আবার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বেড়ে গেল। এই নিয়ে এক মাসে দু’বার ২৫ টাকা করে বেড়ে হল ৯১১ টাকা, যা ক্রমশ নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ‘উজ্জ্বলা’ যোজনার মাধ্যমে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ করছেন। এই ভাবে মাসে দু’বার ২৫-৩০ টাকা করে দাম বাড়ালে দিন-আনা-দিন-খাওয়া নিম্ন মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত মানুষ কী ভাবে সেই খরচ বহন করতে পারবেন?
আগে তবু বেশি টাকা দিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার নিলে খানিকটা টাকা ভর্তুকি মিলত। সেই টাকা গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ত। তার পরিমাণও খুব কম ছিল না। কিন্তু বেশ কয়েক মাস আগে থেকে সেই ভর্তুকি গিয়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৯ টাকা ৫৭ পয়সায়, যা না দিলেও তেমন কোনও ক্ষতি নেই।
এর উপরে আছে গ্যাসের ডেলিভারি-বয়দের জোরজুলুম। তাঁরা কোম্পানি নিযুক্ত কর্মচারী হয়েও গ্যাস সিলিন্ডার বাড়িতে সরবরাহ করার জন্য টাকা নিয়ে থাকেন। সেই টাকার পরিমাণ কোথাও কোথাও সিলিন্ডার পিছু ৫০-৬০ টাকাও হয়ে যায়। এবং তাঁদের দাবিমতো টাকা দিতে অস্বীকার করলে বিভিন্ন ধরনের হুমকিও দেওয়া হয় গৃহকর্তাকে। অনেক সময়ই বলা হয়, তাঁদের দাবিমতো টাকা না দেওয়া হলে পরবর্তী সময়ে কোনও ডেলিভারি বয় ওই বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করবেন না। তখন এক প্রকার
বাধ্য হয়েই তাঁদের সেই টাকা
মেটাতে হয় গৃহকর্তাকে। সরকারের উচিত নয় কি সাধারণ মানুষের কথা ভেবে কড়া হাতে এই সমস্ত সমস্যার সমাধান করা?
ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য
চুঁচুড়া, হুগলি
সাপের কামড়
সংবাদপত্র খুললে হামেশাই চোখে পড়ছে সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা। বিশেষ করে বর্ষার মরসুমে সাপে কাটার সংখ্যা সর্বাধিক। গ্রামাঞ্চলে মানুষের সচেতনতার অভাবই এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। মশারি না টাঙিয়ে শোয়া, মাটির বাড়িতে গর্ত থাকা, রাতের অন্ধকারে টর্চ ছাড়াই পথ চলা-সহ নানা কারণে সাপে কাটার ঘটনা বেড়েই চলেছে। পক্ষান্তরে, সাপে কাটা রোগীকে দ্রুত কাছাকাছি হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে স্থানীয় ওঝা বা গুনিনের কাছে ঝাড়ফুঁক করানো হচ্ছে। ফলে মৃত্যুর সংখ্যায় রাশ টানা যাচ্ছে না। এমনকি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নির্বিষ সাপ কামড়ালেও মানসিক উদ্বেগ ও মৃত্যুভয় থেকেও প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে।
সাপে কাটলে তখনই কী কী করণীয়, সময় নষ্ট না করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসা, সর্বোপরি কুসংস্কারের হাত থেকে বেরিয়ে আসা— এ সব নিয়ে প্রশাসনের তরফে স্থানীয় স্তরে প্রচারাভিযান চালানো দরকার। পাশাপাশি প্রতিটি ব্লক স্তরের হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিভেনম মজুত রাখারও দাবি জানাচ্ছি।
মৃণাল কান্তি ভট্টাচার্য
বেরুগ্রাম, পূর্ব বর্ধমান
কেরানি চাই
বেশ কিছু বছর ধরে দক্ষিণ দিনাজপুর-সহ অন্য জেলাগুলোর চক্র সম্পদ কেন্দ্র (সিআরসি)-সহ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদগুলো (ডিপিএসসি) প্রয়োজনীয় স্থায়ী কেরানির অভাবে কমবেশি ধুঁকছে। অথচ, প্রতি দিন শিক্ষা দফতরের কাজ বেড়ে চলেছে। শিক্ষার্থীদের সব রকম তথ্য বাংলার শিক্ষা পোর্টালে আপলোড করা থেকে শুরু করে শিক্ষকদের প্রতি মাসের বেতন, শিক্ষার্থীদের জামা-জুতো দেওয়া, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পেনশনের কাজ, শিক্ষিকাদের চাইল্ড কেয়ার লিভ-সহ জানা-অজানা অনেক কাজ প্রতি দিন এসআই অব স্কুলস-এর দফতর এবং ডিপিএসসিগুলো থেকে করতে হয়। বস্তুত, এ সব কাজের জন্য প্রয়োজন দক্ষ কেরানি। অথচ, বেশ কিছু বছর ধরে এই পদগুলোতে (গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি ইত্যাদি) নিয়োগ বন্ধ। তাই কাজের প্রয়োজনে বিভিন্ন স্কুল থেকে এই সব কাজে দক্ষ শিক্ষকদের চক্র সম্পদ কেন্দ্র তথা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলোর কাজে যুক্ত করেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা আধিকারিকরা।
সব ক্ষেত্রে যে সহজ ভাবে মেনে নিয়ে কেরানির কাজে শিক্ষকরা যুক্ত হচ্ছেন, তা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই নিরুপায় হয়ে কাজ করছেন। এতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। প্রথমত, তারা নিজের স্কুলের সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে পাচ্ছে না। অর্থাৎ, শিক্ষার ঘাটতি হচ্ছে। আবার যে স্কুলগুলো থেকে অফিসের কাজে শিক্ষকদের নেওয়া হয়, সেখানে সরকারি হিসাবে শিক্ষকের কমতি না থাকায় নতুন শিক্ষক পাচ্ছে না স্কুলগুলো। শূন্য পদে কেরানি নিয়োগ করলে রাজ্য বা জেলার বেশ কিছু শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান হবে। আবার যে স্কুলগুলো থেকে অফিসের কাজে শিক্ষকদের নেওয়া হয়েছে, সেখানে বেশ কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলির সুযোগ পেলে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত বজায় থেকে শিক্ষার মানোন্নয়ন ঘটবে।
রাজ্য বা জেলার শিক্ষা দফতরের কাছে অনুরোধ, সংশ্লিষ্ট পদে কেরানি নিয়োগ করে শিক্ষকদের নিজের নিজের বিদ্যালয়ে ফেরত পাঠালে শিক্ষার মান বজায় থাকবে, যা আমাদের মতো প্রান্তিক জেলার ক্ষেত্রে ভীষণ উপযোগী।
গৌরী দাস
বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর
করদাতার সমস্যা
ভারত সরকারের অধীনস্থ সংস্থা থেকে অবসর নিয়েছি। এ বছর ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আয়করদাতাদের সুবিধার্থে সরকার নতুন ওয়েবসাইটের ব্যবস্থা করেছে। ৭ জুন থেকে শুরু হয় নতুন ওয়েবসাইটটি। এ ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল, এখানে গত বছরের রিটার্ন অনুযায়ী এক জন করদাতার তথ্য আগে থেকেই পূরণ করা থাকবে। কিন্তু বাস্তবে তা নেই। গত ২৬ জুলাই রিটার্ন ফাইল করতে গিয়ে দেখি, নতুন যে সব ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট সংযোজন করেছিলাম, এখনও সেই সব তথ্য আপডেট হচ্ছে না। আমার পেনশন অ্যাকাউন্ট আগে ইউনাইটেড ব্যাঙ্কে ছিল, কিন্তু বর্তমানে তা পঞ্জাব ব্যাঙ্কে পরিবর্তিত হয়েছে। তার ফলে আইএফএসসি কোড পরিবর্তন হওয়ায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আপডেট হচ্ছে না। কী করব বুঝতে পারছি না। সরকার যদি ওয়েবসাইট নির্মাতাদের এই অবস্থার সুরাহার নির্দেশ দেয়, তা হলে আমাদের মতো করদাতাদের উপকার হয়।
সিদ্ধেশ্বর সরকার
দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান
স্মার্টকার্ড
একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য গত ১৮ অগস্ট শোভাবাজার সুতানুটি স্টেশন থেকে মেট্রো ধরতে যাই। কিন্তু স্মার্টকার্ডটি নিষ্ক্রিয় থাকায় মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ করতে অসমর্থ হই। অতঃপর নিয়মানুযায়ী, শোভাবাজার সুতানুটির স্টেশন আধিকারিকের কাছে সমস্ত তথ্য-সহ নিষ্ক্রিয় কার্ডটি জমা দিয়ে সিকিয়োরিটি ডিপোজ়িট-সহ ব্যালান্স টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আবেদন করি। সংশ্লিষ্ট অফিসে আবেদনটি জমা নিয়ে তথ্য রেকর্ড করে দিন সাতেক বাদে আসতে বলা হয় আমাকে। কথামতো আমি ২৮ অগস্ট সেখানে যাই। কিন্তু আমাকে যে টাকা ফেরত দেওয়া হয়, তা ছিল সিকিয়োরিটি ডিপোজ়িট বাদ দিয়ে। প্রশ্ন করে জানতে পারি, স্মার্টকার্ডের টাকা ফেরতের সময় সিকিয়োরিটি ডিপোজ়িট বাদ দেওয়া হয়। যত দূর জানি এ ক্ষেত্রে সাধারণ নিয়ম হল, কোনও সিকিয়োরিটি ডিপোজ়িটের প্রয়োজন শেষ হলে, তা ফেরত দেওয়া। তা হলে মেট্রোর ক্ষেত্রে কেন তার ব্যতিক্রম হবে? আমাকে আবার স্মার্টকার্ড করতে হল, ওই একই পরিমাণ টাকার সিকিয়োরিটি ডিপোজ়িট সহকারে। এটা কি যুক্তি অনুযায়ী যথাযথ? আশা করি, মেট্রো কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করে এমন উদ্ভট নিয়ম তুলে দিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা করবেন এবং সিকিয়োরিটি ডিপোজ়িটের টাকাও সকলকে
ফেরত দেবেন।
অভিনন্দন দাস
কলকাতা-১২২