—প্রতীকী ছবি।
আমি এক জন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার্থী। বর্তমানে চাকরির দুর্মূল্য বাজারে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘স্টাফ সিলেকশন কমিশন’-এর পরীক্ষাগুলো কোথাও একটু আমাদের বিশ্বাসের অস্তিত্বটা টিকিয়ে রেখেছে। এখানে আর যা-ই হোক, নিয়ম করে পরীক্ষাগুলো হয়। যেমন— এমটিএস, সিএইচএসএল, সিজিএল ইত্যাদি। কিন্তু ইদানীং এই কমিশনের উদ্ভট কাজকর্ম দেখে আমাদের মতো চাকরিপ্রার্থীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। এর কারণ, এই সমস্ত পরীক্ষার ফর্ম ফিল-আপ করার সময়েই যে জ়োনে পরীক্ষার ফর্ম ফিল-আপ করছি, সেখানেই নিজ পছন্দের তিনটি সেন্টার নির্বাচন করতে দেওয়া হয়। কিন্তু যখন পরীক্ষা কেন্দ্রের লিঙ্ক জেনারেট করা হচ্ছে, তখন দেখা যাচ্ছে এক জন পশ্চিমবঙ্গের পরীক্ষার্থীর পরীক্ষার কেন্দ্র ধার্য করা হয়েছে ওড়িশার ভুবনেশ্বরে।
আমার বাড়ি কলকাতা থেকে অনেক দূরে, মুর্শিদাবাদে। মফস্সলের অধিকাংশ পরীক্ষার কেন্দ্রই পড়ে কলকাতায়। অথচ, নিজের পছন্দের পরীক্ষার সেন্টার দেওয়া সত্ত্বেও বাকি যে দুটো অপশন দিয়েছিলাম, সেখানে না দিয়ে একেবারে অন্য রাজ্যে পরীক্ষার সেন্টার দেওয়ার মানে কী? তা হলে কেন ‘স্টাফ সিলেকশন কমিশন’ নিজে পছন্দের তিনটি পরীক্ষার সেন্টার বাছতে বলল? যদি এটাই তাদের নীতি হয়, তা হলে তারা পরীক্ষার সেন্টার চয়েসের অপশনটা তুলে দিক। এত দূরে পরীক্ষার সেন্টার ফেলার কারণে বহু ছাত্রছাত্রীকে নানা অসুবিধায় পড়তে হয়। এই সমস্যা আজ থেকে নয়, অনেক দিন থেকেই হয়ে আসছে। এর থেকে কি আমাদের নিস্তার নেই?
শিবম চৌধুরী, পাতনা, মুর্শিদাবাদ
সরু সাবওয়ে
হাওড়া স্টেশন থেকে মেন লাইনে ভদ্রেশ্বর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। হাজার হাজার নিত্যযাত্রী এই স্টেশন ব্যবহার করেন। স্টেশন থেকে তিনশো মিটারের মধ্যে আছে তিনটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় আর একটি কলেজ। সাবওয়ের অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ রাস্তাটি ছাড়া স্টেশন হয়ে যাওয়ার আর কোনও রাস্তা নেই। এই রাস্তাটি আবার এই অঞ্চলে জিটি রোড আর দিল্লি রোড-কে সংযুক্ত করেছে। প্রচুর গাড়ির যাতায়াত এই রাস্তায়। একটির বেশি গাড়ি ওই সঙ্কীর্ণ সাবওয়ে দিয়ে যেতে পারে না। রোজই, ঘণ্টার পর ঘণ্টা দু’পাশে গাড়ির সারি দাঁড়িয়ে থাকে। পুলিশের কোনও ব্যবস্থা নেই। স্কুল বাস, অ্যাম্বুল্যান্স, টোটো, অটো সব মিলে এক ভয়ঙ্কর অবস্থা হয়। বহু বছর ধরে অনেক আবেদন করার পরও রেল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। দিল্লি রোড প্রশস্ত হওয়ার ফলে এই সাবওয়ের ব্যবহার বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। সাবওয়েতে যানজট থাকায়, বহু স্কুলপড়ুয়া ব্যস্ত রেললাইন টপকে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় অঘটন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
সৌমিত্র সেনগুপ্ত, ভদ্রেশ্বর, হুগলি
চাপানো বিমা
একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে আমার এক তিক্ত অভিজ্ঞতার বিষয়ে এই পত্রের অবতারণা। গত বছর জুন মাসে ওই ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখায় অ্যাকাউন্ট চালু করি। সেখানে টাকা জমা দেওয়ার পর পাসবুক আপডেট করে প্রথমেই দেখা গেল ব্যাঙ্ক ৫০০ টাকা কেটে নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মী জানালেন, ওটা ‘অ্যাকসিডেন্ট ইনশিয়োরেন্স’ বাবদ নেওয়া আর বছরে এর পর থেকে ওই একই দিনে রিনিউয়াল প্রিমিয়াম হিসাবে ওই টাকা কাটা হতে থাকবে। বিনিময়ে গ্রাহক কোনও দুর্ঘটনায় যদি মারা যান এবং সমগ্র প্রমাণপত্র বাড়ির লোক ব্যাঙ্কে দাখিল করতে পারেন, তা হলে নির্দিষ্ট অঙ্কের ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে, আমার টাকা কেটে নিয়ে পলিসি হল, অথচ আমি ঘুণাক্ষরেও জানতে পারলাম না! ব্যাঙ্কের নিজস্ব মোবাইল অ্যাপেও দেখলাম আমাকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে ওই পলিসি ব্যাঙ্ক নিজেই গ্রাহকের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। এবং অটো রিনিউয়াল শুধু করে রাখেনি, আইন বাঁচিয়ে ‘ক্যানসেল পলিসি’ অপশন রেখে তাকে আবার অকেজো করে রেখেছে।
অনিচ্ছায় চাপানো পলিসি বাতিল করে ওই বাবদ কেটে নেওয়া টাকা ফেরতের লিখিত পত্র ব্যাঙ্কে জমা দিলে অফিসার শাখার বাইরের এক জনের নাম আর মোবাইল নম্বর দিয়ে তাঁর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলে নিতে বলেন। আশ্চর্য লাগল, ব্যাঙ্কের অন্যায় ভাবে কেটে নেওয়া টাকা ফেরতের অধিকার শাখা কর্তৃপক্ষের নেই! ফোনে সেই ‘তৃতীয় ব্যক্তি’ “আমার অ্যাকসিডেন্ট ইনশিয়োরেন্স পলিসি বাতিল করে দেওয়া হল” বললেও প্রথম প্রিমিয়ামের টাকা ফেরত না করেই এ বছরে আবার নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই অ্যাডভান্স রিনিউয়াল প্রিমিয়াম কেটে নেয় ব্যাঙ্ক। এর পরই ওই ‘তৃতীয় ব্যক্তি’-কে ফোনে পাওয়া যায়নি। মোবাইল অ্যাপে দেখি, ওই পলিসি আগের মতোই অটো রিনিউয়াল অবস্থায় রয়েছে। একাধিক অভিযোগের কোনও উত্তরই না পেয়ে ব্যাঙ্কের কাস্টমার কেয়ারে ফোন ও ইমেল করি। ব্যাঙ্কের বিভিন্ন অভিযোগ জানানোর ফোরামেও অভিযোগ জানাই। সব জায়গা থেকে একই উত্তর আসে, “ব্যাঙ্কে গিয়ে ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে শীঘ্র সমাধান করে নিন।” সেই মতো কাজ করেও কোনও সুফল না মেলায় অগত্যা কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে ফোন করি ও তাদের অনলাইনে প্রমাণপত্র দাখিল করি।
সেখান থেকে ক’দিন পর অনলাইনে উত্তর আসে, আমাকে না জানিয়ে অনৈতিক ভাবে প্রথম বছরের কেটে নেওয়া প্রিমিয়াম বাদ দিয়ে শুধু দ্বিতীয় বছরের কেটে নেওয়া টাকা ব্যাঙ্ক আমাকে অ্যাকাউন্টে ফেরত দিচ্ছে। অভিযোগের ‘স্টেটাস ক্লোজ়ড’ দেখিয়ে দেয় ওই দফতর। এর পর দীর্ঘ প্রায় দু’মাসেও কোনও টাকা ফেরত না হওয়ায় অনলাইনে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ‘ওম্বুডসমান’-এ সবিস্তারে অভিযোগ দায়ের করি। বৎসরাধিক কালের যন্ত্রণার সমাধান ঘটল অচিরেই, দু’বছরে অনৈতিক ভাবে কেটে নেওয়া টাকা সুদ সমেত অ্যাকাউন্টে ফেরত হয়েছে। এই অভিজ্ঞতা এখানে জানালাম প্রধানত ব্যাঙ্কের গ্রাম, মফস্সলের গ্রাহকদের জ্ঞাতার্থে, যেখানে প্রতি দিন বহু গ্রাহককে এমন হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে।
মধুসূদন দাশ, ঘোষহরিপাল, হুগলি
দুর্নীতি
কিছু দিন আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দু’টি নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হল, যা আগে কখনও হয়নি। ফোর-এ গেটের বাইরে জিনিসপত্র-বোঝাই ট্রলি নিয়ে অপেক্ষা করছি ভাড়া-করা গাড়ির জন্য। গাড়ি আসতেই আচমকা যেন মাটি ফুঁড়ে উদয় হল চার জন। চোখের পলকে বাক্স আর ব্যাগগুলো গাড়ির ভিতরে। তার পর সহাস্য নিবেদন, “ফরেন টাকা দেবেন, স্যর।” অদূরে পুলিশ জিপে পুলিশকর্মী অলস দৃষ্টিতে চেয়ে আছেন। এর পর, ভিআইপি রোডের সন্ধিস্থলে পৌঁছতেই দেখা গেল কয়েক জন পুলিশকর্মী গাড়ি চেক করছেন। ইশারায় থামতে বলে এগিয়ে এলেন এক জন। ড্রাইভার মৃদু হেসে বলল, “অমুকদার মান্থলি।” সরে গেলেন তিনি। ড্রাইভারকে বললাম, “কাগজপত্র ঠিক নেই?” সে কাগজপত্র বাড়িয়ে দিল। কোথাও ত্রুটি পেলাম না। ড্রাইভার বলল, “তবু প্রণামী লাগে। না হলে কেস।”
সৈকত রুদ্র, কলকাতা-১১০
কাজে গাফিলতি
সিউড়ি ১ নম্বর ব্লকের বিএলআরও অফিসে জমি রেকর্ড ও অন্যান্য যে কোনও কাজের জন্য জনগণকে সমস্যায় পড়তে হয়। একটা কাজের জন্য ঘুরতে হয় বার বার। জমিজমা সংক্রান্ত রেকর্ডের ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হতে হয়। মানুষের দুরবস্থা কমাতে তাই জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
জগন্নাথ দত্ত, সিউড়ি, বীরভূম