অধরা জলের সমস্যায়
২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি ছিল যে, সব এলাকায় বাড়ি বাড়ি নলবাহিত জলের মাধ্যমে পানীয় জল সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে। এর পরে ২০১৬ সালে বিধানসভা, ২০১৮-য় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০১৯ সালে লোকসভা এবং সবশেষে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। জনসাধারণের মধ্যে কিন্তু ভোটদানের উৎসাহ ছিল লক্ষণীয়। আমতার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকায় এই নলবাহিত জল পরিষেবা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেলেও এখনও আমতা-১ ব্লকের রসপুর ও উদং-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই পরিষেবা অধরা। এমন নয় যে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়নি। স্থানীয় জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, এলাকার ত্রিস্তর পঞ্চায়েত প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রস্তাবনা ও পরিকল্পনা জমা পড়লে তবেই পরিষেবা কার্যকর হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে এখন জানা যাচ্ছে যে, এই প্রকল্পের জন্য নাকি উপযুক্ত জায়গা পাওয়াযাচ্ছে না।
অন্য দিকে, আমতা বিধানসভা কেন্দ্রের আমতা-২ ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নলবাহিত জল পরিষেবা প্রায় বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গিয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি মানুষের দৈনন্দিন কাজের পরিধি বেড়েছে। আজকাল বাড়িতে অনেকেই দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য অগভীর নলকূপ স্থাপন করছেন। কিন্তু মাঝেমধ্যেই নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে। গ্রীষ্মকালে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নেমে যায়। সমস্যা তখন প্রকট হয়। জলের এই সমস্যার সমাধানের জন্য তাই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মুস্তাক আলি মণ্ডল, আমতা, হাওড়া
যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য
সম্প্রতি চেন্নাই-সাঁতরাগাছি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে সাঁতরাগাছি জংশন স্টেশনে নামি। প্রি-পেড ট্যাক্সির কাউন্টারের সামনে পৌঁছে দেখি, ইতিমধ্যেই প্রচুর লাইন পড়ে গিয়েছে। ট্যাক্সিও ছিল অপ্রতুল। কুড়ি-পঁচিশ মিনিটে মাত্র দু’-তিনটে ট্যাক্সির দর্শন মিলছিল। অথচ, সেখানে বেশ কয়েকটি অ্যাপ ক্যাব দাঁড়িয়ে থাকলেও যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিতে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া চাইছিল তারা। আমাদেরই সঙ্গে আসা অপর একটি পরিবারেরও একই দুর্দশা হয়। তাঁদের সঙ্গে এক জন রোগীও ছিলেন। এই সব ট্রেনে প্রচুর রোগী থাকেন, যাঁরা চেন্নাই বা ভেলোর থেকে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফেরেন। প্রায় সাতাশ-আটাশ ঘণ্টা দীর্ঘ ট্রেনযাত্রার পরে যদি ট্যাক্সি পাওয়ার সুনির্দিষ্ট সম্ভাবনা না থাকে, তা হলে এই সব যাত্রীর দৈহিক ও মানসিক অবস্থা কী হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।
