এত দিন ‘ন্যাশনাল রুরাল ড্রিঙ্কিং ওয়াটার’ প্রোগ্রাম অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার মিলে স্থানীয় গঙ্গার জল শোধন করে আমাদের গ্রামে সরবরাহ করত। সারা গ্রামে রাস্তার ধারে যে গুটিকতক কল ছিল, সেগুলি থেকে আমরা ভাগাভাগি করে জল নিতাম। তার পরে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জল জীবন মিশন’ অনুযায়ী, প্রতি বাড়িতে কল বসানো হল। কিন্তু সেগুলোতে বারো মাসের মধ্যে বারো দিনও জল আসে কি না সন্দেহ। আর যেটুকু জল আসে, তাতে বাড়ির টিয়াপাখির চান ছাড়া কিছুই হয় না।
কেন্দ্রীয় সরকার ২০২১-২২ সালে রাজ্য সরকারকে এই কল বসানোর খাতে ৬৯৯৮.৯৭ কোটি টাকা প্রদান করেছে। রাজ্যে ১৬,৩২৫ লক্ষ গ্রামীণ বাড়ির মধ্যে মাত্র ১৪ লক্ষ বাড়িতে এই ট্যাপকল এখনও পর্যন্ত বসানো হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে গত দু’মাস ধরে রাস্তার কলে সকালের দিকে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে রয়েছে। বিকেলের দিকে মাঝেমধ্যে জল আসে, তা-ও মাত্র আধ ঘণ্টার জন্য। তাই এখানে বেসরকারি পানীয় জলের রমরমা ব্যবসা। প্রায় চারখানা জলের গাড়ি সারা গ্রাম ঘুরে ঘুরে পানীয় জল সরবরাহ করছে। ২০ লিটার জলের দাম ১০ টাকা। মাঝে ১৫ টাকা হয়েছিল, কিন্তু গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে আবার ১০ টাকা হয়েছে। ছোট বোতল দু’টাকা বা তিন টাকা। বাজারের যা অবস্থা, তাতে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। কিন্তু জলের অভাবে সেই পান্তা পর্যন্ত খেতে পাচ্ছি না। জল ছাড়া বাঁচব কী করে?
রণজিৎ মুখোপাধ্যায়, মুড়াগাছা, নদিয়া
ঔদাসীন্য
কিছু দিন আগে পিএনবি, উত্তরপাড়া, হুগলিতে আমার একটি সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ত্রৈমাসিক সুদ না দিয়ে ২০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। এমনটা কেবলমাত্র কোনও ঋণ নেওয়া অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে করা হয়ে থাকে। শাখার মুখ্য প্রবন্ধক, সার্কল অফিস, হুগলি, জ়োনাল অফিস কলকাতা প্রভৃতি জায়গায় মেল করার পরে সম্প্রতি সুদ জমা হয়। কিন্তু আজও অবৈধ ভাবে কাটা ২০০ টাকা ফেরত পাইনি। এমনকি কারও কাছ থেকে আমার মেল-এর সন্তোষজনক উত্তরটুকুও পাইনি। আমি ৩৫ বছর ইউনাইটেড ব্যাঙ্কে চাকরি করে গত মার্চে অবসর নিয়েছি। যদিও বেশির ভাগ কর্মী বা আধিকারিক দায়িত্বশীল, কিন্তু কয়েক জন আধিকারিক, বিশেষত উচ্চপদস্থ আধিকারিকের ঔদাসীন্যে গ্রাহকরা ঠিকমতো পরিষেবা পান না।
প্রণব কুমার কুন্ডু, হিন্দমোটর, হুগলি
গাড়ি পার্কিং
কলকাতায় গাড়ির সংখ্যা আগের থেকে অনেক বেড়ে গিয়েছে। বিভিন্ন বাণিজ্যিক কেন্দ্রে কেনাকাটা করার জন্য গাড়ি নিয়ে যাঁরা যান, তাঁরা অনেক সময়েই গাড়ি রাখার জায়গা পান না। নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ‘পার্কিং জ়োন’ করা থাকলেও চাহিদার কারণে জায়গা কম পড়ে। ফলে অনেক বেআইনি গাড়ি পার্কিং করার জায়গা গজিয়ে উঠেছে। অন্য দিকে, পুরসভা চাহিদা অনুযায়ী পার্কিং লট না বাড়িয়ে এই বেআইনি পার্কিং নিয়ে কড়াকড়ি শুরু করেছে। আমার মনে হয়, যদি এই বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলির কাছে আরও নতুন কিছু জায়গাকে পার্কিং লটের আওতায় আনা যায়, তা হলে পুরসভার আয় যেমন বাড়বে, তেমনই এই বেআইনি পার্কিং ব্যবস্থাও বন্ধ হবে বা কমবে। তাই কলকাতা পুরসভার উচিত পার্কিং লট বাড়ানোর পাশাপাশি নজরদারির মাধ্যমে এই খাতে আয় বাড়ানোর চেষ্টা করা।
রুপেন্দ্র মোহন মিত্র , কলকাতা-৪৭
অচল কয়েন
‘মুদ্রা দোষ’ (সম্পাদক সমীপেষু, ৫-৯) শীর্ষক চিঠির সমর্থনে দু’-চার কথা জানাতে চাই। বাজারে যে সব কয়েন চালু আছে, তার আকার এত ভিন্ন যে তা সঙ্গে রাখা এবং ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্রতিনিয়তই সমস্যায় পড়তে হয়। এক টাকা অনেক জায়গাতেই ব্যবহার করা যায় না। এমনকি দশ টাকার কয়েনও অচল হতে বসেছে! বছর দুই আগে কলকাতা থেকে আসার সময় কিছু দশ টাকার কয়েন নিয়ে এসেছিলাম। সেগুলি এখন আর ব্যয় করতে পারছি না। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বাঁধন চক্রবর্তী আগরতলা, ত্রিপুরা
দালাল চক্র
বর্তমানে যে ভাবে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দালাল দমনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তাতে আইনের উপর জনসাধারণের ভরসা বাড়ছে। তবুও, তাঁদের প্রতিনিয়ত দালাল দুর্নীতির কবলে পড়তেই হচ্ছে। আর, এই দালাল দুর্নীতির অন্যতম মুখ হল বিএল অ্যান্ড এলআরও অফিসগুলো। এই অফিসগুলোর মধ্যে এক বিশেষ অফিস হল লাভপুরের বিএল অ্যান্ড এলআরও অফিস। সাধারণ মানুষ যদি কোনও ক্যাফে থেকে অনলাইনে তাঁদের জমি রেকর্ড করানোর জন্য মিউটেশন আবেদন করেন, তা হলে সেই মিউটেশন আবেদনটি লাভপুর বিএল অ্যান্ড এলআরও অফিসে মাসের পর মাস পড়ে থাকে। বছর পেরিয়ে গেলেও মিউটেশন কেসের হিয়ারিং তারিখ দেওয়া হয় না। অথচ, সেই আবেদন কোনও দালাল করলে সেটি এক মাসের মধ্যেই হয়ে যায়। যদি প্রশাসন দ্রুত এই দালালি বন্ধ করার পদক্ষেপ করে ও এখানকার অফিসারদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা করে, তা হলে জনসাধারণের অনেকটা উপকার হয়।
মৃত্যুঞ্জয় দাস, বীরভূম
যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য
আমি পার্ক সার্কাস স্টেশনের এক জন নিত্যযাত্রী। স্টেশনটি অত্যন্ত নোংরা এবং অপরিচ্ছন্ন। কোনও জল এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। স্টেশন থেকে বেরিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের দিকে যাওয়ার বস্তির ভিতর দিয়ে যে রাস্তাটি ছিল, সেই রাস্তাটি ইদানীং রেল কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ, স্টেশন থেকে বেরোনোর কোনও সঠিক রাস্তাও নেই। ফলে, প্রত্যেক দিন হাজার হাজার রোগীকে রাস্তা পার করতে হয় রেল লাইনের পাথরের উপর দিয়ে এবং লেভেল ক্রসিং-এর নীচ দিয়ে। পার্ক সার্কাস শিয়ালদহ-দক্ষিণ শাখার একটি ব্যস্ততম স্টেশন হওয়ায় বেশির ভাগ সময়ই লেভেল ক্রসিংটি আটকানো থাকে। এই ভাবে প্রতিনিয়ত ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াতের জন্য যে কোনও দিন বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। নিত্যযাত্রী ও রোগীদের কথা ভেবে প্ল্যাটফর্মে যাতায়াতের জন্য মসৃণ রাস্তা এবং আন্ডারপাসের ব্যবস্থা করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
পারমিতা মণ্ডল, বজবজ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
বিদ্যুৎ বিভ্রাট
২০১১ সাল থেকে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রত্যন্ত গ্ৰামাঞ্চলেও বিদ্যুৎ পরিষেবার আশ্চর্যজনক উন্নতি লক্ষ করা গিয়েছিল। লোডশেডিং ছিল না বললেই চলে। ঝড়-জল-বৃষ্টিতেও গভীর রাতে পাওয়া যেত জরুরি পরিষেবা। কাস্টমার কেয়ারও বেশ সচল ছিল এবং উন্নত বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদানের একটা অঙ্গ হয়ে উঠেছিল। বর্তমানে গ্ৰামেও বিদ্যুৎকে জরুরি পরিষেবা হিসেবেই গণ্য করা হচ্ছে। কিন্তু ২০২১-এর পর থেকে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে এই পরিষেবার ক্রমাগত অবনমন ঘটে চলেছে। জরুরি ভিত্তিতে রক্ষণাবেক্ষণ আর হচ্ছে না, দিনে রাতে লোডশেডিং বেড়েই চলেছে, কাস্টমার কেয়ারও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে। হঠাৎ এই পরিষেবার অবনমনের কী কারণ, তা আমার মতো সাধারণ গ্ৰাহকদের কাছে অজানা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই এবং পরিষেবার যথাযথ মান বজায় রাখার আবেদন জানাই।
ইন্দ্র মুখোপাধ্যায়, বাগনান, হাওড়া