প্রায় প্রতি বছর উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের বিভিন্ন জায়গা ঘুরতে যাওয়ার সূত্রে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করতে হয় আমাকে। গত বছর থেকে এই স্টেশনের অব্যবস্থা দেখে হতবাক হয়ে যাচ্ছি। স্টেশন চত্বরে নির্মাণকাজ চলছে। ফলে, গাড়ি ধরার জন্য পৌঁছতে হচ্ছে নিউ পার্কিং এরিয়া-য়। জায়গাটি স্টেশন থেকে বেরিয়ে বেশ অনেকখানি দূরে। এবং যাওয়া-আসা রাস্তাটিও এবড়ো-খেবড়ো। এই স্টেশনে যাঁরা আসেন, তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ পর্যটক। বয়স্ক মানুষ, শিশু নিয়ে তাঁদের এনজেপি-তে নামতে হচ্ছে এবং পাহাড়ে ওঠার জন্য গাড়ি ধরতে গিয়ে ওই রাস্তা পেরিয়ে পার্কিং এরিয়া-তে পৌঁছতে হচ্ছে। ফেরার সময়েও একই অবস্থা। প্রচুর মালপত্র নিয়ে ওই এবড়ো-খেবড়ো, নোংরা রাস্তা পেরিয়ে হাঁটা অত্যন্ত কষ্টকর। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্টেশনের এই রকম অবস্থা কেন হবে?
মেনে নিচ্ছি যে, স্টেশন চত্বরে কাজটি অত্যন্ত জরুরি। হয়তো এটি সমাপ্ত হলে আগামী দিনে এনজেপি স্টেশন দিয়ে যাতায়াত আগের চেয়ে বেশি মসৃণ হবে। কিন্তু ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা ভেবে তো এখনকার সমস্যাগুলিকে উপেক্ষা করা চলে না। যদি কাজ চালাতেই হত, তা হলে গাড়ি পার্কিং-এর জন্য অন্য কোনও বিকল্প জায়গা কি বেছে নেওয়া যেত না? যদি জায়গার অভাব থাকে, তা হলে চলাচলের রাস্তাটির হাল কি আরও একটু ফেরানো যেত না? স্টেশনের ঠিক বাইরেই পর পর খাওয়ার দোকানের কল্যাণে ওই রাস্তাটিতে সকালের দিকে বেশ ভিড় থাকে। তার মধ্যে যদি বৃষ্টি হয়, তবে অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে। আশ্চর্য লাগে, এই রাজ্যে কোনও সংস্কার-কাজই কি সাধারণ মানুষকে বিপদে না ফেলে সুষ্ঠু ভাবে করা যায় না?
পারমিতা মজুমদার, কলকাতা-৩৩
বাস কম
কাজের সূত্রে নিউ টাউন থেকে হাওড়াগামী ডব্লিউবিটিসি পরিচালিত এস১২ বাসে যাতায়াত করি। সরকারি পরিবহণ, তাই বাস ভাড়া নিউ টাউন থেকে শিয়ালদহ ১০ টাকা এবং হাওড়া পর্যন্ত ১১ টাকা। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে দাঁড়িয়ে ন্যূনতম রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বাদ দিয়ে শুধুমাত্র জ্বালানি খরচ ধরলেও এমন ভাড়া সত্যিই অবাস্তব বলে মনে হয়। বাসটি নিউ টাউনের একটি অস্থায়ী বাস স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত যায়। এই বাস স্ট্যান্ড থেকে এম ১৪-এর মতো বেশ কিছু সরকারি বাসও ছাড়ে। তবে এই স্ট্যান্ডে নিউ টাউন থেকে গড়িয়াগামী বেসরকারি এএস ৩ বাসের আধিক্য এত বেশি, যে কোনও সাধারণ সময়ে এটিকে এএস ৩-র বাস স্ট্যান্ড বলেই ভুল হবে।
শহরের রাস্তায় সরকারি বাস এখন এতটাই অনিয়মিত এবং অপ্রতুল যে নিত্যযাত্রীদের বেসরকারি বাসের ভরসাতেই থাকতে হয়। এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা যায় এস ১২ বাসটির কথা। প্রসঙ্গত, উত্তর ২৪ পরগনা-কলকাতা-হাওড়া রুটে বাসটির সংখ্যা খুবই কম। নিত্যদিন বাসগুলিতে এত ভিড় হয় যে, সাধারণ মানুষের পক্ষে ভদ্র ভাবে চলাফেরা করা দুষ্কর। প্রশ্ন হল, এত লম্বা দূরত্বের বাসের সংখ্যা এত কম কেন? এই রুটে বিশেষত নিউ টাউন থেকে হাওড়া যাওয়ার জন্য নন এসি সরকারি বাস বলতে আছে এস ১২ এবং এস ১২ই। এস ১২ই-র বাসের সংখ্যাও এস ১২-র মতোই কম। এ ক্ষেত্রে হাওড়া পর্যন্ত যাওয়ার এসি বাস এসি ১২ থাকলেও বেশি ভাড়ার কারণে এতে নিত্য যাতায়াত করা অসম্ভব।
এমন একটি জনবহুল বাসরুটে সরকারি নন এসি বাসের অপ্রতুলতার শিকার কেন হতে হচ্ছে সাধারণ নিত্যযাত্রীদের? বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে পরিবহণ দফতরে সাধারণ মানুষের আবেদন, অভিযোগ জমা পড়লেও সেই সব সমস্যার কোনও সুরাহা হয় না। প্রয়োজনে যে সব রুটে বাসের ভাড়া বাড়ানো যায়, তা মানুষের সাধ্যমতো বাড়ানো হোক। গণপরিবহণের ক্ষেত্রটি ঠিকঠাক হলে সাধারণ মানুষের উপকারই হবে।
নীলাদ্রি নস্কর, চম্পাহাটি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
যাত্রী দৌরাত্ম্য
বিশ্বভারতীতে গবেষণার ছাত্র হিসাবে কাজ করায় সাধারণত গণদেবতা বা ব্ল্যাক ডায়মন্ড-এর মতো এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিকেই যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করতে হয়। দীর্ঘ দিন ধরে এই ট্রেনগুলোতে যাতায়াত করার সূত্রে একটা বিশেষ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। সমস্যা কতিপয় যাত্রীকে নিয়ে। এঁদের অধিকাংশের মধ্যে ট্রেনের আসন দখল করে থাকার একটা প্রবণতা লক্ষ করা যায়। আসন ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও বা যেখানে একটু চেপেচুপে বসলে আর এক জন যাত্রীর বসার জায়গা হয়ে যায়, এঁরা কোনও রকম সহযোগিতা করেন না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো অন্য যাত্রীদের শারীরিক নিগ্রহেরও শিকার হতে হয়। কিন্তু এই যাত্রীদের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর ব্যবস্থা না করার ফলে এঁরা কারও পরোয়া করেন না।
দেখেছি, অধিকাংশ যাত্রী জানেনই না যে, এই ধরনের হয়রানির বিরুদ্ধে রেলে কী ভাবে অভিযোগ করতে হয়। ১৩৯ নম্বরে কল করে নির্দিষ্ট তথ্য প্রদানের মাধ্যমে যে কোনও যাত্রী তাঁর সঙ্গে হওয়া দুর্ব্যবহার বা সমস্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারেন। রেল কর্তৃপক্ষ খুব দ্রুততার সঙ্গেই পদক্ষেপ করেন। এই ট্রেনগুলিতে এমন ঘটনা আটকানোর জন্য এক বা একাধিক ব্যক্তি নিয়োগ করা হোক। কতিপয় মানুষের কারণে রেল ভ্রমণ যেন অন্যদের কাছে বিরক্তির বা আতঙ্কের না হয়ে ওঠে, তা দেখার অনুরোধ রইল রেল কর্তৃপক্ষের কাছে।
শুভজয় সাধু,শ্রীরামপুর, হুগলি
ফিরুক বাম্প
লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিশেষ নেতা-নেত্রীরা ভোট প্রচারের জন্য রাজ্যের নানা জায়গায় রোড শো করেছেন। তাঁদের হাঁটতে যাতে অসুবিধা না হয় সে জন্য কিছু কিছু রাস্তা থেকে বাম্পগুলো অস্থায়ী ভাবে তুলে দেওয়া হয়েছিল। ভোটপর্ব শেষে বাম্পগুলোর যথাস্থানে পুনর্বহাল বা মেরামতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু ভোট শেষ হওয়ার ছয় মাস কেটে গেল। এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনাপ্রবণ রাস্তাগুলো বাম্পহীন অবস্থায় রয়ে গিয়েছে। হয়তো কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটবে, তার পর বাম্প মেরামত হবে। সাধারণ মানুষের জীবনের থেকে রাজনৈতিক নেতাদের পায়ের মূল্য কি বেশি? প্রশাসনকে অনুরোধ, তুলে ফেলা বাম্পগুলো যথাসম্ভব পুনর্বহাল করা হোক।
মোহম্মদ হাসিবুর রহমান, সংগ্ৰামপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
নিচু স্টেশন
আগরপাড়া স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম ট্রেনের কামরার তুলনায় অত্যধিক নিচু হওয়ার ফলে যাত্রীরা, বিশেষত প্রবীণদের ওঠা-নামায় খুবই সমস্যা হয়। যে কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এ ছাড়া, সংযোগকারী রাস্তাটিতেও যত্রতত্র পাথর পড়ে থাকে। বর্ষার দিনে জল জমে থাকার কারণে আরও সমস্যা বাড়ে। রেল কর্তৃপক্ষ এত উদাসীন কেন?
সুনীল চক্রবর্তী,কলকাতা-১০৯
টিপস কেন?
সম্প্রতি দূরপাল্লার ট্রেনে এক বিশেষ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলাম। যাত্রার সময় ট্রেনের কামরা যাঁরা পরিষ্কার করেন বা খাবার দিয়ে যান তাঁদের ‘টিপস’ দিতে হয়। সম্প্রতি ব্যাপারটা যেন বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে। বিশেষ করে বাতানুকূল কামরাগুলিতে ‘টিপস’-এর পরিমাণ কম হলে অনেক সময় এঁরা অসন্তুষ্ট হন। প্রশ্ন হল, এঁরা নিশ্চয়ই এঁদের কাজের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বেতন পান। তা হলে টিপস দিতে হবে কেন?
শাশ্বত মুখোপাধ্যায়, দমদমা, হুগলি