ক্রিকেট্মাঠে রবীন্দ্রনাথ ।
ইডেনে ভারত বনাম বাংলাদেশ দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচ দেখতে, কলকাতার স্থানীয় বাঙালি দর্শকের পাশাপাশি মাঠে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের দর্শক। এমন দু’টি দেশের মধ্যে ম্যাচ হচ্ছে, যাদের জাতীয় সঙ্গীত লিখেছেন এক জনই। গ্যালারিতে থাকা কিছু মানুষ যখন এই আবেগে ভেসে চলেছেন, একই সময়ে বাঙালিকে কালিমালিপ্ত করার প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত ছিলেন এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে রবীন্দ্রনাথের একটি বিখ্যাত গানের বিকৃত সংস্করণ। কদর্য গালিগালাজ-পূর্ণ, বিকৃত এই গানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা তো দূরস্থান, গানটিকে সমস্বরে অনেকে গাইছিলেন ইডেনের গ্যালারিতে, ম্যাচ চলাকালীন। বাংলাদেশের মানুষের সামনে কলকাতার যে অপসংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হল এর মাধ্যমে, তা আন্দাজ করার ক্ষমতা হয়তো হারিয়ে ফেলেছে যুবসমাজ। রবীন্দ্রনাথ রচিত জাতীয় সঙ্গীতদ্বয় ও তাঁরই একটি গানের অশ্লীল সংস্করণ, প্রবল উৎসাহে দুই-ই গাওয়া হল, এই অদ্ভুত বৈপরীত্যের জন্যও ম্যাচটি মানুষের মনে দাগ কেটে থাকবে। বাঙালি জাতি তথা সমকালীন যুবসমাজের আর কত অবনতি ঘটে, সেটাই দেখার।
অনিকেত কর্মকার
কলকাতা-১৫০
কেন অসম্মান?
পার্শ্ব শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে বহু মতামত শুনছি। অনেকেই আমাদের পড়াশোনা বা শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। সবিনয় জানাই, আমি নিজে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এসসি এবং বি এড করেছি। আমাদের স্কুলে চার জনের মধ্যে তিন জনেই
এম এ বি এড বা ডি ইএল এড। বাঁকুড়া শহরের বিভিন্ন স্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক বা শিক্ষিকাদের মধ্যে বেশির ভাগই এম এ বা এম এসসি এবং প্রত্যেকেই বি এড বা ডি ইএল এড। জানি এমনও পার্শ্ব শিক্ষক বা শিক্ষিকা আছেন যাঁরা পিএইচ ডি করেছেন। আমাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কোন অংশে কম, ঠিক বুঝতে পারলাম না।
দ্বিতীয়ত, যে হেতু আমরা এসএসসি দিয়ে আসিনি, অনেকেই বলছেন আমাদের নিয়োগ-প্রক্রিয়া যথাযথ নয়। এসএসসি এসেছে ১৯৯৮ সালে। তার আগে এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ-এর মাধ্যমে স্কুলে যে ভাবে নিয়োগ হত— ঠিক সেই ভাবেই ক্লাস ডেমনস্ট্রেশন, ভাইভা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে আমাদের নিয়োগের প্যানেল তৈরি হত। সেই প্যানেল স্যাংশন্ড হত সর্বশিক্ষা কমিশনের মাধ্যমে— তবে আমরা নিযুক্ত হতাম। সুতরাং আমাদের নিয়োগও যথাযথ।
তৃতীয়ত, আমাদের মধ্যে অনেকেই ২০১২ এবং ২০১৫ সালের আপার প্রাইমারি টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ— কিন্তু আইনি জটিলতায় দুর্ভাগ্যবশত এখনও সুবিচার পাইনি।
আমাদের আন্দোলন ন্যায্য দাবির জন্য, আমাদের অধিকারের জন্য— তাই আমাদের অসম্মান করবেন না।
মিঠু লায়েক
জুনবেদিয়া মোড়, বাঁকুড়া
গণতন্ত্র হত্যা
জয়প্রকাশকে বেধড়ক মেরে, লাথি মেরে ফেলা হল ঝোপে। এখানে কোন দলের নেতা বা কর্মী লাঞ্ছিত হলেন, সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা, এক জন মানুষের উপর জুলুম করা হয়েছে। তাঁর মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই নিরিখেই এই জাতীয় লজ্জাজনক ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানানো দরকার। কোনও সুস্থ, আত্মসম্মানবিশিষ্ট মানুষেরই এই ঘটনায় রাগ ও দুঃখ হবে। কিন্তু এই রাজ্যে লোকে হাসছে। হাসির কারণ এই নয়, ব্যাপারটি লোকের ভাল লেগেছে। গণতন্ত্রের লাঞ্ছনাও আজ গুরুত্ব হারিয়েছে। মানুষ এগুলোকে রাজনৈতিক তামাশা হিসেবে দেখছে। এই রাজ্যে গণতন্ত্রের হত্যা, মানুষের আত্মমর্যাদাবোধে আঘাত করে না। রাজনৈতিক দলের দুর্বিনীত আচরণকে, তাকে ভোট না দেওয়ার কারণ হিসেবে অনেকেই গণ্য করে না। দলগুলি খুব ভাল করে এটা বোঝে বলেই, গণতন্ত্রের নামে ভণ্ডামি এই রাজ্যে বন্ধ হয় না।
প্রণব রাহা
দুর্গাপুর
চলছে চলবে
জয়প্রকাশের নিগ্রহের প্রেক্ষিতে রচিত ‘ছি’ (২৭-১১) সম্পাদকীয়টিতে বলা হয়েছে, ‘‘কোনও সভ্য দেশে এমন ঘটনা ঘটিতে পারে, ভাবিতে কষ্ট হয়।” আমাদের দেশ কি সত্যিই সভ্য? দ্বিতীয়ত, সভ্য দেশের প্রশাসন যদি ক্ষমতাসীন দলের ‘দলদাস’-এ পরিণত হয়ে, মেরুদণ্ডহীনতার প্রকাশ ঘটাতে লজ্জা বোধ না করে, তা হলে এমন ঘটনা দেখতেই কি আমরা অভ্যস্ত হব না? আরও লেখা হয়েছে, “প্রার্থী হইবারও প্রয়োজন নাই, কাহাকেও কি এমন ভাবে পদাঘাত করা চলে?” যেখানে ভোটসর্বস্ব অসুস্থ রাজনীতিতে প্রতিপক্ষকে খুন করাটা এক স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং তা যখন গণতন্ত্রে বিশ্বাসী আমরা মেনে নিতে পারছি, তখন প্রতিপক্ষ ভোটপ্রার্থীকে পদাঘাত করাটা তো অতি সামান্য ব্যাপার। পশ্চিমবঙ্গের একটা বিরাট অংশের মানুষও হয়তো এই ধরনের রাজনৈতিক দর্শনে আস্থা রাখেন, নইলে এই ধরনের সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলি কী করে ক্ষমতায় আসীন হতে পারে?
এই অতীব অন্যায় আচরণে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতি হচ্ছে কি না, তার মূল্যায়ন করার থেকে, ভোটবাক্স কতটা স্ফীত হবে তার মূল্যায়ন নেতাদের কাছে অনেক জরুরি। তাই রাজনীতি-নিয়ন্ত্রিত এই সমাজে এই ধরনের অন্যায় চলছে চলবে।
মিহির কানুনগো
কলকাতা-৮১
প্রশিক্ষণ সংস্থা
‘‘প্রতারক’ সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ’’ (১৭-১১) শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ‘ফ্রাঙ্কফিন ইনস্টিটিউট অব এয়ার হোস্টেস ট্রেনিং’ গত ২২ বছর ধরে কাজ করছে। বহু ছাত্রছাত্রী এই সংস্থায় প্রশিক্ষণ নিয়ে এভিয়েশন, হসপিটালিটি, ট্রাভেল এবং কাস্টমার সার্ভিসের পেশায় যোগ দিয়েছেন। কোম্পানির ওয়েবসাইটে স্টুডেন্ট পোর্টাল বানানো আছে, যেখানে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর নথি, যেমন ই-প্রসপেক্টাস, কোর্স ফি, স্টুডেন্ট এগ্রিমেন্ট কপি ও যাবতীয় রসিদপ্রাপ্তি এবং প্রমাণপত্র সহজলভ্য।
প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, এই সংস্থার এক ছাত্রী কোর্স ফি রিফান্ড-এর আর্জি জানিয়ে ডিস্ট্রিক্ট কনজ়িউমার ফোরাম-এর কাছে নালিশ জানিয়েছেন। ফ্রাঙ্কফিন তাঁর যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ করে। সংশ্লিষ্ট নথিপত্র মাননীয় জজসাহেবের কাছে জমা দেওয়া হয়। অতঃপর, কোর্ট অর্ডার পাওয়ার পর ফ্রাঙ্কফিনের তরফ থেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল কনজ়িউমার স্টেট কমিশন-এর নিকট আবেদন জানানো হয়। স্টেট কনজ়িউমার ডিসপুট রিড্রেসাল কমিশন ১৮-১১ তারিখে সমস্ত তর্ক-বিতর্ক শোনার পর নির্দেশ জারি করে যে এটি একটি ভিত্তিহীন তথ্য, এবং ইনজাংশন জারি করে।
আর এক অভিযোগকারিণীর কথা লেখা হয়েছে। কনজ়িউমার অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টে নালিশের জবাবে এই সংস্থা প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য জানিয়ে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লিখিত তৃতীয় নালিশের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো হয়েছে, তাঁর ডেবিট কার্ড তাঁর কাছেই ছিল, সুতরাং তার অপব্যবহার করা আমাদের সংস্থার পক্ষ থেকে অসম্ভব।
পিয়ালি শেঠ
রিজিয়নাল ডেলিভারি অ্যান্ড প্লেসমেন্ট হেড— ইস্ট
প্রতিবেদকের উত্তর: জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের নির্দেশই প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে। পাশাপাশি ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে দায়ের হওয়া অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলেই প্রতিবেদন লেখা হয়েছে। সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, তাঁরা জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে গিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে জানাই, গত ১৮ নভেম্বর রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত, জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। প্রতিবেদনটি ছাপা হয়েছে ১৭ নভেম্বর। সংস্থার সুনাম নষ্ট করার অভিপ্রায় প্রতিবেদকের ছিল না।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।