অদূর ভবিষ্যতে হয়তো ট্রেন এবং যাত্রী সংখ্যা আরও বাড়বে এই স্টেশনগুলিতে। বাইরে থেকে চিকিৎসা করিয়ে আসা রোগী ও প্রবীণ নাগরিকদের কথা মাথায় রেখে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলিতে ছোট ছোট ব্যাটারিচালিত গাড়ি, র্যাম্প অথবা এসক্যালেটরের বন্দোবস্ত রাখলে যাত্রীদের সুবিধা হয়। একই সঙ্গে প্রয়োজন, স্টেশনগুলির বাইরে প্রচুর সংখ্যক ট্যাক্সির উপস্থিতি নিশ্চিত করা। দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য সরকার— উভয়েরই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।
অমিত কুমার চৌধুরী, কলকাতা-৭৫
প্লাস্টিক চলছেই
অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে ১ জুলাই থেকে ৭৫ মাইক্রনের কম প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে রাজ্যে। অন্যথায় বিক্রেতার সঙ্গে ক্রেতাদেরও উপর নির্দিষ্ট অঙ্কের জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। প্লাস্টিকের পাশাপাশি থার্মোকলের ব্যবহারও বন্ধ করার চিন্তাভাবনা করেছে রাজ্যের পরিবেশ দফতর। এই কারণে অন্যত্র কী প্রতিক্রিয়া হয়েছে, জানি না। তবে, দক্ষিণ দমদম পুরসভা অঞ্চলে নাগেরবাজারের অভিজ্ঞতা একেবারে সুখকর নয়। মুদি দোকান, মাছের বাজার এবং ফুলের কারবারিরা পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ নিতে না চাইলে অভয়বাণী দিচ্ছেন— ভয় নেই, কেউ কিছু বলবে না। পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ যেখানে সেখানে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। স্থানীয় কিছু জলাশয়ে পুজোর ফুল এবং অন্যান্য সামগ্রী-সহ ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ব্যতিক্রম হয়তো কিছু আছে। কিন্তু সংখ্যার হিসেবে তা সত্যিই নগণ্য।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, হয় আইনের যথাযথ প্রয়োগের ন্যূনতম প্রয়াসটুকু থাকুক, অথবা যেমন চলছিল তেমনটাই চলতে দেওয়া হোক।
মানস কুমার সেনগুপ্ত, কলকাতা-৭৪
প্রতারণার ভয়
এখন ব্যাঙ্কের চেকের মূল্য বড় অঙ্কের (ন্যূনতম এক লক্ষের বেশি) হলে, তা ক্লিয়ারিং-এর জন্য পিপিএস বা পজ়িটিভ পে সিস্টেম পদ্ধতির মাধ্যমে আগে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে গিয়ে সেই চেক-এর তথ্য, যেমন চেক-এর অঙ্ক, তারিখ, যার নামে দেওয়া হচ্ছে, তার নাম জমা দিয়ে আসতে হচ্ছে। না হলে সেই অ্যাকাউন্ট হোল্ডার-কে ব্যাঙ্কের তরফ থেকে ফোন করে জেনে নেওয়া হচ্ছে যে, সত্যিই এই চেক তিনি ইসু করেছেন কি না! গ্রাহককে ফোন করে না পেলে চেক বাউন্স করে দেওয়া এবং চেক বাউন্স চার্জও ধার্য করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থা গ্রাহক নিরাপত্তার স্বার্থেই করা হয়েছে বলে শীর্ষ ব্যাঙ্কের দাবি। কিন্তু প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। যেখানে বর্তমানে ব্যাঙ্কিং প্রতারণা প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে, প্রতিনিয়ত সংবাদপত্র, গণমাধ্যমে সতর্ক করে বলা হচ্ছে যে অসাবধানবশত মোবাইলে অচেনা কোনও লিঙ্কে ক্লিক করবেন না বা অচেনা ফোনে উত্তর দেবেন না, সেখানে পিপিএস-এর মাধ্যমে ব্যাঙ্ক কর্তৃক এই চেক-এর তথ্য সংগ্রহ একটা আতঙ্কের সৃষ্টি করছে গ্রাহকদের মনে। অন্য ভাবে কি এই পদ্ধতি সম্পন্ন করা যায় না? রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এই ব্যাপারে নতুন করে চিন্তাভাবনা করলে ভাল হয়।
তন্ময় ঘোষ, কলকাতা-৪৭
ভিটেছাড়া
সংবাদপত্র পড়ে জানতে পারলাম মেট্রো ক্ষতিগ্রস্তদের দুর্দশার কথা (‘মেট্রো-ক্ষতিগ্রস্তদের অপেক্ষার ৩ বছর’, ৩১-৮)। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য বৌবাজারে ভেঙে পড়া বাড়িগুলোর বাসিন্দাদের দুঃখের অন্ত নেই। কর্তৃপক্ষ এবং সরকার দু’বছরের মধ্যে বাড়ি করে দেওয়ার কথা দিলেও আজ তিন বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও কিছুই সম্ভব হয়নি। আসলে তাদের কাজে এবং কথায় কোনও মিল নেই। ২০০২ সালে টালিনালা সুতি খাল হয়ে গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন উত্তর বালিয়ার বুক চিরে কবি সুভাষে পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়। ব্যক্তিগত কিছু সম্পত্তি আর গোটা আট-দশ বাড়ি তারা বাজেয়াপ্ত করে। দাম ধার্য হয়েছিল কাঠা প্রতি এক লক্ষ টাকা। আর বাড়ির মূল্য ৪৯৬ টাকা প্রতি স্কোয়ার ফুট— জলের দামে। তার জ্বলন্ত ইতিহাস এখানকার পথে বসা মানুষগুলো। সার্বিক উন্নতি ও জনসাধারণের কথা ভেবে যাঁরা সম্পত্তি সমর্পণ করেছেন, তাঁরা আর্থিক দিক থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। মেট্রো কর্তৃপক্ষ কথা দিয়েও কথা রাখেনি। মেট্রো ট্রাইবুনালে মামলা হলেও পাওনাগন্ডা নিয়ে কিছু কিছু মামলা গড়িয়েছে হাই কোর্ট পর্যন্ত। সেখানে সব মামলার ফয়সালা হয়নি। মেট্রোর লাইন তৈরি হয়ে যাওয়ার পর তারা মৌখিক ভাবে জানিয়েছে, ওই বাড়ির জায়গার প্রয়োজন নেই তাদের। এ দিকে, দশকের পর দশক কেটে গেলেও সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। অনেক পরিবারের সদস্য মারাও গিয়েছেন। পরিবারের উত্তরসূরিরা এখনও অন্ধকারে। ‘উত্তর বালিয়া বাঁচাও কমিটি’র কনভেনার হওয়ার সুবাদে আমরা মানুষের আর্থিক সমস্যা মেটাতে মেট্রো কর্তৃপক্ষ ও বাম সরকারের সঙ্গে বসার পরেও সমস্যা মেটেনি।
আসলে কেউ কথা রাখেনি, রাখে না। সেই ঐতিহ্য সমানে চলে আসছে। আমি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। আমার বাড়িটারও এখনও ফয়সালা হয়নি!
সূর্যকান্ত মণ্ডল, কলকাতা-৮৪
২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি ছিল যে, সব এলাকায় বাড়ি বাড়ি নলবাহিত জলের মাধ্যমে পানীয় জল সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে। এর পরে ২০১৬ সালে বিধানসভা, ২০১৮-য় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০১৯ সালে লোকসভা এবং সবশেষে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। জনসাধারণের মধ্যে কিন্তু ভোটদানের উৎসাহ ছিল লক্ষণীয়। আমতার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকায় এই নলবাহিত জল পরিষেবা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেলেও এখনও আমতা-১ ব্লকের রসপুর ও উদং-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই পরিষেবা অধরা। এমন নয় যে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়নি। স্থানীয় জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, এলাকার ত্রিস্তর পঞ্চায়েত প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রস্তাবনা ও পরিকল্পনা জমা পড়লে তবেই পরিষেবা কার্যকর হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে এখন জানা যাচ্ছে যে, এই প্রকল্পের জন্য নাকি উপযুক্ত জায়গা পাওয়াযাচ্ছে না।
অন্য দিকে, আমতা বিধানসভা কেন্দ্রের আমতা-২ ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নলবাহিত জল পরিষেবা প্রায় বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গিয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি মানুষের দৈনন্দিন কাজের পরিধি বেড়েছে। আজকাল বাড়িতে অনেকেই দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য অগভীর নলকূপ স্থাপন করছেন। কিন্তু মাঝেমধ্যেই নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে। গ্রীষ্মকালে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নেমে যায়। সমস্যা তখন প্রকট হয়। জলের এই সমস্যার সমাধানের জন্য তাই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মুস্তাক আলি মণ্ডল, আমতা, হাওড়া
যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য
সম্প্রতি চেন্নাই-সাঁতরাগাছি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে সাঁতরাগাছি জংশন স্টেশনে নামি। প্রি-পেড ট্যাক্সির কাউন্টারের সামনে পৌঁছে দেখি, ইতিমধ্যেই প্রচুর লাইন পড়ে গিয়েছে। ট্যাক্সিও ছিল অপ্রতুল। কুড়ি-পঁচিশ মিনিটে মাত্র দু’-তিনটে ট্যাক্সির দর্শন মিলছিল। অথচ, সেখানে বেশ কয়েকটি অ্যাপ ক্যাব দাঁড়িয়ে থাকলেও যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিতে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া চাইছিল তারা। আমাদেরই সঙ্গে আসা অপর একটি পরিবারেরও একই দুর্দশা হয়। তাঁদের সঙ্গে এক জন রোগীও ছিলেন। এই সব ট্রেনে প্রচুর রোগী থাকেন, যাঁরা চেন্নাই বা ভেলোর থেকে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফেরেন। প্রায় সাতাশ-আটাশ ঘণ্টা দীর্ঘ ট্রেনযাত্রার পরে যদি ট্যাক্সি পাওয়ার সুনির্দিষ্ট সম্ভাবনা না থাকে, তা হলে এই সব যাত্রীর দৈহিক ও মানসিক অবস্থা কী হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।
অদূর ভবিষ্যতে হয়তো ট্রেন এবং যাত্রী সংখ্যা আরও বাড়বে এই স্টেশনগুলিতে। বাইরে থেকে চিকিৎসা করিয়ে আসা রোগী ও প্রবীণ নাগরিকদের কথা মাথায় রেখে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলিতে ছোট ছোট ব্যাটারিচালিত গাড়ি, র্যাম্প অথবা এসক্যালেটরের বন্দোবস্ত রাখলে যাত্রীদের সুবিধা হয়। একই সঙ্গে প্রয়োজন, স্টেশনগুলির বাইরে প্রচুর সংখ্যক ট্যাক্সির উপস্থিতি নিশ্চিত করা। দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য সরকার— উভয়েরই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।
অমিত কুমার চৌধুরী, কলকাতা-৭৫
প্লাস্টিক চলছেই
অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে ১ জুলাই থেকে ৭৫ মাইক্রনের কম প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে রাজ্যে। অন্যথায় বিক্রেতার সঙ্গে ক্রেতাদেরও উপর নির্দিষ্ট অঙ্কের জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। প্লাস্টিকের পাশাপাশি থার্মোকলের ব্যবহারও বন্ধ করার চিন্তাভাবনা করেছে রাজ্যের পরিবেশ দফতর। এই কারণে অন্যত্র কী প্রতিক্রিয়া হয়েছে, জানি না। তবে, দক্ষিণ দমদম পুরসভা অঞ্চলে নাগেরবাজারের অভিজ্ঞতা একেবারে সুখকর নয়। মুদি দোকান, মাছের বাজার এবং ফুলের কারবারিরা পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ নিতে না চাইলে অভয়বাণী দিচ্ছেন— ভয় নেই, কেউ কিছু বলবে না। পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ যেখানে সেখানে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। স্থানীয় কিছু জলাশয়ে পুজোর ফুল এবং অন্যান্য সামগ্রী-সহ ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ব্যতিক্রম হয়তো কিছু আছে। কিন্তু সংখ্যার হিসেবে তা সত্যিই নগণ্য।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, হয় আইনের যথাযথ প্রয়োগের ন্যূনতম প্রয়াসটুকু থাকুক, অথবা যেমন চলছিল তেমনটাই চলতে দেওয়া হোক।
মানস কুমার সেনগুপ্ত, কলকাতা-৭৪
প্রতারণার ভয়
এখন ব্যাঙ্কের চেকের মূল্য বড় অঙ্কের (ন্যূনতম এক লক্ষের বেশি) হলে, তা ক্লিয়ারিং-এর জন্য পিপিএস বা পজ়িটিভ পে সিস্টেম পদ্ধতির মাধ্যমে আগে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে গিয়ে সেই চেক-এর তথ্য, যেমন চেক-এর অঙ্ক, তারিখ, যার নামে দেওয়া হচ্ছে, তার নাম জমা দিয়ে আসতে হচ্ছে। না হলে সেই অ্যাকাউন্ট হোল্ডার-কে ব্যাঙ্কের তরফ থেকে ফোন করে জেনে নেওয়া হচ্ছে যে, সত্যিই এই চেক তিনি ইসু করেছেন কি না! গ্রাহককে ফোন করে না পেলে চেক বাউন্স করে দেওয়া এবং চেক বাউন্স চার্জও ধার্য করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থা গ্রাহক নিরাপত্তার স্বার্থেই করা হয়েছে বলে শীর্ষ ব্যাঙ্কের দাবি। কিন্তু প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। যেখানে বর্তমানে ব্যাঙ্কিং প্রতারণা প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে, প্রতিনিয়ত সংবাদপত্র, গণমাধ্যমে সতর্ক করে বলা হচ্ছে যে অসাবধানবশত মোবাইলে অচেনা কোনও লিঙ্কে ক্লিক করবেন না বা অচেনা ফোনে উত্তর দেবেন না, সেখানে পিপিএস-এর মাধ্যমে ব্যাঙ্ক কর্তৃক এই চেক-এর তথ্য সংগ্রহ একটা আতঙ্কের সৃষ্টি করছে গ্রাহকদের মনে। অন্য ভাবে কি এই পদ্ধতি সম্পন্ন করা যায় না? রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এই ব্যাপারে নতুন করে চিন্তাভাবনা করলে ভাল হয়।
তন্ময় ঘোষ, কলকাতা-৪৭
ভিটেছাড়া
সংবাদপত্র পড়ে জানতে পারলাম মেট্রো ক্ষতিগ্রস্তদের দুর্দশার কথা (‘মেট্রো-ক্ষতিগ্রস্তদের অপেক্ষার ৩ বছর’, ৩১-৮)। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য বৌবাজারে ভেঙে পড়া বাড়িগুলোর বাসিন্দাদের দুঃখের অন্ত নেই। কর্তৃপক্ষ এবং সরকার দু’বছরের মধ্যে বাড়ি করে দেওয়ার কথা দিলেও আজ তিন বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও কিছুই সম্ভব হয়নি। আসলে তাদের কাজে এবং কথায় কোনও মিল নেই। ২০০২ সালে টালিনালা সুতি খাল হয়ে গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন উত্তর বালিয়ার বুক চিরে কবি সুভাষে পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়। ব্যক্তিগত কিছু সম্পত্তি আর গোটা আট-দশ বাড়ি তারা বাজেয়াপ্ত করে। দাম ধার্য হয়েছিল কাঠা প্রতি এক লক্ষ টাকা। আর বাড়ির মূল্য ৪৯৬ টাকা প্রতি স্কোয়ার ফুট— জলের দামে। তার জ্বলন্ত ইতিহাস এখানকার পথে বসা মানুষগুলো। সার্বিক উন্নতি ও জনসাধারণের কথা ভেবে যাঁরা সম্পত্তি সমর্পণ করেছেন, তাঁরা আর্থিক দিক থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। মেট্রো কর্তৃপক্ষ কথা দিয়েও কথা রাখেনি। মেট্রো ট্রাইবুনালে মামলা হলেও পাওনাগন্ডা নিয়ে কিছু কিছু মামলা গড়িয়েছে হাই কোর্ট পর্যন্ত। সেখানে সব মামলার ফয়সালা হয়নি। মেট্রোর লাইন তৈরি হয়ে যাওয়ার পর তারা মৌখিক ভাবে জানিয়েছে, ওই বাড়ির জায়গার প্রয়োজন নেই তাদের। এ দিকে, দশকের পর দশক কেটে গেলেও সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। অনেক পরিবারের সদস্য মারাও গিয়েছেন। পরিবারের উত্তরসূরিরা এখনও অন্ধকারে। ‘উত্তর বালিয়া বাঁচাও কমিটি’র কনভেনার হওয়ার সুবাদে আমরা মানুষের আর্থিক সমস্যা মেটাতে মেট্রো কর্তৃপক্ষ ও বাম সরকারের সঙ্গে বসার পরেও সমস্যা মেটেনি।
আসলে কেউ কথা রাখেনি, রাখে না। সেই ঐতিহ্য সমানে চলে আসছে। আমি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। আমার বাড়িটারও এখনও ফয়সালা হয়নি!
সূর্যকান্ত মণ্ডল, কলকাতা-৮৪