—প্রতীকী চিত্র।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বাগুইআটি শাখার মাধ্যমে ওই ব্যাঙ্কের বিমা সংস্থার একটি ‘ফ্যামিলি ফ্লোটার’ স্বাস্থ্যবিমা পলিসি (বিমার মোট অঙ্ক তিন লক্ষ টাকা) এবং এর একটি টপ-আপ পলিসি (বিমার অঙ্ক সাত লক্ষ টাকা) আমি ক্রয় করেছিলাম। কোনও চিকিৎসায় প্রথমটির (মূল পলিসি) অঙ্ক পুরোপুরি নিঃশেষিত হলেই দ্বিতীয়টি গ্রাহ্য হয়— এটাই দস্তুর।
গত বছর ডিসেম্বরে পুনর্নবীকরণের জন্য নির্ধারিত তারিখের ঠিক দু’মাস আগে আমি উপরোক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে বাৎসরিক পুনর্নবীকরণের নোটিস সম্বলিত একটি চিঠি পাই। কিন্তু, অদ্ভুত ভাবে, সেখানে মূল পলিসির কোনও নামগন্ধ ছিল না। ছিল শুধু টপ-আপ পলিসির বিবরণ। তৎক্ষণাৎ, সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে ফোন করে ব্যাপারটা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। উনি আমাকে এ বছর জানুয়ারি মাসে ফোন করতে বলেন। কিন্তু, সন্দেহ নিরসনের জন্য আমি সেই দিনই ওদের মুম্বইয়ের হেড অফিসে ইমেল করে মূল পলিসিটির বিষয়ে জানতে চাই। দুই দিন পরে ওঁরা উত্তরে জানালেন, আমার মূল পলিসিটি ‘ডিসকন্টিনিউ’ করে অন্য একটি প্রকল্পের সঙ্গে আমার স্বাস্থ্যবিমাটিকে সংযোজিত করে দেওয়া হয়েছে। এবং আমি যদি রাজি থাকি, তবেই ওঁরা সেই স্কিমের প্রিমিয়াম ইত্যাদি জানাবেন। তখন কিছুই বোধগম্য হয়নি আমার। মূল পলিসির বর্তমান পরিস্থিতি, অর্থাৎ কোনও ‘ক্লেম’ হলে আদৌ কিছু মিলবে কি না, সে সম্বন্ধে কিছুই তাঁরা জানালেন না আমায়। সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবেই আমাকে এক প্রকার তাড়িয়ে দেওয়া হল মূল পলিসির অধিকার থেকে। এমনকি, প্রত্যুত্তর মেল-এ বিস্ময় প্রকাশ করে আমি পূর্ব পলিসিটিই ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন জানালে, তাঁরা কোনও উত্তর দেওয়ার প্রয়োজনও বোধ করলেন না।
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি, অর্থাৎ, নির্ধারিত সময়ের মাত্র এক সপ্তাহ আগে সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক আমাকে ‘রিনিউয়াল’-এর ব্যাপারে ফোন করলে সমস্ত ব্যাপারটা আমি তাঁকে জানাই। হেড অফিসের চিঠি সম্পর্কে তিনি তাঁর অজ্ঞতা জানিয়ে আমাকে পলিসিটি পুনর্নবীকরণের পরামর্শ দেন এবং আমার ইমেল আইডি চান, যাতে এই ব্যাপারে সদর দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের বক্তব্য আমাকে জানাতে পারেন। আমার আইডি তাঁদের অফিসের সিস্টেমেই আছে জানিয়ে এই প্রশ্নই তুলি যে, আমার সঙ্গে যা ঘটল, তার পরে আমার পক্ষে তাঁদের উপরে আর কোনও আস্থা বজায় রাখা কি সম্ভব হবে? স্বাস্থ্যবিমার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এই ধরনের কাজ প্রতারণা নয় কি?
গৌতম নারায়ণ দেব, কলকাতা-৭৪
বিপরীত চিত্র
সম্প্রতি আমি, আমার স্ত্রী এবং এক বন্ধু দম্পতি জনশতাব্দী এক্সপ্রেসে চেপে ঘাটশিলায় গিয়েছিলাম। ট্রেনটির ঘাটশিলা পৌঁছনোর সময় ছিল সকাল ৯টা ৩ মিনিটে। কিন্তু সেটি প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছয়। আবার ঘাটশিলা থেকে কলকাতা ফেরার ইস্পাত এক্সপ্রেসও দু’ঘণ্টার বেশি দেরি করে এবং হাওড়া স্টেশন পৌঁছয় নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা দেরিতে। আমাদের কোচে এক জন প্রৌঢ়া যাত্রী ছিলেন, যাঁর ওই দিনই রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে হাওড়া-জামালপুর এক্সপ্রেস ধরার কথা ছিল। জানি না, তিনি শেষ পর্যন্ত ট্রেনটি ধরতে পেরেছিলেন কি না। কারণ, আমাদের ট্রেনটি ৯টা ৩০ মিনিটে হাওড়া স্টেশনের নতুন কমপ্লেক্সে (১৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে) ঢোকে, যেখান থেকে জামালপুর এক্সপ্রেস ধরতে গেলে পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রচণ্ড ভিড় ঠেলে পুরনো কমপ্লেক্সে যেতে হত। সম্ভবত ওই দিন ট্রেনটি ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ে।
আমাদের দেশে ট্রেন দেরি করার জন্য যাত্রীদের ভাড়া ফেরত দেওয়ার চিন্তা বাতুলতা মাত্র। তবে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ, যে সব যাত্রীর কানেক্টিং ট্রেন ধরার জন্য আসন সংরক্ষিত ছিল, অথচ অন্য ট্রেন দেরি করায় ওই নির্দিষ্ট ট্রেন ধরতে পারলেন না, তাঁদের টিকিটের দাম ফেরত দেওয়া হোক। উপরন্তু পরের ট্রেন ধরার জন্য সময়টুকু নির্বিঘ্নে অতিবাহিত করার বিষয়টি নিয়েও ভাবনাচিন্তা প্রয়োজন, বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে।
এক দিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেন লেট, কখন গন্তব্যস্থলে পৌঁছবে, তার স্থিরতা নেই। তার উপরে নেই প্রবীণদের জন্য কোনও সুযোগসুবিধা। অন্য দিকে, বিমান ভাড়া উত্তরোত্তর লাগামছাড়া হয়ে যাচ্ছে। আমাদের মতো প্রবীণ নাগরিকরা কি তবে নিজেদের ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যেই আটকা পড়ে থাকব? চার দিকে যখন বন্দে ভারত, বুলেট ট্রেন ইত্যাদির কথা ঢাকঢোল বাজিয়ে প্রচার করা হচ্ছে, তখন সাম্প্রতিক সফরে রেলের সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্রই দেখতে পেলাম।
অমিত কুমার চৌধুরী, কলকাতা-৭৫
ব্যর্থতা
অচিন্ত্য বিশ্বাস লিখিত গুরুত্বপূর্ণ পত্র ‘দৈনিক বচসা’ (২৩-১) পাঠ করে স্মরণে এল যে, একই বিষয় নিয়ে পূর্বে আমার লিখিত ‘বর্ধিত বাসভাড়া’ (১৮-৭-২২) প্রকাশিত হওয়ার পরেও, রাজ্যের বাসভাড়া সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের বিন্দুমাত্র কোনও প্রচেষ্টা আজ পর্যন্ত রাজ্যের পরিবহণ দফতরের তরফে নেওয়া হয়নি। রাজ্যে যে একটা পরিবহণ দফতর ও তার ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী রয়েছেন, রাজ্য পরিবহণের অবস্থা দেখে তা বোঝা দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে। বেসরকারি বাসগুলোতে মালিক ও কন্ডাক্টরদের যেমন খুশি বর্ধিত ভাড়া নেওয়া, অবৈধ ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন রুটে অটো চালকদের নিত্যযাত্রীদের উপর জুলুম ও হেনস্থা, হাওড়া স্টেশন বা অন্যান্য পার্কিং প্লটে রসিদ ছাড়াই যা খুশি টাকা হাঁকা ও দাদাগিরি ফলানো, ‘নো রিফিউজ়াল’ চিহ্নিত ট্যাক্সি চালকদের অধিকাংশেরই যাত্রীদের প্রয়োজনীয় গন্তব্যে নিয়ে যেতে অস্বীকার করা ও মিটার বন্ধ রেখে স্ব-নির্ধারিত উচ্চ মূল্যে যাওয়ার নির্লজ্জ প্রবণতা, আরটিও কার্যালয়গুলিতে দালাল চক্রের হাতে উৎকোচ প্রদান না করলে নতুন বা নবীকৃত ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে বিলম্ব হওয়া ইত্যাদি ঘটনাবলি রাজ্যের পরিবহণ দফতরের চরম গাফিলতি ও ব্যর্থতারই নামান্তর নয় কি?
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পরিবহণ দফতরের এই ঔদাসীন্য, বহু প্রতিবাদী পত্র ও প্রবন্ধ প্রকাশের দ্বারা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো সত্ত্বেও, সরকারের নিদ্রাভঙ্গ হচ্ছে না। কী উপায় অবলম্বন করলে দফতরটি নড়েচড়ে বসবে, তা বুঝে উঠতে রাজ্যবাসী হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন। কেবলমাত্র দূরপাল্লার ঝাঁ-চকচকে অত্যাধুনিক কিছু বাসের ফিতে কেটে উদ্বোধন করা ও বিভিন্ন জনসমাবেশে কিছু বক্তব্য পেশ করা, এইটুকু নিশ্চয়ই এক জন দায়িত্বশীল পরিবহণ মন্ত্রীর একমাত্র কাজ নয়। তাই, মন্ত্রী মহাশয়কে আর্জি, হতভাগ্য রাজ্যবাসীর কথা ভেবে অবিলম্বে পরিমার্জিত বাস ভাড়ার নির্দেশিকা প্রকাশ করুন। আর, অন্যান্য অসঙ্গতি দূর করে দফতরটিকে কালিমামুক্ত করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে উদ্যোগী হোন।
শান্তনু ঘোষ, শিবপুর, হাওড়া
প্রবীণদের জন্য
‘প্রবীণদের জন্য সস্তায় পণ্য, সুদে সুবিধার সওয়াল’ (২০-২) শীর্ষক সংবাদটি পড়ে আশান্বিত হলাম। কেন্দ্রীয় সরকারের উপদেষ্টা নীতি আয়োগের সুপারিশগুলি সময়োপযোগী এবং যথাযথ। বিশেষ করে ১) জমার সুদকে নির্দিষ্ট হারের নীচে নামতে না দেওয়া। ২) কম খরচে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান। ৩) আর্থিক বোঝা কমাতে কর ও জিএসটি সংস্কার ইত্যাদি। তবে, বর্তমান উচ্চ বাজারদরের পরিপ্রেক্ষিতে নাভিশ্বাস ওঠা প্রবীণ-প্রবীণাদের বাঁচাতে ইপিএফ পেনশন প্রাপকদের পেনশন বর্ধিত করা এবং রেল ভ্রমণের ছাড় ফিরিয়ে দেওয়ার মতো বিষয় দু’টির সংযোজন আবশ্যক ছিল।
সোমেশ সরকার, শেওড়াফুলি, হুগলি