Wajid Ali Shah

সম্পাদক সমীপেষু: বাঘ ও বৈরাগ্য

ওয়াজেদ আলি শাহ ১১ ফেব্রুয়ারি ১৮৫৬ পর্যন্ত ছিলেন আওধের নবাব। তাঁর রাজ্য ব্রিটিশরা অধিকার করে নিলে, তিনি নির্বাসিত হন মেটিয়াবুরুজে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২০ ০০:১০
Share:

ছবি: সংগৃহীত

নিখিল সুরের ‘কিড সাহেবের বাগান’ (রবিবাসরীয়, ১৯-৪) নিবন্ধটি পড়ে খুব ভাল লাগল। চাকরিসূত্রে দীর্ঘ দিন কেটেছে হাওড়া জেলায়, তখন থাকতাম কোম্পানির বাগানের খুব কাছে; সেই সূত্রে কোম্পানির বাগানের সঙ্গে কিছুটা ভাব-ভালবাসা আছে। তাই কিছু সংযোজন।

Advertisement

ওয়াজেদ আলি শাহ ১১ ফেব্রুয়ারি ১৮৫৬ পর্যন্ত ছিলেন আওধের নবাব। তাঁর রাজ্য ব্রিটিশরা অধিকার করে নিলে, তিনি নির্বাসিত হন মেটিয়াবুরুজে। তাঁর চিড়িয়াখানায় বাঘ-সিংহ মিলিয়ে ছিল ২৩টি প্রাণী। এক পূর্ণবয়স্কা বাঘিনি, ৬ জানুয়ারি ১৮৭৯, রাতের বেলায় নবাব বাহাদুরের চিড়িয়াখানা থেকে বেরিয়ে পড়ল। এ দিক ও দিক কিঞ্চিৎ ঘোরাঘুরি করে সে এল, আজ যেখানে বিচালিঘাট, তারই আশেপাশে। ও-পারে কোম্পানির বাগান দেখে তার খুব পছন্দ হল; হুগলি পেরিয়ে সে সোজা বাগানে। বাগানের কিউরেটর অ্যাডলফ বিয়েরমান সাহেবের মুণ্ডটি তার পছন্দ হল; সাহেব ভয়ানক জখম হলেন। পরবর্তী লক্ষ্যবস্তু ল্যান্স কর্পোরাল শেখ আজিম, তিনিও খুব আহত হলেন। তার পর বাগানে চরা দুটি গাইগরু দিয়ে মধ্যাহ্নভোজন, নৈশাহার। দুদিন পরে হাওড়ার ম্যাজিস্ট্রেট মিস্টার ওয়েস আজকের পদ্মপুকুর রেল স্টেশনের কাছাকাছি কোথাও তাকে গুলি করলেন।

মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহীর মৃত্যুর পর মহর্ষির মধ্যে বৈরাগ্য জাগল। রাঢ়ের ছাতিমতলায় ‘প্রাণের আরাম, মনের আনন্দ আত্মার শান্তি’ পাওয়ার ঢের আগে তিনি তা খুঁজে পেয়েছিলেন ভাটিতে গঙ্গাপারের এক গাছতলায়: এক পিরের মাজারে। এটি বাগানের চৌহদ্দির মধ্যেই, পূর্ব দিকে নাজিরগঞ্জের কাছে। এই উপাসনাস্থলেই তিনি নাকি তাঁর প্রথম ব্রহ্মসঙ্গীতটি লিখেছিলেন। ১৯৯৪-২০০২ দানেশ শেখ লেন সন্নিহিত এক সরকারি আবাসনে থাকতাম, তখন ছুটির দিনে অপরাহ্ণে অনেককেই দেখতাম সেখানে মাগরিবের নামাজ পড়তে যেতেন; হিন্দুরাও যেতেন বাতাসা মোমবাতি নিয়ে; আমিও গিয়েছি।

Advertisement

তপন পাল

বাটানগর

পঞ্চায়েত কর্মী

মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী পে কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করার সময় বলেছিলেন, রাজ্য সরকারের কর্মী ছাড়াও আগের মতো স্কুল শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, পুরসভার কর্মী, পঞ্চায়েত কর্মী ও অন্যান্য সরকার অধিগৃহীত সংস্থার কর্মী এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা এর সুবিধা পাবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত পঞ্চায়েত কর্মীরা পে কমিশনের সুবিধা পেলেন না। যদিও শিক্ষা ও পুর দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা জানুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গেই পে কমিশনের সুপারিশ মতো বর্ধিত বেতন পেয়ে আসছেন।

রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

কেন্দুয়াডিহি, বাঁকুড়া

আগে বলেছিলেন

‘ন্যায্য বণ্টন’ (১৪-৪) শীর্ষক সম্পাদকীয়র সমগ্র বক্তব্যের সঙ্গে একমত। একটি সংযোজন যে, জন রল্‌স-এর ‘ন্যায়’তত্ত্ব (১৯৭১) ‘জনকল্যাণকর রাষ্ট্র’-এর দর্শনকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এর বহু পূর্বে (১৯২৫) হ্যারল্ড জে ল্যাস্কি ‘আ গ্রামার অব পলিটিকস’ গ্রন্থে রাইটস, লিবার্টি অ্যান্ড ইকুয়ালিটি এবং প্রপার্টি নামক তিনটি অধ্যায়ের আলোচনায় যা বলেছিলেন, তার সঙ্গে পরবর্তী কালে রল্‌স-এর বক্তব্যের মিল প্রচুর। এই গ্রন্থের শেষ অধ্যায়ে ল্যাস্কি ‘বিশ্ব যুক্তরাষ্ট্রের’ ভাবনা প্রকাশ করেছিলেন, যা এই মুহূর্তে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পঞ্চানন চট্টোপাধ্যায়

কলি-৫১

নতুন তারিখ

রাজ্যের সরকারি ও সরকার পোষিত বিদ্যালয়গুলিতে গত ১৬ মার্চ থেকে ছুটি চলছে। এমনকি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও স্থগিত রাখতে হয়েছে। মাধ্যমিকের উত্তরপত্র মূল্যায়নের নম্বরও জমা পড়েনি। উচ্চ মাধ্যমিকের উত্তরপত্রও পরীক্ষকদের মধ্যে বণ্টন করা সম্ভব হয়নি। আপাতত ঠিক হয়েছে আগামী ১১ জুন বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন পুনরায় শুরু হবে। সে ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে এই শিক্ষাবর্ষ পিছিয়ে দেওয়া একান্ত আবশ্যক হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয় ১১ জুন খুললে, স্থগিত থাকা উচ্চ মাধ্যমিকের তিন দিনের পরীক্ষা ১৫, ১৭ ও ১৯ জুন নেওয়া হোক। একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা না নেওয়া হলেও, পরবর্তী বছরের পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে প্রশ্নপত্র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হোক। মাধ্যমিকের ফলাফল জুলাই মাসের শেষে ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল অগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রকাশ করা হোক। পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির দ্বিতীয় পর্যায়ভিত্তিক পরীক্ষা অক্টোবর মাসে এবং দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে নেওয়া হোক। পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা ফেব্রুয়ারি মাসে নেওয়া হোক ও ২০২১ সালের নতুন শিক্ষাবর্ষ মার্চ মাসে শুরু হোক। ২০২১ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা মার্চ মাসের শেষে ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এপ্রিল মাসের শেষে নেওয়া যেতে পারে। ২০২০ সালের পুরসভা ভোট হোক অগস্ট মাসে এবং ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট হোক জুন-জুলাই মাস জুড়ে।

দেবাশিস সাঁতরা

শিক্ষক, জামতোড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় (উ: মা:), পুরুলিয়া

ওয়াশিংটন

আমি ও আমার স্বামী কর্মসূত্রে ওয়াশিংটন ডিসির কাছে থাকি। এ বছর ফেব্রুয়ারির শেষে শোনা গেল, ওয়াশিংটন ও নিউ ইয়র্কেও হানা দিয়েছে করোনাভাইরাস। আমেরিকা তখনও এই নিয়ে মাথা ঘামাবার তাগিদ অনুভব করেনি। মার্চের প্রথম সপ্তাহে এখানে মোট আক্রান্ত ছিল ৬০০ থেকে ৭০০-র মধ্যে। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রথম এখানে লকডাউন ঘোষণা করল সরকার। অবাক হয়ে দেখলাম, সবাই সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোলের নির্দেশিকা উপেক্ষা করে, ‘প্যানিক বায়িং’ শুরু করে দিল। কোনও সামাজিক দূরত্ব না মেনে লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত টয়লেট পেপার, স্যানিটাইজ়ার, হ্যান্ড সোপ, দুধ, ডিম, পাস্তা ইত্যাদি কিনল। কাউকে মাস্ক আর গ্লাভস পরে দেখলে তখনও অনেকেই হাসিঠাট্টা করছে। আবার, সব বিয়ার ব্র্যান্ড কিনে মজুত করলেও কোনও অজানা যুক্তিতে করোনা বিয়ার কেউ কিনছে না! আমার স্বামীর অফিস থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ ঘোষণা করে দিল। স্কুল, লাইব্রেরি, জিম, সমস্ত ন্যাশনাল স্পোর্টস লিগ আর অপ্রয়োজনীয় পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেল। ঘরবন্দির আগে আমরা কিছু মুদির সামগ্রী কিনতে গিয়েই বুঝলাম, প্রয়োজনের তুলনায় সামগ্রী কম হতে শুরু করেছে সব দোকানেই। এক সপ্তাহের মধ্যে সব উল্টোপাল্টা হয়ে গেল, আক্রান্তের সংখ্যা আর মৃতের সংখ্যা রোজ বাড়তে শুরু করল। কিন্তু লোকজনের মধ্যে সতর্কতা কোথায়! গোটা দেশটা জুড়েই একটা অবাধ স্বাধীনতার বাতাবরণ। তাই এখানে সহজে কেউ নিজেদের চালচলনে ও ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করে না। তখনও শুনছি ‘স্প্রিং ব্রেক’ পার্টিতে জমায়েত হচ্ছে হাজার হাজার যুবক-যুবতী। কোথাও আন্দোলন চলছে লকডাউন তুলে দেওয়ার দাবিতে। তাদের নালিশ, তারা ‘বিউটি পার্লার’ যেতে পারছে না! 'My body my choice!' 'I want new haircut'— এ সব লেখা নিয়ে তারা আন্দোলনে বেরিয়েছে! আমাদের বাড়ির সামনের পার্কে একটি ওপেন এয়ার জিম আছে, কমিউনিটি জিম বন্ধ বলে ওখানে সবাই ব্যায়াম করা শুরু করেছে। আমাদের ব্যালকনি থেকে রোজ দেখছি, একই যন্ত্রপাতি সবাই ব্যবহার করছে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে! আমরা উপলব্ধি করলাম, কয়েক দিনের মধ্যে কী ভাবে গোষ্ঠী সংক্রমণ চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেল, সিদ্ধান্ত নিতে দেরি আর সিদ্ধান্ত না মানার অবজ্ঞায়।

প্রশস্তি পণ্ডিত

ওয়াশিংটন ডিসি

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement