—ফাইল চিত্র।
কলকাতা শহরের বেশ কিছু জায়গায় ‘এখানে বাস থামিবে না’ লেখা বোর্ড চোখে পড়ে। এই বোর্ডগুলি কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে লাগানো হয়। বোর্ডগুলি মূলত বড় রাস্তার মোড় বা ক্রসিং-এ, উড়ালপুলের শুরু বা শেষ প্রান্তে, বিশেষ কোনও স্থান বা ভবনের সামনে ও আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লক্ষ করা যায়। জনবহুল জায়গায় যানজট এড়ানো ও যানবাহনের গতি মসৃণ রাখাই এই সতর্কবার্তার উদ্দেশ্য।
অথচ, বাস্তবে দেখা যায় প্রতি দিন সকলেই এই সতর্কবার্তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলেছে। যাত্রীরা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ঠিক মোড়ে বা অন্য কোনও স্থানে এই ধরনের সতর্কবাণী লেখা বোর্ডের সামনেই বাস বা ট্যাক্সির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। আবার ট্যাক্সি ও সরকারি-বেসরকারি সমস্ত বাসের চালকগণ রাস্তার ঠিক মোড়েই বা অন্য কোনও স্থানে অপেক্ষারত যাত্রীদের ভিড় দেখলে সেখানেই বাহনটি থামিয়ে যাত্রী তুলতে শুরু করেন। বেশ কিছু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বিশ-পঁচিশ মিটার দূরে যাত্রী-প্রতীক্ষালয় রয়েছে। কিন্তু সেখানে কোনও যাত্রী নেই, বাস-ট্যাক্সিও সেখানে থামছে না। এই ব্যবস্থা বহু বছর ধরে চলছে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ও হতাশাজনক ব্যাপার হল, প্রায় সব জায়গাতেই ট্র্যাফিক পুলিশ উপস্থিত থাকে। তাদের সামনেই যাত্রীরা ও বাস-ট্যাক্সির চালকেরা এই কাজ করে চলেছেন। অথচ, পুলিশ সব কিছু দেখেও না দেখার ভান করে চলেছে।
কলকাতার ট্র্যাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, যে কোনও ক্রসিং থেকে বিশ-পঁচিশ মিটার দূরে ‘এখানে বাস থামিবে’ লেখা বোর্ড দেওয়া হোক, যাত্রীরা যেন ট্র্যাফিক পুলিশ দ্বারা নির্ধারিত স্থানেই বাস-ট্যাক্সির জন্য অপেক্ষা করেন, তা নিশ্চিত করা হোক। এর অন্যথা হলে বাস/ট্যাক্সি ও সংশ্লিষ্ট যাত্রী— উভয়ের কাছ থেকে যুক্তিগ্রাহ্য জরিমানা আদায় করা হোক। এক দিকে সতর্কবার্তা লিখে রাখা এবং অন্য দিকে সেই সতর্কবার্তা উপেক্ষাকারীদের বছরের পর বছর ধরে প্রশ্রয় দেওয়া— এই দ্বিচারিতা বন্ধ হোক।
ইন্দ্রনীল ঘোষ, লিলুয়া, হাওড়া
মুখ বন্ধ
শহরাঞ্চলে নিকাশিব্যবস্থায়, বিশেষ করে ছোট-মাঝারি অলি-গলি বা রাস্তার নর্দমাগুলির মুখ সম্পূর্ণ খোলা থাকে। ফলে গৃহস্থালির ব্যবহার্য প্লাস্টিক-আবর্জনা-সহ বিভিন্ন অপচনশীল পদার্থ সরাসরি নর্দমায় গিয়ে মেশে। বর্তমানে বিভিন্ন সময়ে দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। দিল্লিতে যমুনার জলস্তর সামান্য কয়েক সেন্টিমিটার উপরে উঠে গেলেই চারিদিক জল থৈ থৈ করে। আর পশ্চিমবঙ্গের মতো নদীবেষ্টিত রাজ্যে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। এই খোলা মুখ নর্দমায় পতিত হওয়া প্লাস্টিক বা অপচনশীল বর্জ্য পদার্থই নিকাশিব্যবস্থাকে অচল করে দেয়। ফলে, বর্ষার অল্প বৃষ্টিতেই জল দাঁড়িয়ে যায় দীর্ঘ ক্ষণের জন্য। এই ধরনের নর্দমাগুলি পরিষ্কারের ক্ষেত্রে সাফাইকর্মী বা প্রশাসন, উভয়েরই সদর্থক মনোভাব নেই। দিন দিন বিশ্ব উষ্ণায়ন যেখানে আমাদের গ্রাস করছে, সেখানে নিকাশিব্যবস্থাকে এমন ভাবে সাজানোর প্রয়োজন যাতে সংস্কারজনিত অভাবে বা অপরিষ্কার পরিকাঠামোর কারণে রাস্তার নীচের জল কোনও ভাবেই উপরে উঠে না আসতে পারে। শহরাঞ্চল হোক বা গ্রামাঞ্চল, এই ধরনের খোলা মুখ নর্দমা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক এবং অপচনশীল বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের জন্য যথাযথ পরিকাঠামো গড়ে তোলা হোক।
শুভজয় সাধু, শ্রীরামপুর, হুগলি
কলম সঙ্গে
আমি এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার। বর্তমানে গোবরডাঙা থানায় কর্মরত। গোবরডাঙা এলাকার বিভিন্ন ব্যাঙ্কে আমাদের ডিউটি করতে হয়। কিন্তু ডিউটি করতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই বিরক্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। ব্যাঙ্কে কাজ মেটাতে আসা অধিকাংশ মানুষ কলম নিয়ে আসেন না। তাঁরা ফর্ম পূরণের জন্য আমাদের কাছে কলম চাইলে মানবিকতার খাতিরে তাঁদের কলম দিতে হয়। অথচ, কাজ মিটে গেলে অনেক গ্রাহকই কলমটি ‘নিজের মনে করে’ নিয়ে চলে যাচ্ছেন! আমার মনে হয়, প্রত্যেক গ্রাহকেরই উচিত কলম নিয়ে ব্যাঙ্কে আসা। প্রত্যেকের হাতে দামি দামি স্মার্টফোন কিংবা আইফোন শোভা পেলেও ব্যাঙ্কে আসার সময় একটা কলম থাকে না। অথচ, কাজ মেটানোর সময় বিশ-পঞ্চাশ হাজারের মোবাইল নয়, মহার্ঘ হয়ে ওঠে তিন টাকা মূল্যের ওই কলমখানিই!
সৈকত কর্মকার, গোবরডাঙা, উত্তর ২৪ পরগনা
জল নষ্ট
জাতীয় জলজীবন মিশন প্রকল্পে ভারতের অধিকাংশ গ্রামেই বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহ শুরু হয়েছে। সকালে আর দুপুরে দু’ঘণ্টা করে সেই নলবাহিত জল বাড়িতে পৌঁছচ্ছে। শক্তিশালী সাবমার্সিবল পাম্পের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জলকে ট্যাঙ্কে তুলে নিয়ে এই সরবরাহ হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয়, গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতেই সেই জল ধারণ বা সঞ্চয় করে রাখার মতো রিজ়ার্ভার নেই। তাই গৃহস্থ ঘরের দু’-তিনটে বালতি ভরে ফেলার পর দেখি খোলাই থাকছে জলের ট্যাপ। সে জল অনর্গল বেরিয়ে ড্রেনে গিয়ে মিশছে। এক দিকে ভূগর্ভস্থ জলস্তর দ্রুত নিম্নগামী আর অন্য দিকে মানুষের অসচেতনতায় অমূল্য পানীয় জলের এই অপচয় আমাদের কঠিন ভবিষ্যতের দিকে দ্রুত টেনে নিয়ে যাবে। জাতীয় জলজীবন মিশনের তরফে মানুষকে সচেতন করতে যে সার্বিক প্রচারের প্রয়োজন ছিল, তারও অভাব এ ক্ষেত্রে প্রকট।
মধুসূদন দাশঘোষ, হরিপাল, হুগলি
নজরদারি কই
এই বছরের পয়লা বৈশাখে বাড়ির লোকেদের নিয়ে ভিআইপি রোড-এ অবস্থিত একটি বিখ্যাত মিষ্টান্ন ও শুকনো খাদ্যদ্রব্যাদি প্রস্তুতকারক সংস্থার আউটলেটে খেতে গিয়েছিলাম। খেয়ে ফেরার সময় বাড়ির জন্য ওই সংস্থার শোনপাপড়ি ও মিল্ক পেঁড়া কিনি। বাড়িতে এসে বয়ঃজ্যেষ্ঠদের সেগুলি দিতে গিয়ে দেখি সব ক’টি মিষ্টি কালো ছত্রাকে ছেয়ে আছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে দোকানের কাস্টমার কেয়ার-এ ফোন করি। কিন্তু কোনও উত্তর পাইনি। ওদের ফিডব্যাক সংক্রান্ত ইমেল আইডি-তে চিঠি পাঠাই, কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পরেও কোনও উত্তর আসেনি। লোকে বিখ্যাত ব্র্যান্ডের জিনিস চোখ বন্ধ করে কেনে। কিন্তু তাতে এক্সপায়ারি ডেট-এর মধ্যে থাকা সিল করা জিনিসে যদি ছত্রাক হয়, তবে সরকারের গুণমান নিয়ন্ত্রণ নিয়েই তো প্রশ্ন উঠে যায়। বয়স্ক ও শিশুরা ওই মিষ্টি খেলে তো অবধারিত ভাবে তাদের বিষক্রিয়া হত। তার নৈতিক দায়ভার কে নিত? গ্রাহকদের প্রতি এই অবহেলা সত্যিই অনভিপ্রেত। সংস্থার কর্তৃপক্ষ যেন নিঃশর্ত ভাবে ভুল স্বীকার করে ওই ব্যাচের সমস্ত মিষ্টি বাজার থেকে উঠিয়ে নেন এবং প্যাকেজিং-এর গলদও শুধরে নেন। একই সঙ্গে এই বিষয়ে নজরদারির জন্য সরকারি আধিকারিকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
স্বপ্নেন্দু মুখোপাধ্যায়, বেলঘরিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা
নিয়মের হেরফের
ব্যাঙ্কের লকার ভাড়া করতে গেলে এক-একটা ব্যাঙ্ক এক-এক রকম নিয়ম ধার্য করে। গ্রাহক ব্যাঙ্কে আবেদন করবেন, সিরিয়াল অনুসারে তার আবেদন গ্রাহ্য হবে, এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু বাস্তবে ব্যাঙ্কের লকার পাওয়া খুব সহজ নয়। নতুন নিয়ম বলছে, ব্যাঙ্ক ইচ্ছে করলে তিন বছরের লকার ভাড়ার সমান টাকা ফিক্সড ডিপোজ়িট হিসেবে রাখতে পারে। লকার ভাড়ার সুনির্দিষ্ট নিয়ম থাকলে ভাল হয়।
অরূপরতন আইচ, কোন্নগর, হুগলি