যোগেশ গওর
‘কবির মৃত্যু’ (আনন্দ প্লাস, ৩০-৫) লেখাটির সঙ্গে কিছু যোগ করি। যোগেশ গওর ১৯ মার্চ ১৯৪৩ সালে উত্তরপ্রদেশের লখনউতে জন্মান। ছাত্রজীবনে শখে কবিতা লিখতেন। ১৭ বছর বয়সে বাবাকে হারান। বন্ধু সত্য প্রকাশের সঙ্গে মুম্বইতে আসেন। তাঁর এক দাদা ফিল্ম জগতের লোক ছিলেন। সেই সূত্রে তাঁর ইচ্ছা ছিল ফিল্ম জগতে কোনও ছোটখাটো কাজ করে জীবন চালাবেন। কিন্তু সেই আত্মীয় তাঁকে কোনও সাহায্য করেননি। সেই দুর্দিনে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় গীতিকার গুলশন বাওরা-র। যোগেশের কয়েকটি কবিতা পড়ে তিনি মুগ্ধ হয়ে যান। এবং পরামর্শ দেন এই বিষয়ে যেন তিনি মনোনিবেশ করেন।
১৯৬২ সালে রবীন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সুরারোপিত ‘সখি রবিন’ ছবিতে প্রথম সুযোগ দেন যোগেশকে গান লেখার জন্য। এই ছবিতে তাঁর লেখা ‘তুম যো আও তো প্যার আ যায়ে’ গানটি মান্না দে ও সুমন কল্যাণপুরের কণ্ঠে বেশ প্রশংসিত হয়।
যোগেশ প্রথম বড় সাফল্য পান ১৯৭১ সালে সলিল চৌধুরীর সুরে ‘আনন্দ’ ছবিতে কাজ করে। এই ছবিতে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে তাঁর লেখা ‘কহিঁ দূর যব দিন ঢল যায়ে’, ‘জিন্দগি ক্যায়সি হ্যায় পহেলি’। এর পর সলিল চৌধুরী ও যোগেশের জুটিতে জনপ্রিয় হয় ‘অন্নদাতা’ (১৯৭২) ছবিতে ‘নয়ন হমারে সাঁঝ সকারে’, ‘সবসে বড়া সুখ’ (১৯৭২) ছবিতে ‘চল চল চল রে’, ‘মেরে ভাইয়া’ (১৯৭২) ছবিতে ‘চঞ্চল মন পর’, ‘রজনীগন্ধা’ (১৯৭৪) ছবিতে ‘কহিঁ বার ইউহিঁ দেখা হ্যায়’, ‘ছোটি সি বাত’ (১৯৭৬) ছবিতে ‘না জানে কিঁউ হোতা হ্যায় ইয়ে’, ‘মিনু’ (১৯৭৭) ছবিতে ‘ধীরে ধীরে হলে সে নিন্দিয়া রানি বোলে রে’, ‘আনন্দ মহল’ (১৯৭৭) ছবিতে ‘নি সা গা মা পা নি সা রে সা’ প্রভৃতি গান। সলিল চৌধুরী সুরারোপিত সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘পালকির গান’ হিন্দি ভার্সনে রূপান্তরিত করেছিলেন যোগেশই। হিন্দি গানটিও গেয়েছিলেন হেমন্ত।
হেমন্ত কুমারের সুরে গান লিখেছিলেন ১৯৭৯ সালে ‘লাভ ইন কানাডা’ ছবিতে। এই ছবিতে শোনা যায় ‘ইস বিশাল ধরতি পর’, ‘মেরে ইয়ার তু ছোড় গম’, ‘খুশিয়াঁ উনকো মিলতি হ্যায়’, ‘রঙ্গ সে রূপ সে’ প্রভৃতি জনপ্রিয় গান।
যোগেশের লেখা প্রচুর উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে আছে শচীন দেব বর্মনের সুরে ‘মিলি’ (১৯৭৫) ছবিতে ‘বড়ি সুনি সুনি হ্যায়’, রাজেশ রোশনের সুরে ‘প্রিয়তমা’ (১৯৭৭) ছবিতে ‘কোই রোকো না’, ‘বাতোঁ বাতোঁ মেঁ’ (১৯৭৯) ছবিতে ‘না বোলে তুম না ম্যায়নে কুছ কহা’, রাহুল দেব বর্মনের সুরে ‘মনজ়িল’ (১৯৭৯) ছবিতে ‘রিমঝিম গিরে সাঁওন’ প্রভৃতি ।
তাঁর শেষ জনপ্রিয় গান শোনা যায় ১৯৯৫ সালে ‘বেওয়াফা সনম’ ছবিতে সোনু নিগমের কণ্ঠে ‘অচ্ছা সিলা দিয়া তু নে মেরে প্যার কা’। যোগেশের সাফল্যের নেপথ্যে সলিল চৌধুরী তথা বাঙালির অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বিশ্বনাথ বিশ্বাস
সল্টলেক
ভুল ধারণা
‘রেশনে দলবাজির নালিশ, পুলিশ আক্রান্ত’ (২৩-৪) শীর্ষক প্রতিবেদন সম্পর্কে খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের পক্ষ থেকে জানাই, গণবণ্টন ব্যবস্থায় বরাদ্দকৃত খাদ্যসামগ্রী যথা চাল, গম অথবা আটা কেবলমাত্র সংশ্লিষ্ট রেশন দোকান (ফেয়ার প্রাইস শপ) থেকে খাদ্য ও সরবরাহ দফতর কর্তৃক ইস্যু করা রেশন কার্ড (AAY, SPHH, PHH, RKSY-I এবং RKSY-II) অথবা ফুড কুপনের বিনিময়ে উপভোক্তারা তাঁদের নির্দিষ্ট বরাদ্দ অনুযায়ী পান। বাদুড়িয়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়া অশ্বত্থতলার রেশন উপভোক্তারা সংশ্লিষ্ট রেশন দোকান থেকে এপ্রিল, ২০২০-এর বরাদ্দকৃত খাদ্যসামগ্রী পেয়েছেন।
কিন্তু আপনাদের প্রতিবেদন থেকে প্রতিভাত হচ্ছে যে উক্ত এলাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ বিলি নিয়ে কিছু অশান্তির ঘটনা ঘটেছে, যার সঙ্গে গণবণ্টন ব্যবস্থায় বরাদ্দকৃত খাদ্যসামগ্রী বণ্টনের কোনও সম্পর্ক নেই। সেই কারণে এই প্রতিবেদন থেকে গণবণ্টন ব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা জনগণের মধ্যে তৈরি হয়েছে।
পূর্ণেন্দু শেখর নস্কর
উপসচিব, খাদ্য ও সরবরাহ দফতর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার
প্রতিবেদকের উত্তর: বাদুড়িয়ায় অভিযোগ যে ব্যক্তিগত ভাবে বিলি করা ত্রাণ নিয়ে, তা প্রতিবেদনে স্পষ্টই লেখা রয়েছে। এ বিষয়ে সে দিনই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যও প্রতিবেদনে রয়েছে। এ-ও ঠিক যে বিক্ষোভকারীদের একাংশ অভিযোগ করেছিলেন, সরকারি সাহায্য বা রেশন তাঁরা ঠিকমতো পাচ্ছেন না। প্রতিবেদনে তা-ও উল্লেখ করা হয়। তবে মূলত ব্যক্তিগত ভাবে ত্রাণ বিলি নিয়েই বিক্ষোভ হয়েছিল। শিরোনামে শুধু ত্রাণ শব্দের উল্লেখ থাকায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়ে থাকলে আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
সভায় গিয়ে
শংকরের “হাওড়া হচ্ছে বেস্টসেলারের জন্মভূমি” (রবিবাসরীয়, ৩১-৫) লেখাটি পড়ে এই চিঠি। আমি হাওড়াবাসী, এক দিন স্যরের, অর্থাৎ অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়ে, এ কথা সে কথার পর জানতে চাইলাম, সভা-সমিতিতে তাঁর কিছু কৌতুককর অভিজ্ঞতা। কয়েকটি বললেন। তাঁর জবানিতেই লিখছি:
হাওড়া জেলার মফস্সল স্কুলে রবীন্দ্র জয়ন্তী করতে গেছি। স্কুলের সম্পাদক ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে স্কুলটি দেখাচ্ছেন। দেখলাম বারান্দায় একটি শ্বেতপাথরের মূর্তি প্রতিষ্ঠিত আছে। লক্ষ করলাম মূর্তিটির মুখের সঙ্গে সম্পাদকের মুখের অদ্ভুত মিল। বললাম, মূর্তিটির মুখ প্রায় আপনার মতো। ইনি কি আপনার বাবা? সম্পাদক বললেন, না, আমারই মূর্তি। আমি মরে গেলে কেউ তো আর মনে রাখবে না। তাই নিজের মূর্তি নিজেই প্রতিষ্ঠা করে গেলাম।
এক বার ডায়মন্ড হারবারের দিকে সভা করতে গেছি ট্রেনে করে। ট্রেন থেকে নেমে গেট দিয়ে বেরোব। সঙ্গে উদ্যোক্তাদের দু’জন। তারা গেট দিয়ে না নিয়ে গিয়ে, প্ল্যাটফর্মের বাইরে বেড়ার ভেতর দিয়ে নিয়ে গেল। বলল, ‘‘আপনি কত বড় মান্য অতিথি। গেটকিপাররা এমন হাঁদা, হয়তো আপনার কাছে টিকিট চেয়ে বসবে। আপনি কত বড় অধ্যাপক মানুষ, আপনার আবার টিকিট!’’ বুঝলাম, আমার টিকিট করেনি।
আর এক বার বাগনানের কাছে একটা স্কুলে রবীন্দ্রজয়ন্তী। আমি সভাপতি। স্কুলের ছেলেমেয়েরা দু’একটা গান করতে না করতে ভয়ঙ্কর ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। সভার সেখানেই ইতি। এখন বাড়ি ফিরব কী করে? প্রধান শিক্ষক মহাশয় বললেন, স্কুলের বেঞ্চিগুলো সাজিয়ে দেবেন। মোটা মোটা ডিকশনারি আছে। সেগুলোকে বালিশ করে, তোফা ঘুমে রাত কেটে যাবে। আমরা যখন রাজি হলাম না, তখন বললেন দামোদরের বাঁধের রাস্তা এমন পিছল সাইকেল রিকশা যাবে না। তিনি সঙ্গে কয়েক জন লোক দিলেন। তখনও বৃষ্টি হচ্ছে। ঝোড়ো বাতাস। হ্যাজাক নিবে নিবে যাচ্ছে। বললেন, এখান থেকে বাগনান তিন মাইল রাস্তা। ধানখেত ও আলের ওপর দিয়ে যেতে হবে। পা টিপে টিপে না চললে আছাড় অনিবার্য। হলও তাই। কাদামাখা আমরা অন্ধকারে মাঠের ওপর দিয়ে চলেছি। অন্ধকারে পায়ে শক্ত শক্ত কী সব ঠেকতে লাগল। জানতে চাইলাম, ইট পাথর না কি? উত্তর এল, না না, হাড়গোড়। এটা শ্মশান কিনা!
অসিত চট্টোপাধ্যায়
হাওড়া
ধর্মস্থান খুলুক
ধর্মস্থান খুলে দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে সমালোচনা হচ্ছে। মনো রাখতে হবে, ধর্মস্থান খোলার সঙ্গে শুধু ধর্মাচরণ নয়, আর্থিক লেনদেনের সম্পর্ক আছে। দীর্ঘ দিন দেবস্থানের দরজা, পুজোপাঠ বন্ধ থাকলে, বহু পুরোহিতের রোজগার বন্ধ হয়। এ ছাড়া পূজাপাঠের সঙ্গে ফুল, ফল, মিষ্টান্ন, এমনকি যাতায়াতের জন্য যানবাহনেরও যোগসূত্র আছে, যা পরোক্ষ ভাবে অনেকের রুটিরুজির ব্যবস্থা করে।
প্রদ্যোৎ পালুই
বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।