ভারত তথা বাংলা যখন স্বাধীনতা সংগ্রামে উত্তাল, তখন বহরমপুর সেন্ট্রাল জেলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও কাজী নজরুল ইসলাম বন্দি ছিলেন। আজ বহরমপুরে যেটা মানসিক হাসপাতাল, সেটা ছিল তৎকালীন বহরমপুর সেন্ট্রাল জেল। আজও সেখানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র ও কাজী নজরুল ইসলামের কারাগারের কক্ষ দু’টি অনাদরে পড়ে রয়েছে। রাজ্য সরকার ও বহরমপুর প্রশাসনের কাছে আবেদন, ওই কক্ষ দু’টিকে সংস্কার করে যাতে নেতাজি ও নজরুলের একটি সংগ্রহশালা বা নেতাজি-নজরুল চর্চা কেন্দ্র গড়ে তোলা যায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ
করা হোক।
আরও জানাই যে, ওই কক্ষ দু’টিকে যেন খুলে দেওয়া হয় গবেষণামূলক কাজের জন্য। কারণ, মুর্শিদাবাদ জেলার মহাফেজখানাতে ওই সময়কার অনেক তথ্য আজও বর্তমান। ওই সমস্ত নথি যদি কক্ষ দু’টিতে রাখা যায়, তা হলে আগামী প্রজন্মের উপকার হবে। নেতাজি ও নজরুলের কারাকক্ষ দু’টিকে সংস্কার করার জন্য মুর্শিদাবাদ জেলার পূর্ত দফতরকে বহু বার আবেদন-নিবেদন করেও কোনও ফল পাওয়া যায়নি।
অপূর্ব্ব কুমার রায় চৌধুরী, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ
ক্লিনিকের দুরবস্থা
সীমিত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ছোট-বড় শহর তো বটেই, গ্রামগঞ্জেও বহু সংখ্যক বেসরকারি ক্লিনিক অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার কাজ বছরের পর বছর চালিয়ে যাচ্ছে। অভিজ্ঞ ডাক্তারবাবুরা সেখানে এসে নির্দিষ্ট ফি-র বিনিময়ে অসুস্থকে সুস্থ করার চেষ্টায় ব্রতী হচ্ছেন। কিন্তু, এটাও লক্ষ করেছি, ডাক্তারবাবুরা বিজ্ঞাপিত সময়ে প্রায় কখনও আসতে পারেন না। ফলে সমস্যায় পড়েন রোগী এবং তাঁদের সঙ্গে আসা মানুষরা।
অনেক জায়গায় রোগী ও তাঁর সঙ্গে আসা পরিজনদের জন্য কোনও ভাল শৌচাগার অবধি নেই। এমনকি সকলকে স্বস্তিতে বসে থাকার সুবিধাটুকু পর্যন্ত অনেকে দেন না। একটা ক্লিনিক পরিচালনার জন্য আইনের কী কী শর্ত পূরণ করতে হয়, সেটা আমার জানা নেই। এও জানি না, রোগীদের সেই ক্লিনিকে চিকিৎসা পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার জায়গা, পানীয় জল, শৌচাগারের সুবিধা দেওয়াটা আইনে বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে কি না। তবে, আইনে থাকুক, বা না থাকুক, অবিলম্বে এই ব্যবস্থা চালু করা হোক। ডাক্তারবাবুরাও এই সুবিধাগুলি যে ক্লিনিক দিতে পারবে না, সেখানে যুক্ত না থাকার ঘোষণা করলে তাঁদের সদিচ্ছা সম্পর্কে আমরা আশ্বস্ত হব। ক্লিনিকগুলিও বাধ্য হবে উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে।
দীপক ঘোষ, সাদপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
পেনশনে দেরি
আমি ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আমোদপুর জয়দুর্গা হাই স্কুলের গ্রন্থাগারিকের পদে যোগদান করেছিলাম এবং ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি উক্ত পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার পেনশন চালু হয়নি। অবসরকালীন প্রাপ্য গ্র্যাচুইটি ও পেনশন কমিউটের টাকাও এখনও আটকে আছে। প্রভিশনাল পেনশনও আমি পাচ্ছি না। গত ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ সালে স্কুল থেকে আমার ই-পেনশনের হার্ডকপি বীরভূম ডিআই অফিসে জমা পড়লেও কোনও এক অজ্ঞাত কারণে পেনশন অনুমোদনের প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ফলে দীর্ঘ চার বছরের বেশি সময় ধরে আমি চরম হয়রানির শিকার। এই পরিস্থিতিতে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ-সহ সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করছি। একই সঙ্গে পেনশন অনুমোদনে অহেতুক বিলম্বের দরুন এই সংক্রান্ত সরকারি আদেশ কার্যকর করার ব্যাপারে আবেদন জানাচ্ছি।
অশোক কুমার প্রামাণিক, সাঁইথিয়া, বীরভূম
প্রতারণা কেন
আমি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সংস্থা হিন্দুস্থান পেট্রলিয়ামে অনলাইনে গ্যাস বুকিং করি, যার বুকিং নং ৫৪৭৬২৫ এবং ওই দিন বিকেলেই আমাকে মেসেজ করে জানানো হয়, ওই বুকিং নম্বরের জন্য যে ক্যাশমেমো কাটা হয়েছে, তার নম্বর ১৫৭৯৭১৫, তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, মূল্য ৭৪৬ টাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে সিদ্ধান্ত নেয় গ্যাস ও তেলের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে। সুতরাং, আমার ক্যাশমেমো কাটার পর গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু ১৬ ফেব্রুয়ারি গ্যাস ডেলিভারি করার সময় যে ক্যাশমেমো দেওয়া হয়, সেখানে আগের নম্বরের পরিবর্তে ১৫৮০৮১২, তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ এবং মূল্য ৭৯৬ টাকা লেখা ছিল। এই ক্যাশমেমো নম্বর ও দাম পরিবর্তনের ব্যাপারে গ্যাস সংস্থা থেকে আমাকে মেসেজ করে জানানো হয়নি! সামান্য পঞ্চাশ টাকার জন্য ক্রেতাদের সঙ্গে কেন এই শঠতা ও প্রতারণা?
পার্থসারথী মণ্ডল, কৃষ্ণনগর, নদিয়া
স্টেশনে গান
বোলপুর রেলওয়ে স্টেশনের লাউডস্পিকারগুলিতে ট্রেন আসা-যাওয়ার বিভিন্ন দরকারি ঘোষণার ফাঁকে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজানোর যে সিদ্ধান্ত বর্তমানে স্টেশন কর্তৃপক্ষ তথা পূর্বরেল নিয়েছে, তাকে সাধুবাদ জানাই। স্টেশনের যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক কোলাহলের মাঝে শ্রুতিমধুর এই গান নিত্যযাত্রীদের কাছে প্রাণের আরাম, মনের খোরাক এবং বোলপুর ভ্রমণার্থীদের কাছে তা যেন পূর্ব রেলের তরফে অস্ফুট বার্তা— রবিতীর্থে স্বাগত।
প্রণব কুমার সরকার, বোলপুর, বীরভূম
নিমের রোগ
জয়দেব দত্ত ‘বিপন্ন নিম’ (সম্পাদক সমীপেষু, ১৩-২) পত্রে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় নিমগাছের মারণরোগের কথা জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, সেখানে গাছের পাতা শুকিয়ে ঝরে পড়ার পর পূর্ণবয়স্ক গাছগুলো মরে যাচ্ছে। সেই প্রসঙ্গে জানাই যে, আমাদের পাড়ার নিমগাছগুলোর পাতাও হলদে হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। এই গাছগুলোও শেষে মরে যাবে কি না, সন্দেহ হচ্ছে।
ষষ্ঠীচরণ মণ্ডল, পুরুলিয়া
গান শিখে গান
বর্তমানে গান না শিখে গাওয়ার চল বেড়েছে। বাদ্যযন্ত্র বাজাতে গেলে সেটা না শিখে বাজানো সম্ভব হয় না। কিন্তু গানের ক্ষেত্রে মানুষ এই ‘শেখার পর গাওয়া’কে কেন প্রাধান্য দেয় না, বোঝা কঠিন। শুধু শুনে গান গাওয়ার চেষ্টা করলেই সেটা গান হয় না। সঙ্গীতের গুরুত্বপূর্ণ ধারা হল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। যাঁরা ভাবেন, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত খুব একঘেয়ে এবং অপ্রয়োজনীয়, তাঁদের কোনও ধারণা নেই এই ধারার গুরুত্ব এবং অবদান সম্পর্কে। এঁরা লতা মঙ্গেশকর,আশা ভোঁসলে, রফিজি বা এই যুগের অরিজিৎ সিংহ, শ্রেয়া ঘোষালের গান শুনে মুগ্ধ হয়ে যান। অথচ, ভেবে দেখেন না এই গলার পিছনে এঁদের সাধনা, কষ্ট, এবং রেওয়াজের কথা।
মানুষের মস্তিষ্ক যখন একই সুর বার বার শোনে এবং সেটার বৈচিত্র যদি একটু কম থাকে, তা হলে সহজে এই সুরকে মস্তিষ্ক জমা রাখে। পরে যখন কেউ সেটা গাইতে চান, তখন সুরটা ভেবে অন্ধ ভাবে গান। অর্থাৎ, তাঁর মস্তিষ্ক যা মুখস্থ করেছে, সেটাই তিনি বার করার চেষ্টা করেন গলা দিয়ে। কেউ শিখে গাইছেন, না কি না-শিখে গাইছেন, সেটা তাঁর গলার সুর লাগানো শুনে ধরে ফেলা যায়। কিন্তু অধিকাংশ শ্রোতাই এই পার্থক্য না বুঝে প্রকৃত শিল্পী এবং তাঁর সাধনাকে অসম্মান করে ফেলেন।
না শিখে গান গাইলে আখেরে ক্ষতি হবে সঙ্গীত জগতেরই। দু’দিন গান গেয়ে হারিয়ে যাবেন সেই শিল্পী। রিয়্যালিটি শো’র ভাল ভাল প্রতিভার হারিয়ে যাওয়ার পিছনে কিছুটা এমন মানসিকতার অবদান আছে।
সমর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সামতা, হাওড়া