East Bengal

সম্পাদক সমীপেষু: মহাসঙ্কটে ইস্টবেঙ্গল

শতবর্ষে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ক্লাবের ভবিষ্যতের থেকেও কর্তাদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ভীতিই যেন প্রকট হয়ে গিয়েছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২১ ০৫:০৪
Share:

‘অনড় ইস্টবেঙ্গল, সঙ্কটে ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক প্রতিবেদন (১৭-৭)প্রসঙ্গে এই চিঠি। কলকাতার শতাব্দী-প্রাচীন তিনটি ক্লাব, মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহমেডান স্পোর্টিং এখনও বাংলার ফুটবলপ্রেমী মানুষের স্বপ্নের প্রতীক। সম্প্রতি মোহনবাগান (এখন ‘এটিকে মোহনবাগান’)ক্লাব পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক যুগোপযোগী এবং আধুনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্লাবের সাফল্যের গ্রাফকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ভারতের সর্বোচ্চ ফুটবল লিগ আইএসএল-এ খেলার জন্য ভাল লগ্নিকারী সংস্থা নিয়ে আসা, ভাল কোচ এবং খেলোয়াড় জোগাড় করা, প্রায় সবেতেই এটিকে মোহনবাগানের টিম ম্যানেজমেন্ট যথেষ্ট মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছে। এ বছরও আইএসএল-এ খেলার জন্য ইতিমধ্যেই কোচ হিসেবে লোপেজ় হাবাস এবং বেশ কিছু ভাল বিদেশি ও দেশি ফুটবলার দলে এসেছেন। আশা করা যায়, পাল-তোলা নৌকার দল এ বছরও যথেষ্ট সাফল্য পাবে।

Advertisement

উল্টো দিকে, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে লগ্নিকারী সংস্থা নিয়ে চূড়ান্ত ডামাডোল দেখা দিয়েছে। এ বছর ক্লাব আইএসএল-এ আদৌ খেলতে পারবে কি না, যথেষ্ট সংশয় দেখা দিয়েছে। কর্মকর্তাদের অনড় মনোভাবের জন্য গত বছরের লগ্নিকারী সংস্থাটির সঙ্গে ক্লাবের স্বত্ব নিয়ে চুক্তির জটিলতার অবসান এখনও হয়নি। এর আগেও ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে স্পনসরদের নানা বিষয়ে বিরোধ হয়েছে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এ বছর আইএসএল-এ না খেলতে পারলে সেটা কোটি কোটি সমর্থকের কাছে হৃদয়বিদারক ঘটনা হবে। এই প্রেক্ষাপটে রাজ্য সরকার যদি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্মকর্তা এবং লগ্নিকারী সংস্থাটির কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য এগিয়ে আসে, তা হলে বাংলার ফুটবল এগিয়ে যেতে পারবে। আশা করা যায়, রাজ্য সরকার সদর্থক ভূমিকা নেবে।

তুষার ভট্টাচাৰ্য

Advertisement

কাশিমবাজার, মুর্শিদাবাদ

দায় কার?

অন্য ক্লাবগুলি যখন শক্তিশালী দল গঠন করে আসন্ন আইএসএল মরসুমের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন ইস্টবেঙ্গল লগ্নিকারীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর সঙ্কটে। এ বছর আইএসএল খেলার সম্ভাবনা এখন বিশ বাঁও জলে। আর আইএসএল খেলতে না পারলে এই মরসুমে কলকাতা লিগ কেন, কোনও টুর্নামেন্টই খেলা সম্ভব নয় ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে। যার অর্থ হল, গোটা মরসুমই মাঠের বাইরে কাটাতে হতে পারে লাল-হলুদকে। ক্লাবকর্তারা কি এর দায় এড়াতে পারেন? চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান যেখানে অযথা ঐতিহ্যের গোঁ ধরে না থেকে এটিকে-র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে দেশের এক নম্বর লিগে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে, সেখানে লাল-হলুদ কর্তারা এখনও ক্লাব থেকে নিজেদের কর্তৃত্ব চলে যাওয়ার আশঙ্কায় বার বার পিছিয়ে আসছেন। অতীতেও ক্লাবকর্তারা নিজেদের মালিকানা বজায় রাখতে একের পর এক লগ্নিকারী সংস্থার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছেন। যদিও গত বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে নতুন লগ্নিকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে শেষ মুহূর্তে লাল-হলুদের আইএসএল-এ যোগদান সমর্থকদের উৎকণ্ঠা দূর করেছিল, কিন্তু নানা শর্ত নিয়ে আপত্তি জানিয়ে চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে রাজি হননি লাল-হলুদ কর্তারা। তাঁরা বরাবর দাবি করে এসেছেন, চুক্তিপত্রে সই করলেই নাকি ক্লাব হাতছাড়া হয়ে যাবে! অর্থাৎ, শতবর্ষে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ক্লাবের ভবিষ্যতের থেকেও কর্তাদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ভীতিই যেন প্রকট হয়ে গিয়েছে।

সুদীপ সোম

হাবড়া, উত্তর ২৪ পরগনা

হতাশ সমর্থক

লগ্নিকারী সংস্থা আর ক্লাবকর্তাদের বিরোধের জেরে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সমর্থকদের মানসিক চাপ আর হতাশা বাড়ছে। গত বছর দেরিতে টিম করাটা খারাপ রেজ়াল্টের অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানো গিয়েছিল। ভাবা গিয়েছিল, এ বার সময় নিয়ে গুছিয়ে টিম করা যাবে। কিন্তু গত বছরের দেশি-বিদেশি প্রায় সব ফুটবলার ইতিমধ্যেই দল ছেড়ে চলে যাচ্ছে। কর্মকর্তারা বোধ হয় ক্লাবটাকে কোমায় পাঠানোর জন্য আদা-জল খেয়ে লেগেছেন।

অরূপরতন আইচ

কোন্নগর, হুগলি

উদ্বেগজনক

সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে জানতে পারছি, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব বিভিন্ন প্রশাসনিক সমস্যায় ভুগছে, যার প্রভাব তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ ফুটবলের উপর পড়ছে। এই খবর সত্যিই উদ্বেগজনক। কায়মনোবাক্যে চাই, ক্লাব শীঘ্রই এই প্রতিকূল অবস্থার সুষ্ঠু সমাধান করুক। যে কোনও কারণেই হোক, মোহনবাগান বর্তমান রাজ্য সরকার, অথবা শাসক দলের থেকে প্রত্যক্ষ, অথবা অপ্রত্যক্ষ সমর্থন পেয়ে থাকে। আমি চাই, এই সমর্থন যেন একই ভাবে কলকাতার ঐতিহ্যশালী ক্লাব ইস্টবেঙ্গলের প্রতিও থাকে, আদতে যা বাংলার ফুটবলকে উন্নত করবে।

মতি নন্দীর ‘গ্যালারিতে রাগী দর্শক’ শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনটি যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা জানেন এই সময়ে সাধারণ সমর্থকদের মানসিক স্থিতি কী অবস্থায় থাকে।

পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়

কলকাতা-৩

স্বপ্নের খেলা

পিন্টু মাহাতো, অ্যান্টনি সোরেন, বুধিরাম টুডু— তালিকাটি বেশ দীর্ঘ। বাংলার ফুটবল সম্পর্কে যাঁরা খবর রাখেন, তাঁদের কাছে এই নামগুলো বড়ই চেনা। এঁরা রাঢ় বাংলার সেই সব ফুটবলার, যাঁরা নিজেদের সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন কলকাতার তিন প্রধান ক্লাবে, অর্থাৎ মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, ও মহমেডান স্পোর্টিং-এ। এ ছাড়া কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ ও লোয়ার ডিভিশনের বহু নামী ক্লাবে খেলেন মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া-সহ সমগ্র জঙ্গলমহলের যে সব গুণী ফুটবলার, তাঁদের সংখ্যাটিও সমীহ জাগানোর মতো। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখের পর শয়ে-শয়ে জেদি ফুটবলার জঙ্গলমহল থেকে পা রাখেন কলকাতাগামী ট্রেনে। ট্রায়ালের পর ট্রায়াল, এ মাঠ থেকে ও মাঠ, এ ক্লাব থেকে ও ক্লাব। খাবার বলতে মুড়ি, নয়তো ফুটপাতের পাইস হোটেলের ডাল-ভাত। এক বার রঘু নন্দী, বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, সুব্রত ভট্টাচার্যদের মতো জহুরিদের চোখে পড়লেই কেল্লা ফতে। প্রিমিয়ার লিগের বিভিন্ন ডিভিশনের বিভিন্ন ক্লাবে খেলার ছাড়পত্র, সঙ্গে নাম, যশ, প্রতিষ্ঠা ও অর্থ, সবই মেলে। লিগ শেষ হলে সারা বছর ধরে ‘খেপ’ খেলে বেড়ানো। গেম পিছু মেলে এক হাজার থেকে চার হাজার টাকা।

কিন্তু লকডাউনে মন্দার কারণে মুখ ফিরিয়েছে লগ্নিকারী সংস্থারা। পিড়াকাটা, লালগড়, ঝাড়গ্রাম, সাঁওতাল ডিহির হাজারও ফুটবল-স্বপ্ন ছটফট করে বিছানায়— যদি আবার আসে ট্রায়ালের ডাক, আর যদি মেলে একটা ডিফেন্স-চেরা পাস, বক্সের মাথায় রিসিভ করে, শরীরের মোচড়ে স্টপারকে মাটিতে ফেলে, দূরপাল্লার চকিত শট, গো-ও-ও-ল!

পলাশ মান্না

সবং, পশ্চিম মেদিনীপুর

সুবীর সেন

২৪ জুলাই উত্তমকুমারকে হারানোর দিন, গায়ক সুবীর সেনকে পাওয়ার দিনও। এ বছর সুবীর সেনের ৮৭তম জন্মজয়ন্তী। ডিব্রুগড়ের এই সন্তান এইচএমভি-র বারোশো প্রতিযোগীর মধ্যে হয়েছিলেন সর্বোত্তম। সুদর্শন এই গায়ক অভিমান ছবিতে নায়ক হওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পরে তা যায় অমিতাভ বচ্চনের কাছে। গুরু দত্তের ডাকে তিনি ও সুধীন দাশগুপ্ত যখন মুম্বইতে, তখনই তৈরি হয় অবিস্মরণীয় ‘এত সুর আর এত গান’। ‘নয় থাকলে আরও কিছুক্ষণ’, ‘পাগল হাওয়া’, ‘সারাদিন তোমায় ভেবে’, এমন অনেক রোম্যান্টিক গানে বাঙালির হৃদয়ে আছেন সুবীর সেন।

অলক রায়চৌধুরী

কলকাতা-৫৫

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement