণজাতীয় উদ্ভিদ। তবে দর্শিল আশাবাদী, এই ছোট্ট বদল মেনে নিয়ে বাঁশের ব্যাটকে অনুমোদন দেবে কর্তৃপক্ষ। কারণ, অধুনা ব্যাটের হাতল বেতের। তা তো এক প্রকার ঘাসই। জানতে ইচ্ছা করে, বাঁশের ব্যাট বিষয়ে কী ভাবছেন ব্যাটিং-মহারথীরা।
পরিবর্তন: বাঁশের ব্যাট নিয়ে দর্শিল শাহ।
রূপকথার ত্রাণ
হ্যারি পটারের লেখিকা জে কে রোওলিং তাঁর নতুন বই দি ইকাবগ-এর রয়্যালটি থেকে দশ লক্ষ পাউন্ড দিয়েছেন ভারতের কোভিড-ত্রাণে। খালসা এড ও ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট, ব্রিটেনের দু’টি ভারতীয় সংস্থার তহবিলে অর্থ দিয়েছেন তিনি। অতিমারির সময় দি ইকাবগ লিখেছেন রোওলিং, তাঁর ডাকে ঘরবন্দি খুদে ভক্তেরা ছবি এঁকে তাঁকে পাঠিয়েছিল। কয়েকটি তিনি বেছে নিয়েছেন বইয়ের জন্য। বিজয়ীদের মধ্যে ভারতের শিশুরাও আছে, তাদের মধ্যে তিন জনের বয়স মাত্র সাত। দি ইকাবগ কর্নিয়ুকোপিয়া রাজ্যের রূপকথা।