যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে রেল পুলিশ নির্বিকার। ফাইল ছবি।
দূরপাল্লার ট্রেনের সাধারণ স্লিপার শ্রেণিতে যাত্রী-সুরক্ষার হাল যে কী রকম, তা টের পেলাম কিছু দিনের আগের এক ঘটনায়। নিউ আলিপুরদুয়ার থেকে শিয়ালদহগামী একটি এক্সপ্রেসে ভোররাতের দিকে আমার এক বান্ধবীর ঘুমোনোর সুযোগে তাঁর স্লিংপার্স চুরি হয়ে যায়। তাতে নতুন কেনা স্মার্টফোন, ডেবিট কার্ড, ভোটার কার্ড এবং কয়েক হাজার টাকা ছিল। বিষয়টি নজরে আসতে তৎক্ষণাৎ রেল পুলিশকে জানানো হলে তাঁরা অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু এর পর তাঁদের সে রকম কোনও তৎপরতা চোখে পড়েনি। ফোনটি ট্র্যাক করার জন্য কোনও ব্যবস্থা আদৌ করা হয়েছিল কি না, সন্দেহ আছে। দেড় মাস অতিবাহিত। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এখনও চোরের কোনও হদিস মেলেনি। ঘটনাটি ঘটার এক মাসের মধ্যে আরও এক বার ওই একই দূরপাল্লার ট্রেনে এসি থ্রি টায়ারে সফরকালে কয়েক জন ভদ্রবেশী মাতালের দেখা পাই। প্রবল শীতের মধ্যেও মদ্যপ অবস্থায় যাঁদের এসির তাপমাত্রা কমানোর হুজুগে কামরার বাকি যাত্রীদের ঠান্ডায় কেঁপে মরতে হয়। কিন্তু রেল পুলিশ নির্বিকার ছিল। এ ছাড়াও কামরাগুলির পরিচ্ছন্নতা, শৌচাগার, খাবারের গুণমানের মতো বিষয়গুলির কথা যত কম বলা যায় তত ভাল।
বিভিন্ন দূরপাল্লার ট্রেনে মানুষ রাত্রিযাপন করেন। সেখানে যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্য এবং নিরাপত্তা বিষয়ে রেলের এমন গাফিলতি আর কত দিন চলবে?
জয়ী চৌধুরী, সোদপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
অপরিচ্ছন্ন শ্মশান
প্রত্যেক মানুষকেই কোনও না কোনও সময়ে আত্মীয়-পরিজনের দাহকার্য সম্পন্ন করতে শ্মশানমুখী হতে হয়। এই পবিত্র স্থানটি যদি সুচারু রূপে সংরক্ষিত না থাকে, তা হলে প্রিয়জনের অন্ত্যেষ্টি কালে বাড়ির লোকজনের অবস্থা কতটা দুর্বিষহ হতে পারে, তা দক্ষিণ কলকাতার সিরিটি শ্মশান দেখলে বোঝা যায়। বহু প্রাচীন শ্মশানটির চারিদিক অত্যন্ত অপরিচ্ছন্ন। অথচ, মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে কেওড়াতলা শ্মশানটিকে দৃষ্টিনন্দন করে ফেলা হয়েছে। তার পাশে দেশবন্ধু-র শ্মশানটিও ভাল ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। এই অঞ্চলে ক্রমশ জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাছাকাছি হওয়ার সুবাদে অনেকেই সিরিটি শ্মশানে দাহকার্য করে থাকেন। ফলে, এই অবহেলা খুবই বেদনাদায়ক। দাহকার্যের পর অস্থি বিসর্জনের সময় দেখা যায় ভাঙাচোরা সিঁড়ির চার পাশে স্তূপীকৃত আবর্জনা, সঙ্গে মদের বোতল যত্রতত্র পড়ে রয়েছে। সন্নিহিত সকল আবাসনের ব্যবহৃত পূতিগন্ধময় দূষিত জল জমে থাকার ফলে অস্থি বিসর্জনের পরে ঘাটের জল মাথায় দেওয়ার উপায় থাকে না, একমাত্র জোয়ারের সময় ছাড়া। বাধ্য হয়ে কোনও রকমে অস্থি বিসর্জন দিয়ে মানুষকে তাই বাবুঘাটে যেতে হয় শুদ্ধ হতে।
সরকারের কাছে অনুরোধ, অবিলম্বে শ্মশানটির রক্ষণাবেক্ষণের দিকে নজর দিন, যাতে শ্মশানযাত্রীরা একটু ভাল ভাবে দাহকার্য সম্পন্ন করতে পারেন।
সুব্রত সেনগুপ্ত, কলকাতা-১০৪
হারাচ্ছে ঐতিহ্য
মামারবাড়ি কলকাতার খিদিরপুরে। সেখানেই বড় হয়েছি। খিদিরপুরে ফ্যান্সি মার্কেটের উল্টো দিকের গলি সোজা চলে গিয়েছে আমার স্কুল, শরৎ পাল গার্লস স্কুল পর্যন্ত। ওই গলির তিন-চারটে বাড়ি পরই ডান দিকে ছিল তৎকালীন বিখ্যাত কবি রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি। শরৎ পাল স্কুলকে বাঁ দিকে রেখে একটু এগোলেই পড়বে মাইকেল দত্ত স্ট্রিট। ডান দিকে কিছুটা গেলে পদ্মপুকুর সাঁতারের ক্লাব। ওটার গায়েই ছিল কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি। ডান দিকের রাস্তা ধরে খিদিরপুর মোড়ের দিকে একটু এগোলেই হেমচন্দ্র পাঠাগার। ওটাই আসলে কবি হেমচন্দ্রের বাড়ি। রঙ্গলাল, মধুসূদন আর হেমচন্দ্র— স্বনামধন্য এই তিন কবির পাশাপাশি বাড়ি। তাই এটা কবিতীর্থ নামেও পরিচিত। বর্তমানে প্রোমোটারদের দাপটে সব সাবেক বাড়ি লোপাট হয়ে আকাশছোঁয়া বহুতলে ঢেকে গিয়েছে। ঘেঁষাঘেঁষি অবাঙালি ব্যবসায়ীদের অনুপ্রবেশে পুরনো বাঙালি পরিবারগুলি কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে। ওখানে এখন গেলে, ওই কবিদের নাম আর শোনা যায় না। এঁদের ভিটেগুলোও হয়তো জমি-হাঙরেরা এক দিন গিলে নেবে। তাই, সময় থাকতে সরকার যদি সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয়, তবে অন্তত কবিতীর্থ নামের সার্থকতা বজায় থাকে।
মণিকা ঘোষ, মধ্য ঝোড়হাট, হাওড়া
কেন কম সময়?
সম্প্রতি ছেলেকে বিমানে তুলতে দমদম এয়ারপোর্টে গিয়েছিলাম। বিমানবন্দরে ঢোকার মুখে কাউন্টার থেকে গাড়ির কুপন দেওয়া হয়। আগে পনেরো মিনিট সময় ধার্য থাকত গাড়ি থেকে মালপত্র নামিয়ে প্রিয়জনকে বিদায় দিতে। তাতেও সময় ফুরিয়ে যেত। এখন সময়টা অস্বাভাবিক কমিয়ে মাত্র সাত মিনিট করে দেওয়া হয়েছে। এক মিনিট দেরি হলে ফাইন দিতে হয় অনেক টাকা। দূর দেশে পাড়ি দেওয়া আত্মীয়-পরিজনকে বিদায় জানাতে এসে চোখের জলের দাম এটা! আরও জানা গেল, এটা করা হয়েছে ওলা-উবরের স্বার্থে। তাদের যাতায়াতে এই জাতীয় সময়সীমা নেই। নিজস্ব গাড়িতে না এসে যাত্রীরা যাতে প্রকৃত ভাড়ার পাঁচ গুণ দিয়ে ট্যাক্সি ধরেন— এটা তারই কুটিল পরিকল্পনা বলে মনে করছেন অনেকে। পনেরো মিনিটের সময় কমিয়ে দশ মিনিট হতে পারে, তা বলে সাত মিনিট! ভুক্তভোগীমাত্রই এই সরকারি সিদ্ধান্তের যন্ত্রণা বুঝবেন!
সুস্নাত দাশ, কলকাতা-৫০
পথ সংস্কার
সম্প্রতি আমরা বেশ কয়েক জন, যাঁদের মধ্যে আশি-ঊর্ধ্ব অনেক পুরুষ ও মহিলাও ছিলেন, বাংলাদেশ ঘুরে এলাম। ও-পারে যাতায়াত করি বাসে করেই। দু’বারই লক্ষ করলাম যে আমাদের দেশের ইমিগ্রেশন কাউন্টারে যাওয়ার পথটি খুব অমসৃণ। ফলে, চাকা লাগানো ভারী সুটকেস টেনে ওই পথ পার হতে দম বন্ধ হওয়ার জোগাড়। উপরন্তু, মালপত্র বহনের জন্য যে ট্রলিগুলি রাখা ছিল, সেগুলির অধিকাংশেরই ভাঙাচোরা অবস্থা। অবশ্য ও পারে বেনাপোলেও মালপত্র নিয়ে যাওয়ার পথটি আরও বেশি অমসৃণ ছিল।
যাত্রীদের পক্ষে, বিশেষ করে বেশি বয়সের মানুষদের এই ধরনের অমসৃণ পথ দিয়ে মালপত্র বহন করা খুবই কষ্টকর ব্যাপার। তাই, ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে বাস থেকে নেমে পেট্রাপোল সীমান্তে যাওয়ার রাস্তাটির প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়।
অমিতকুমার চৌধুরী, কলকাতা-৭৫
ভুল তথ্য
তপনকুমার সরকার প্রেরিত ‘বন্ধ কেন ঘাট?’ (২৩-১) চিঠির প্রেক্ষিতে সঠিক তথ্যের বিষয়ে জনসাধারণকে অবগত করতে এই পত্র। উক্ত চিঠিতে উল্লিখিত হয়েছে যে, অতিমারির সময় থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত ব্যারাকপুরের গান্ধী মিউজ়িয়ম জনসাধারণের পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তথ্যটি সম্পূর্ণ ভাবে ভ্রান্ত। কারণ, অতিমারির আবহ অতিক্রান্ত হওয়ার পর মিউজ়িয়ম ও অন্যান্য বিনোদন স্থলে জনসাধারণের প্রবেশ বিষয়ক সরকারি নির্দেশিকা শিথিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মিউজ়িয়মটি সম্পূর্ণ রূপে জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করা হয়। তার পর থেকেই এখনও পর্যন্ত ব্যারাকপুর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত দর্শনার্থী এই মিউজ়িয়মটি পরিদর্শন করছেন। সুতরাং, প্রকাশিত চিঠিটি মিউজ়িয়ম বিষয়ক তথ্য পরিবেশনে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করবে।
প্রতীক ঘোষ, অধিকর্তা-সম্পাদক, গান্ধী স্মারক সংগ্রহালয়, ব্যারাকপুর