আমি এক জন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। বছর দুয়েক ধরে দেখছি বাজারে ১০, ২০ ও ৫০ টাকার নোট অপ্রতুল। যে সব নোট দেখা যাচ্ছে, সেগুলি ময়লা, ছেঁড়াফাটা। ১০০, ২০০-র নোটও যে খুব বেশি আছে, তা বলা যায় না।
আমাদের দেশে সব কিছুই নির্ধারিত হয় সরকারের সর্বোচ্চ স্তরের ঠান্ডা ঘরে। তাদের ধারণা, সবটাই তো ডিজিটাল মাধ্যমে কার্ড সোয়াইপ করেই করা যায়, অতএব নগদ টাকার দরকার কী? এ দেশে শতকরা ৭০ ভাগ লোক গ্রামাঞ্চলে বাস করেন। তাঁদের মধ্যে শিক্ষিতের হার এখনও বেশ কম। তাঁরা ডিজিটাল লেনদেনে কতটা সক্ষম হবেন, তার হিসাব রাখা হয় না। এ ছাড়া জালিয়াতির ভয়েও ডিজিটাল লেনদেন থেকে অনেকে দূরে থাকছেন। তাই আমরা যাঁরা গ্রাম বা মফস্সলে থাকি, অনুরোধ করব আপনারা বড় শহরের বাইরে এসে মফস্সলে ও গ্রামগঞ্জের বাজার অনুসন্ধান করুন। দেখবেন, এখানে প্রায় বারো আনা লেনদেন নগদ টাকাতেই হয়। তাই এই ময়লা ছেঁড়া সামান্য কিছু নোট নিয়ে জনগণ কেমন করে তাঁদের দৈনন্দিন লেনদেনের কাজ সম্পন্ন করছেন, সরেজমিনে যাচাই করুন।
করোনাকালে এই সব ময়লা পচা নোট হাতে হাতে ঘোরাও খুবই অস্বাস্থ্যকর। উৎসবের মরসুম শুরু হতে চলেছে। অর্থ মন্ত্রক ও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে একান্ত অনুরোধ, দ্রুত ১০, ২০ ও ১০০ বা ২০০ টাকার নতুন নোট প্রয়োজন অনুসারে ছাপিয়ে বাজারে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। আর, পুরনো ছেঁড়াফাটা নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়ার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করুন।
সাধন মুখোপাধ্যায়, অরবিন্দনগর, বাঁকুড়া
শিশুদের মন
খবরে প্রকাশ (‘চেয়ার ও বেঞ্চ ঠিক আছে তো? ফর্মে প্রশ্ন সব স্কুলকে’, ১৪-৮) শিক্ষা দফতর থেকে স্কুলগুলির কাছে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ এমনকি মিড-ডে মিল তৈরির রান্নাঘরের ছাউনিটি পর্যন্ত যথাযথ অবস্থায় আছে, না কি কোনও কিছু সারিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। নিঃসন্দেহে স্কুলগুলি প্রয়োজনমতো অর্থবরাদ্দও পাবে পরিকাঠামো ঠিকঠাক করে নেওয়ার জন্য। আর এ সবই করে ফেলা হবে পুজোর পরে, ছেলেমেয়েরা স্কুলে আসা শুরু করার আগেই। কিন্তু স্কুল মানে কেবল টেবিল-চেয়ারে বসে অফিসের কাজ নয়, এখানে কাজটি করতে হয় মানবসম্পদ নিয়ে। শিশুদের মন, ইচ্ছে, অনিচ্ছেকে যথোপযুক্ত গুরুত্ব দিয়ে, সহানুভূতির সঙ্গে। এই বিষয়টি ভেবে নিয়ে প্রস্তুতির প্রয়োজনও আবশ্যক নয় কি? যে বাচ্চাটি ২০২০ সালের মার্চ মাসে শেষ স্কুলে এসেছিল (মাঝে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে যখন মাস দুয়েক ক্লাস হয়, তখন শুধু নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরই আসার অনুমতি ছিল) আর যে আবার পুজোর পরে স্কুলে আসতে চলেছে, তারা দু’জন আলাদা মানুষ। আগের সেই পড়ুয়াটির হয়তো মানসিক শুশ্রূষার তেমন প্রয়োজন পড়ত না, কিন্তু এখন তার সহানুভূতি, সহমর্মিতা, স্নেহ সবটা দরকার। মানসিক পরিকাঠামোর এই রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন আজ লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার।
পাশাপাশি, অতিমারির প্রকোপ এখনও চলে না যাওয়ায় এবং পারিপার্শ্বিক কারণে মানসিক টানাপড়েন থেকে তাদের শারীরিক নানা সমস্যাও দেখা দিতে পারে স্কুলে এসে। তাই স্কুলগুলিতে মনোবিদ ও ডাক্তারবাবুদের উপস্থিতির একটি নিয়মিত বন্দোবস্ত করা গেলে মনে হয় নতুন করে পড়াশোনা শুরু করার ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা কাটানো যাবে। কী ভাবে পড়ুয়াদের আবার আগের স্তরে ফিরিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে শিক্ষকরাও নিশ্চয়ই মনোবিদের পরামর্শে উপকৃত হতে পারবেন। স্কুলের বাহ্যিক পরিকাঠামোর পাশাপাশি পড়ুয়াদের মানসিক পরিকাঠামোর যথোপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণেও সরকার নিশ্চয়ই যথাযথ উদ্যোগ করবে— এই
ভরসা রাখি।
অলকা পাইন, বহড়ু, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
জলসঙ্কট
আধুনিক শহর নিউ টাউনের অন্যতম বড় আবাসন হল ‘সুখবৃষ্টি’ বা ‘সাপুরজি’। ফ্ল্যাটের সংখ্যা প্রায় কুড়ি হাজার। হিডকোর দেওয়া জমিতে তৈরি মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তদের স্বপ্নের আবাসস্থল এটি। ১৯ সেপ্টেম্বরের কয়েক ঘণ্টার রাতভর বৃষ্টিতে গোটা আবাসন চত্বর এক নিমেষে জলে ডুবেছিল। বৃষ্টির পাঁচ দিন পরেও রাস্তায় জল জমে ছিল এক হাঁটু। হাবুডুবু খাচ্ছিল অসংখ্য প্রাইভেট গাড়ি। বন্ধ ছিল বহুতলের লিফটগুলি। তার ফলে আবাসিকদের হেঁটে ফ্ল্যাটে ওঠানামায় এক রকম প্রাণান্তকর অবস্থা হয়। সেই সঙ্গে দেখা যায় পানীয় জলের আকাল। ঘোলাটে ছিল রান্নাবান্নার জল। বাজার-হাট ও বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল রাস্তার আলো। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সাপুরজিকে বললেও জমা জল নিষ্কাশনে তারা কোনও ভাবে সচেষ্ট হয়নি। অন্য দিকে, এ বিষয়ে উদ্যোগ করতে দেখা যায়নি কোনও স্থানীয় নেতা, মন্ত্রী বা জনপ্রতিনিধিকে। ফলে, চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় এখানকার কয়েক হাজার আবাসিককে।
আশা করি, এই ধরনের দুর্বিষহ জলযন্ত্রণা থেকে আবাসিকদের অব্যাহতি দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা করবেন।
অমরনাথ করণ, কলকাতা-১৩৫
কেন উদাসীন
গত ৬ মে বেহালা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে স্পিডপোস্টে সুইডেনে কয়েকটি শিশুপাঠ্য বই পাঠাই। ২৮৬৭.৪০ টাকা খরচ হয়। কাউন্টারে যিনি ছিলেন, তিনি বিভিন্ন লোককে জিজ্ঞাসা করে ৫৫ মিনিটে কাজ শেষ করলেন। আধার কার্ডের প্রতিলিপি ও বিভিন্ন ফর্ম নিলেন। অথচ, এক মাস পরে সমস্ত জিনিস সুইডেনে ডেলিভারি না হয়ে আমার কাছে ফেরত চলে আসে। সুইডেন পোস্ট কারণ হিসাবে লিখেছে, ‘ইনকমপ্লিট কাস্টম ডকুমেন্ট’। অর্থাৎ, সিএন২৩ ফর্মে জিনিসের বিবরণ নেই। কিন্তু আমি সমস্ত বিবরণ দিয়ে ফর্ম পূরণ করেছিলাম। পোস্ট অফিস কর্মী পাঠানোর সময় আইটেম১ বলে লিখে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আমি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মেল করেছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। এমনকি কেউ কোনও খোঁজখবরও নেননি। ভারতীয় ডাকবিভাগের এই উদাসীনতায় না জানি কত জনের কত ক্ষতি হচ্ছে। এর প্রতিকার পাব কি? আমার যে টাকাপয়সা, সময় ও সম্মানের ক্ষতি হল, তার প্রতিকার কী ভাবে হবে?
সুব্রত বসু, কলকাতা-৬৩
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট
খবরে দেখলাম, দমদম এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই শিশুর মৃত্যু! মৃত্যু এখন সংখ্যামাত্র। তা না হলে ছোট ছোট শিশুদের এ ভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যেতে দেখেও নির্বিকার প্রশাসন! সল্টলেক সেক্টর ফাইভের মতো এলাকাতেও দেখেছি ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ ঘাড় মটকে পড়ে আছে। অথচ, তার ভিতর থেকে ব্ল্যাক টেপ দিয়ে তার জুড়ে অস্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ করে রাস্তার দু’পাশে পুজো বা দীপাবলির সময় নীল সাদা আলোর মালায় সাজানো হয়েছে। এর ফলে ঠিকাদারদের কপাল খুললেও আমজনতার কপাল পোড়ে। পাড়ার গলিতে এই ধরনের বাতিস্তম্ভ থেকেই হয়তো অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় কোনও দোকানে, বাজারে বা বাড়িতে এক ধরনের অসাধু চক্রের মদতে। বর্ষার সময় সেই সব বিপজ্জনক বিদ্যুৎ সংযোগ থেকেই ঘটে এমন মর্মান্তিক মৃত্যু। না হলে পাড়ার ভিতরে এই ধরনের খোলা বিদ্যুৎ সংযোগ এলাকার কোনও মানুষের নজরে আসে না কেন? সচেতন নাগরিক হিসাবে নিজেদের দায়িত্বে এই সব বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন বা বিদ্যুৎকর্মীদের জানানো হয় না কেন?
শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা-১৪১