Letters To The Editor

লকডাউনে রোজগার বন্ধ, চিকিৎসক অমিল, ভুগছেন মানুষ

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা মনোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা মনোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ২১:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

চিঠি এক) লকডাউনের জন্য রোজগার বন্ধ, দিন কাটাব কী ভাবে?

Advertisement

আমি পেশায় টোটোচালক। প্রতিদিন টোটো চালিয়ে যা রোজগার হয়, তা দিয়ে বৃদ্ধা মা, বৌ আর সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে কোনও মতে দিন কেটে যায়।কিন্তু এখন লকডাউনের জন্য রোজগার বন্ধ। ঘরে যতটুকু সঞ্চয় ছিল, তা শেষ।এখন বাকি দিনগুলো কী ভাবে কাটাব, কি খাব, কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা।সরকারের তরফ থেকেও আমাদের মতো দিন আনা দিন খাওয়া লোকেদের জন‍্য কোনও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে না।এই পরিস্থিতিতে আমরা কোথায় যাব? আপনারা যদি এই বিষয়টি সরকারের নজরে আনেন, তাহলে বাধিত হব।

অভীক চক্রবর্তী, শ্যামনগর, উত্তর ২৪ পরগনা

Advertisement

চিঠি দুই) মৎস দফতরের মাছও কি আইসোলেশনে?

করোনা-আতঙ্কে সতর্কিত হয়ে আজ প্রায় ন’দিন হতে চলল ঘরবন্দি। বাইরের ব্যস্ত জীবনে ছন্দপতন।ঘরের কাজ ও সংবাদমাধ্যমে চোখ রেখে প্রায় সারাটা দিন কেটে যাচ্ছে।করোনার করাল গ্রাস থেকে আমাদের দেশ-সহ গোটা পৃথিবী কবে মুক্তি পাবে, তার কোন নির্দিষ্ট পূর্বাভাষ এই মুহূর্তে অন্তত নেই। স্বভাবতই ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বসে থাকি। আমিষভোজী মানুষ। বাধ্য হয়েই নিরামিষভোজী হওয়ার শত প্রচেষ্টাতে হঠাৎই গত রবিবার(২৯/৩/২০)সংবাদমাধ্যমে জানতে পারলাম যে এই কঠিন সময়েও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মৎস দফতর উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা-সহ বেশ কিছু শহরে বঙ্গ জীবনের অঙ্গ হিসেবে বাঙালির পাতে মাছ পৌঁছে দেওয়ার। অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে অর্ডার করার এক সুবর্ণ সুযোগ!এই খবরে কিছুটা আহ্লাদিত হয়ে গত ৩০মার্চ রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের অ্যাপটি ডাউনলোড করে সকাল ৮টা ৩৮ মিনিটে এক কিলো কাঁচা রুই মাছের অর্ডার (নং-FDAPPCOD158553771399949045FAA) করেছিলাম। বুকিংয়ের সময় প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলাম, ৩ ঘণ্টার মধ্যে নলবনের ঢিলছোড়া দূরত্বে আমার নির্দিষ্ট ঠিকানায় মাছটিকে পৌঁছে দেওয়া হবে। ইমেল মারফত আমাকে বিল পাঠানো হয়। একটি ফোন নম্বরও দেওয়া হয়(৯৮৭৫৬৭৬২৬৪)। কিন্তু বিধিবাম ! এই চিঠি লেখার সময় (তারিখ ৩১/০৩/২০২০)রাত ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অর্ডারটি ডেলিভারি হয়নি। ওই মোবাইল নম্বরে যতবার ফোন করা হয়, বেশির ভাগ সময়ই তা বন্ধ থাকে। ফোন যখন অল্প সময়ের জন্য খোলা থাকে, তখন বেজেই যায়, ওই নম্বরের মোবাইল ব্যবহারকারী ফোন ধরার প্রয়োজনটুকু মনে করেননা। পরিশেষে অনলাইনে অনুসন্ধান করেও অর্ডারের কোন হদিশ এখনও পর্যন্ত পাইনি।

শুধুমাত্র বর্তমানের সঙ্কটময় পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটেই নয়, বরং আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সারা বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের জন্য। প্রশ্ন এখানেই সব দফতরের কাজ কি মুখ্যমন্ত্রীকে একাই সামলাতে হবে? তবেই কি রাজ্যবাসী প্রতিশ্রুত উদ্যোগের সুবিধা পাবে? রাজ্যবাসীকে মহামারী থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য এই মুহূর্তে তাঁর নেতৃত্বে সমগ্র স্বাস্থ্য পরিষেবা,পুলিশ-প্রশাসন যেন অতন্দ্র প্রহরী!

মৎস দফতরের কাছে একটিই অনুরোধ, কোনও কাজের উদ্যোগ নিলে তা যেন সঠিক ভাবে পালিত হয়। জানিনা আমার অর্ডার দেওয়া রুই মাছটি অবশেষে আইসোলেশনে চলে গেল কিনা!

পৌলমী চট্টোপাধ্যায়, মেট্রোপলিটন, কলকাতা

চিঠি তিন) লকডাউনে চিকিৎসক অমিল, কোথায় যাব?

কোন মিথ্যে খবর সম্পর্কে জানানোর জন্য এই চিঠি লিখছি না। একটি সমস্যার জন্য এই চিঠি লিখতে বাধ্য হচ্ছি। আমার জানা নেই, কোথায় যোগাযোগ করলে এই সমস্যার সমাধান হবে।

আমার বাবা এক জন স্ট্রোকয়ের রোগী। ফলে শারীরিক ভাবে অসুস্থ হবার কারণে তাঁকে প্রায়শই ডাক্তার দেখাতে হয়। গতকাল তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় এক জন ডাক্তারবাবুকে ফোন করে দেখা করতে চাই। কিন্তু তিনি জানান যে করোনা পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে চেম্বার খোলা বা রোগী দেখা যাবে না। আর আমাদের এখানকার হাসপাতালে কোনও নিউরোলোজির ডাক্তার নেই। তাহলে কি এই পরিস্থিতিতে করোনা রোগী ছাড়া আর কারও চিকিৎসা হবে না? মানুষ তবে কোথায় যাবে? দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন। খুব অসহায় লাগছে আজ।

স্বরূপ রায় সরকার, দিনহাটা, কোচবিহার

চিঠি চার) এক বেলা খেয়ে আছি

হঠাৎ করে এই লকডাউন হওয়ায় সমস‍্যায় পড়তে হয়েছে আমাদের মতো ভিন্‌ রাজ‍্যে কাজ করতে আসা দিন আনি দিন খাই মানুষদের। আমার বাড়ি বাঁকুড়া জেলায়। এই মুহূর্তে আমরা ২৬ জন নবী মুম্বইতে রয়েছি। কোনও মতে এক বেলা করে খেয়ে বেঁচে আছি। আমাদের মধ্যে বৃদ্ধ মানুষও রয়েছেন, সবচেয়ে খারাপ লাগছে তাঁদের জন্য। দয়া করে আপনারা এবং মমতাদি কিছু ব‍্যবস্থা করুন।

প্রদীপ দাশ, নবী মুম্বই

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement