Government negligence

সম্পাদক সমীপেষু: মামলার হয়রানি

দ্বিতীয় প্রজন্মও প্রায় বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে কেসে দু’টি প্লিডার কমিশন কাজ করছে—একটি স্থাবর সম্পত্তির জন্য, অন্যটি অস্থাবর সম্পত্তির জন্য।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৪:১০
Share:

গত ৪৯ বছর ধরে পার্টিশন মামলার একটি কেস চলছে আলিপুর জাজেস কোর্টে। প্রতীকী ছবি।

আমাদের পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে ১৯৭৪ সালে একটি পার্টিশন মামলা হয়েছিল আলিপুর জাজেস কোর্টে। গত ৪৯ বছর ধরে কেসটি চলেছে এবং প্রথম প্রজন্মের সবার মৃত্যু হয়েছে। দ্বিতীয় প্রজন্মও প্রায় বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে কেসে দু’টি প্লিডার কমিশন কাজ করছে— একটি স্থাবর সম্পত্তির জন্য, অন্যটি অস্থাবর সম্পত্তির জন্য। কিন্তু কমিশনের কাজে কয়েক জন বাদী ও বিবাদীর অসহযোগিতার ফলে কেসটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে দিনের পর দিন। গত বছর সেপ্টেম্বরের পরে আর কোনও কাজ হয়নি। কয়েক জন উকিলবাবু নোটিস নিচ্ছেন না, আসছেনও না। ফলে, কাজও হচ্ছে না।

Advertisement

একই সমস্যা দ্বিতীয় কমিশন নিয়েও। উকিলের মাধ্যমে কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেছিলাম। কোর্ট বলছে, সবাইকে চিঠি দিতে। কিন্তু অ্যাডভোকেটদের ঠিকানা কেস ফাইলে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি বার লাইব্রেরিতেও সঠিক ঠিকানা পাওয়া যাচ্ছে না। অন্য দিকে, বাড়িঘরগুলি ক্রমশ ভগ্নপ্রায় হয়ে যাচ্ছে। এ দিকে কোর্ট পরবর্তী দিন ধার্য করেছে প্রায় দু’মাস পরে। আমার বয়স ৭০ বছর। হাঁটুর ব্যথা নিয়ে এই ভাবে দিনের পর দিন মৌলালি থেকে আলিপুর কোর্টে বাসে করে গিয়ে দৌড়োদৌড়ি করতে হচ্ছে। ছেলেরা কেউ এখানে থাকে না। তাই মহামান্য আদালত এবং আলিপুর কোর্টের মাননীয় ডিস্ট্রিক্ট জাজ-এর কাছে আবেদন, এই বৃদ্ধকে অহেতুক হয়রানির হাত থেকে রক্ষা এবং যথা শীঘ্র সম্ভব সুবিচারের ব্যবস্থা করুন।

পার্থ চৌধুরী, কলকাতা-১৪

Advertisement

মাইক ও বাইক

বাগুইআটিতে থাকি। আমি কেন্দ্রীয় সরকারের এক জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। আমার হার্ট-এর সমস্যা আছে। সমস্যা হল, গত দশ বছরে এলাকায় মাইকের দাপট ক্রমশ বেড়ে চলেছে। দাদা-দিদিদের দাপটে এর বিরুদ্ধে কোনও প্রতিবাদ করা যায় না। রক্তদান থেকে যে কোনও উৎসব এবং পুজোর দিনগুলি অসহ্য করে তোলে মাইকের অত্যাচার। আর রাত হলেই শব্দ সহযোগে বাইকের দাপট চলে। অথচ, আজ থেকে তেরো বছর আগে যখন এখানে আসি, তখন এ রকম পরিস্থিতি ছিল না। এখন বারো মাসে তেরো পার্বণ লেগেই থাকে এবং যত ক্লাব আছে তাদের মাইকের চোঙাগুলো সব ফ্ল্যাটের দিকে মুখ করে রাখা থাকে। স্বামী প্রয়াত হয়েছেন এগারো বছর আগে। সন্তান চাকরির খাতিরে বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকে। মাঝে মাঝে মনে হয় বাড়ি বিক্রি করে অন্য কোথাও চলে যাই। কিন্তু এই বৃদ্ধ বয়সে একার পক্ষে কোথাও স্থানান্তরিত হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই এই ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

কৃতিকা ভট্টাচার্য, কলকাতা-১৫৯

গাফিলতি

আমি হাওড়া পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বাজেশিবপুর রোড ও রামকৃষ্ণপুর লেনের সংযোগস্থলের কাছে বাস করি। আমার বাড়ির উল্টো দিকে একটি নলকূপ দীর্ঘ দিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে ছিল। মৌখিক ভাবে বহু বার বলা সত্ত্বেও স্থানীয় পুর প্রতিনিধি বা হাওড়া পুরসভা কারও মধ্যেই নলকূপটি সারানোর কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। তার অন্যতম কারণ হয়তো গত কয়েক বছর আগেই হাওড়া পুরসভার কাজকর্মের মেয়াদের অবসান ঘটা এবং এখনও পর্যন্ত পুরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় নির্বাচিত কোনও প্রতিনিধি না থাকা।

পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে সম্প্রতি উপরোক্ত নলকূপটির পার্শ্বদেশে স্থানীয় প্রোমোটারের বহুতল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আর, অচিরেই নলকূপটির গঙ্গাপ্রাপ্তি ঘটিয়ে বিকল নলকূপটিকে কার্যত বিলুপ্ত করা হয়েছে। একই দশা হয়েছে নিকটবর্তী বাজেশিবপুর শিবতলা অঞ্চল সংলগ্ন অন্য নলকূপগুলিরও। পুরসভার ঔদাসীন্যে ধীরে ধীরে সেগুলোরও বিলুপ্তি ঘটেছে। অথচ, এই অঞ্চলে প্রায়শই পুরসভার স্বাভাবিক জল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে দেখা যায়। ফলস্বরূপ, অসহায় মানুষকে প্রতিনিয়ত জলকষ্টের সম্মুখীন হতে হয় এবং কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করে কিনতে হয় পানীয় বা অন্য কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জল। অথচ নলকূপগুলি সক্রিয় থাকলে তাঁরা অনায়াসে বিনামূল্যে জলের পরিষেবা পেতে পারতেন। কিন্তু, জনসাধারণের এই সব অভাব ও অভিযোগকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তুচ্ছ বলে গণ্য করা হয়। আর মানুষকে দিনের পর দিন সহ্য করে যেতে হয় জল নিয়ে চরম দুর্দশা।

এই সমস্যা কিন্তু কেবলমাত্র বিচ্ছিন্ন বা আঞ্চলিক নয়। গোটা হাওড়া শহরের বহু এলাকাতেই খোঁজ করলে দেখা যাবে বিকল নলকূপগুলিকে না সারিয়ে সুকৌশলে সেগুলিকে কী উপায়ে ধীরে ধীরে স্থায়ী ভাবে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। ফলে, পুরবাসী থেকে পথচারী— সকলকেই চরম জলকষ্টের মধ্যে ফেলে তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই প্রশ্ন জাগে, কী করলে পুরসভা তথা প্রশাসনের ঘুম ভাঙানো সম্ভব হবে?

এমতাবস্থায়, হাওড়া পুরসভার কাছে আমাদের একান্ত অনুরোধ, তারা যেন অবিলম্বে শহরের সকল বিকল নলকূপকে অসাধু প্রোমোটারদের খপ্পরে বিনষ্ট হতে না দেয় এবং যথাসময়ে সেগুলিকে মেরামত করে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী করে তুলে তাঁদের দৈনন্দিন কষ্টের নিরসন ঘটায়।

শান্তনু ঘোষ, শিবপুর, হাওড়া

ট্র্যাফিক পুলিশ

সোদপুর ট্র্যাফিক মোড় থেকে ব্যারাকপুরের দিকে এগিয়ে গেলে পরবর্তী জনবহুল এবং ট্র্যাফিক-সঙ্কুল মোড় হল বিটি রোড আর রাজা রোডের সংযোগস্থল। সম্প্রতি এই মোড়টিকে কেন্দ্র করে যানবাহনের বেপরোয়া গতিবিধি রীতিমতো উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মোড়ের উল্টো দিকেই গড়ে উঠেছে একটি বিশাল আবাসন। ফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে জনসংখ্যার চাপ বেড়েছে। অটো, টোটো, বাস, লরি, ট্যাক্সি কেউই অটোমেটিক সিগন্যালের তোয়াক্কা করে না। পথচারীরাও নির্ভীক ঔদাসীন্যে ট্র্যাফিক নিয়ম ভেঙে রাস্তা পারাপার করেন। সকালে ওই আবাসনের দিক থেকে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা মোড়ে ভিড় বাড়ায় স্কুলের বাস ধরার জন্য। এই সব কারণে ছোটখাটো পথদুর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটার আগেই এই মোড়ে অবিলম্বে ট্র্যাফিক পুলিশ নিয়োগ করে তাঁদের সাহায্যে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

ভাস্বতী সামন্ত, সোদপুর, উত্তর ২৪ পরগনা

ফুটব্রিজ মেরামতি

বালিগঞ্জ ফুটব্রিজ ভাঙা হচ্ছে কার স্বার্থে? এর এক দিকে কসবার আর কে চ্যাটার্জি রোড, অপর দিকে একডালিয়া রোড। বালিগঞ্জ স্টেশনের রেল লাইনের উপর দিয়ে যে ফুট ওভারব্রিজ ছিল, সেটি বেশ কয়েক মাস হল বন্ধ রয়েছে। ব্রিজটি ভাঙা হচ্ছে। রেলযাত্রী ও সাধারণের চলাচলের একমাত্র পথ হিসেবে বছরের পর বছর ধরে যে ব্রিজটি ছিল, তা তো বছরখানেক আগেই মেরামত করা হল, রেলযাত্রীদেরই সুবিধার জন্য। তাতে চলন্ত সিঁড়িও লাগানো হল। সেই কাজের জন্য ব্রিজ বেশ কয়েক মাস বন্ধ ছিল। তার পর আবার ব্রিজটি পুরো ভাঙার সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হল, বোঝা গেল না।

এই নতুন সিদ্ধান্তে খরচের কথা তো ছেড়েই দিলাম। বিকল্প ব্রিজটি ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে করা হল, যার এক দিকে আর কে চ্যাটার্জি রোড, অন্য দিকে কাঁকুলিয়া রোড। ট্রেন যাত্রীদের সঙ্গে পথচারীদের ধাক্কাধাক্কি রোজকার ব্যাপার। বয়স্কদের পক্ষে এই নতুন ব্রিজ পেরোনো কতটা ঝুঁকির, তা ভুক্তভোগী মাত্রেই টের পাচ্ছেন। এ রকম উদ্ভট সিদ্ধান্ত নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ কার উপকার করলেন, জানি না। আগের ব্রিজটি ভেঙে সেখানেই নতুন করে ফুটব্রিজ চালু করলে তো সবারই সুবিধা হত।

বরুণ ভট্টাচার্য, কলকাতা-৩৯

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement