দুধ তার পুষ্টিগুণের জন্য সব বয়সের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি দিনের খাদ্যতালিকায় দুধ একটি অপরিহার্য উপাদান হওয়া উচিত। বিশেষ করে, শিশু ও রোগীর খাদ্যতালিকায়। কিন্তু দুধের প্রতি মানুষের আকর্ষণ আর আগের মতো নেই। যার অন্যতম কারণ, দীর্ঘ দিন ধরে যথেষ্ট পরিমাণে খাঁটি দুধের জোগান নেই রাজ্যে।
আজকাল আমাদের চার পাশে ভেজাল দুধের যে রমরমা ব্যবসা জমে উঠেছে, তা রীতিমতো আতঙ্কের। ফলে, পানের উপযোগী দুধ কি আমরা সত্যিই কিনতে পারছি? স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী, খোলা দুধ বিক্রি হওয়ার কথা নয়। অথচ, সেটাই বেশি করা হচ্ছে। প্রয়োজনে ক্রেতারাও নিরুপায় হয়ে সেই দুধই কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, দুধ যদি বিশুদ্ধ না হয়, তা হলে দুধজাত দ্রব্যই বা কী ভাবে বিশুদ্ধ হবে? রীতিমতো অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই দুধ ও দুধজাত দ্রব্য তৈরির ব্যবসা চলছে রাজ্যের সর্বত্র। মানা হচ্ছে না জনস্বাস্থ্যের ন্যূনতম বিধিও। এ সব নিয়ে কোনও সরকারেরই কখনও কোনও মাথাব্যথা ছিল না, আজও নেই। অথচ, পানীয় জলের মতো দুধও একটি অত্যাবশ্যক পণ্য, যার সহজলভ্যতা একমাত্র সরকারই নিশ্চিত করতে পারে।
বাংলার জনসংখ্যার নিরিখে চাহিদামতো খাঁটি দুধের স্বাভাবিক জোগান না থাকার মুখ্য কারণ এখানকার অনুন্নত ডেয়ারি ব্যবস্থা। শুধু খাঁটি দুধের জোগানই নয়, বাঙালির অতি প্রিয় ছানার মিষ্টি তৈরিতেও প্রচুর দুধ ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া আছে ঘি, পনির, চিজ়, মাখন, দই, আইসক্রিম, যা পুরোপুরি দুধ-নির্ভর। অন্যান্য শিল্পের মতোই ডেয়ারি শিল্পের ক্ষেত্রেও উন্নত দেশগুলি আমাদের দেশের তুলনায় যে কত এগিয়ে, তা না দেখলে অনুমান করা যাবে না। পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে গরুর দুধ সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে ডেয়ারির যাবতীয় কাজ করা হচ্ছে। এ সব দেশের কোথাও খোলা দুধ বিক্রির কোনও সুযোগ নেই। জনস্বাস্থ্য বিধির কড়া নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত করার পর প্যাকেটে ভরে দুধ বিক্রির জন্য তৈরি হয়। ফলে, দুধ ও দুধজাত দ্রব্যের বিশুদ্ধতা নিয়ে কারও কোনও প্রশ্ন থাকে না। নির্দিষ্ট সময়ের পর অবিক্রীত দুধ বা দুধজাত দ্রব্য এক মুহূর্ত দোকানে ফেলে রাখা হয় না। ডেয়ারির প্রতিটি গরু দিনে তিরিশ থেকে চল্লিশ কিলো পর্যন্ত দুধ দিয়ে থাকে। ফলে, উন্নত দেশে চাহিদামতো দুধের স্বাভাবিক জোগানেও কোনও ঘাটতি থাকে না। প্রয়োজনে বাজার থেকে যে কেউ যে কোনও সময় দুধ কিনতে পারেন।
এমনকি আমাদের পড়শি দেশ বাংলাদেশও উন্নত দেশের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে ডেয়ারি শিল্পে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। অথচ, আমরা তেমনটা পারছি না। রাজ্য সরকারের উচিত প্রাইভেট পার্টনারশিপেই হোক, অথবা শিল্পোদ্যোগী ব্যক্তিকে জায়গা ও ঋণ দিয়ে এবং উন্নত দেশের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আধুনিক ডেয়ারি শিল্প গড়ে তোলা। এতে এক দিকে যেমন দুধ এবং দুধজাত দ্রব্যের মানোন্নয়ন হবে, তেমনই হবে প্রচুর স্থায়ী কর্মসংস্থানও।
বিভূতি ভূষণ রায়
হাবড়া, উত্তর ২৪ পরগনা
পরীক্ষার খরচ
করোনা পরীক্ষার জন্য আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে গেলে কলকাতা বা সংলগ্ন অঞ্চলে কোনও বাঁধাধরা খরচ নেই। কোথাও ১২০০, কোথাও ১৩০০, কোথাও ১৬৫০ টাকা বা আরও বেশি। বাড়ি এসে নমুনা নিলে তো আরও ২০০-৪০০ টাকা চাপবে! অন্য দিকে, মহারাষ্ট্রে খরচ অভিন্ন, ৬০০ টাকা।
কয়েকটি প্রশ্ন জাগে। যেমন, আমাদের রাজ্যে এই সংক্রান্ত কোনও খরচ বেঁধে দেওয়া আছে কি? থাকলে কত? যদি না থাকে, তবে খরচ বেঁধে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা সরকারের আছে কি? আর যদি থাকে, তা হলে তা কত? এবং অতিরিক্ত খরচের বোঝা চাপানো পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি নিয়ে এযাবৎ কোনও পদক্ষেপ কি করেছেন কোনও কর্তৃপক্ষ? পরীক্ষার জন্য অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা আছে মহারাষ্ট্রে। আমাদের রাজ্যে তেমন ব্যবস্থা কোথায়?
দীপ্তেশ মণ্ডল
চালুয়াড়ি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
বৃক্ষরোপণ
বিশ্ব পরিবেশ দিবস (৫ জুন) পেরিয়ে গেল। গোটা সপ্তাহ জুড়েই ব্যক্তিগত উদ্যোগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠকরা বৃক্ষরোপণ ও বণ্টনের কর্মসূচি নিয়েছেন। নার্সারির মালিকেরাও হাজার হাজার গাছের (শৌখিন গাছ থেকে দেবদারু, কৃষ্ণচূড়া প্রভৃতি) অর্ডার পাচ্ছেন। নিঃসন্দেহে সাধু উদ্যোগ। কিন্তু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যতগুলি গাছ রোপণ করা হয়, তার অধিকাংশই অযত্ন, অপরিচর্যায় মারা যায়। সঙ্গে গরু, ছাগলের উৎপাত তো রয়েছেই। যে সমস্ত পথচলতি সাধারণের হাতে অতি যত্নে চারাটি তুলে দেওয়া হয়, তাঁদের প্রত্যেকের কাছে কি চারাগুলি সযত্নে বেড়ে উঠতে পারে? সাধারণ হলেও এই প্রশ্নের গুরুত্ব অনেক। তাই বৃক্ষরোপণ ও বণ্টনের সঙ্গে গাছের পরিচর্যা সম্পর্কে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন। জনসাধারণেরও এই বিষয়ে সচেতনতা থাকতে হবে। সকলে যদি অন্তত একটি বা দু’টি করে গাছের পরিচর্যার দায়িত্ব নিতে পারেন, তা হলে পরিবেশ দিবসে যে চারা রোপণ করা হয়, তা মহীরুহে পরিণত হবে।
রাকেশ শর্মা
ধানতলা, নদিয়া
কিছু ট্রেন চলুক
গত ৬ মে থেকে লোকাল ট্রেন পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ। আমাদের মতো দিন-আনা-দিন-খাওয়া মানুষের মনের ভিতর একটাই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে, এই কার্যত লকডাউন উঠে যাওয়ার পর লোকাল ট্রেনের ভবিষ্যৎ কী হবে? আমরা কি আদৌ আগের মতো জীবিকা অর্জনের জন্য কলকাতায় পৌঁছতে পারব লোকাল ট্রেনের মাধ্যমে? না কি আবারও সেই দৈনিক দশ-কুড়ি টাকার বদলে একশো থেকে দেড়শো টাকা খরচ করে গন্তব্যে পৌঁছতে হবে? রেল ও রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে এখন থেকেই ভাবনাচিন্তা করতে হবে। তাতে আমাদের মতো মানুষের কিছুটা উপকার হবে।
মে মাসে আমরা কম-বেশি ১৫ দিন অফিস যেতে পেরেছি। প্রতি দিনই প্রায় একশো-দেড়শো টাকা খরচ করে। অনেক মানুষকে এই কার্যত লকডাউনের পরে মালিকপক্ষ আর কাজে রাখবেন কি না, সেই বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যদি কারও কাজটা থাকেও, মনে হয় না তিনি আর একশো, দেড়শো টাকা খরচ করে অফিস যেতে পারবেন।
আমরা জানি, অনেক দূরপাল্লার ট্রেনই পরের দিকে বাতিল করা হয়েছে। এই দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করার সিদ্ধান্ত যদি লোকাল ট্রেন বন্ধ করার আগে নেওয়া হত, তা হলে হয়তো করোনা সংক্রমণ এত বাড়ত না। কারণ, লোকাল ট্রেন যখন গত বছরের নভেম্বরের ১১ তারিখ থেকে এপ্রিল অবধি চলছিল, তখন কিন্তু সংক্রমণ এত ভয়াবহ আকার নেয়নি। তাই লোকাল ট্রেনকেই একমাত্র সংক্রমণের জন্য দায়ী করা উচিত নয়। সরকারের কাছে অনুরোধ, লকডাউন যে দিনই উঠুক না কেন, কিছু সংখ্যক লোকাল ট্রেন যেন চালু করার ব্যবস্থা করা হয়।
পরাশর চট্টোপাধ্যায়
দত্তপুকুর, উত্তর ২৪ পরগনা
অস্পষ্ট
ইদানীং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি গ্রাহকদের যে বিদ্যুতের বিল প্রদান করছে, সেটা খুবই অস্পষ্ট। তার থেকে কোনও কিছুই বোঝার উপায় নেই। গ্রাহক কত ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করল, বা ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম কত, সেটা গ্রাহকরা জানতে পারছেন না। আবার অনলাইনে বিদ্যুতের বিল প্রদান করলে যে রসিদ দেওয়া হয়, সেখানে লেখাগুলো অতি ক্ষুদ্র। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, গ্রাহকরা যাতে সুস্পষ্ট বিদ্যুতের বিল পেতে পারেন, সে ব্যাপারে অবিলম্বে নজর দেওয়া হোক।
শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
বহড়ু, দক্ষিণ ২৪ পরগনা